X
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

গাড়ি চুরির পর পুলিশ পরিচয়ে ফোন দিয়ে নেওয়া হতো টাকা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৭ জুলাই ২০২০, ২২:০৫আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২০, ২২:১১




গাড়ি চুরি (ছবি সংগৃহীত) কোনও গাড়ি চুরি করে তার মালিক বা চালককে পুলিশ পরিচয় ফোন দেওয়া হতো। সহযোগিতার নামে জানতে চাওয়া হতো গাড়ি চুরির ঘটনায় মালিক কোনও আইনি সহায়তা নিয়েছেন কিনা। মামলা বা জিডি করা হলে তারা মালিকের সঙ্গে কথা বাড়াতো না। আর তা না হলেই গাড়ি ফেরত দেওয়ার অফার দিয়ে বিকাশে টাকা নিয়ে সুবিধামতো জায়গায় গাড়ি ফেরত দিতো। এভাবেই গাড়ি চুরি করে মালিকদের থেকে টাকা আদায় করছিলো একটি গাড়ি চোর চক্র। চক্রটির ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকা মেট্রোর পূর্ব বিভাগের সদস্যরা। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

সিআইডির (ঢাকা মেট্রো-পূর্ব) বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা বাংলা ট্রিবিউনকে গাড়ি চোর চক্রকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাড়ি চোর চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পিকআপ গাড়ি চুরি করছিলো।’

চক্রের মূলহোতা মো. মাসুম মোল্লা (৪৫)। তিনি প্রায় অর্ধযুগ ধরে গাড়ি চুরির সঙ্গে জড়িত। তার সহযোগীরা হলেন মো. সুমন মিয়া (৩৫), মো. রুবেল মিয়া (৩৮), মো. শহিদুল ইসলাম চোকদার, মো. সাকিব হোসেন, মো. কামরুল ইসলাম, মো. রতন, মোসা. ঝর্না বেগম, মো. শাহিন ও মো. নাজমুল হোসেন।

কানিজ ফাতিমা বলেন, ‘চক্রটি গাড়ির মালিকদের বিকাশ নম্বর দিতো। তাদের দাবিকৃত টাকা সুনির্দিষ্ট বিকাশ নম্বরে দিয়ে দিলে তারা সুবিধাজনক স্থানে গাড়িটি ফেরত দিয়ে দিতো।’

সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে চক্রটি জানিয়েছে, তারা রাজধানীর বিভিন্ন গ্যারেজ ও ট্রাফিক পুলিশ পরিচয় গিয়ে রেকি করতো। কারও গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা তাও দেখতে চাইতো। এভাবে রেকি করে চলে আসতো। পরে চুরির পরিকল্পনা করতো। নিখুঁতভাবে গাড়ি চুরির জন্য এই চক্রের সদস্যরা কাজ ভাগ করে নিতো। কেউ গড়ির তথ্য সংগ্রহ করত, কেউ গাড়ি অনুসরণ করতো, কেউ গাড়ি চুরি করতো, কেউ নির্দিষ্ট স্থানে চোরাই গাড়িটি রেখে পাহারা দিতো এবং কেউ গাড়ির মালিকদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিতো।

চক্রের সদস্যরা নিজেদের ও তাদের আপনজন ও পরিচিতজনদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে, সেই পরিচয়পত্রের বিপরীতে একাধিক সিম উত্তোলন করে এই চুরির প্রক্রিয়ার ব্যবহার করতো। প্রতিটি চুরির জন্য ব্যবহার হতো নতুন মোবাইল ও নতুন সিম কার্ড।

কানিজ ফাতিমা বলেন, ‘চক্রটির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, যেসব এলাকায় সিসি ক্যামেরা নেই, সেইসব এলাকায় বেশি চুরি করতো তারা। ঢাকার বাইরে গিয়েও চুরি করতো। চুরির পর গাড়ি অনুযায়ী টাকা নিতেন তারা। ৫০ হাজার থেকে দেড়লাখ টাকা পেলেই গাড়ি ফেরত দিতো।’

পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, চক্রের নারী সদস্য বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিতে সহযোগিতা করতো। তারা যে নম্বরে বিকাশে টাকা নিতো, সেই নম্বর থেকে ক্যাশ আউট করতো না। ক্যাশ আউট করতো চতুর্থ বা পঞ্চম একটি নম্বর থেকে। যাতে সহজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের গ্রেফতার করতে না পারে।

চক্রটির বিরুদ্ধে সিআইডি এখন পর্যন্ত ১৭টি মামলা ও জিডির তথ্য পেয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে হতে পারে বলে ধারণা সিআইডির।

চক্রের কাছ থেকে দুটি চোরাই গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। সিআইডি গাড়ি দুটি চুরির মামরা তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পায়। গ্রেফতার চক্রটির সবাই বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।

/এআরআর/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাজারে অপরিপক্ব লিচু, খেলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি
বাজারে অপরিপক্ব লিচু, খেলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি
টিভিতে আজকের খেলা (১৭ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৭ মে, ২০২৪)
ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
ব্রিটেনে আশ্রয় আবেদন বাতিল, বাংলাদেশিদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে চুক্তি
ব্রিটেনে আশ্রয় আবেদন বাতিল, বাংলাদেশিদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে চুক্তি
সর্বাধিক পঠিত
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
ফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প
এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প