আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনে দাবা খেলার ভূমিকা অপরিসীম। এই উপমহাদেশের মানুষ সবসময়ই বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনবোধে বিশ্বাসী ছিল। নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির দিক থেকেও এই উপমহাদেশে বাঙালিরা এগিয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা দেশে-বিদেশে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় সুনাম ও খ্যাতির সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের হয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার নিয়ে আসছে। এই প্রক্রিয়াকে আমরা অধিকতর ত্বরান্বিত করতে পারি যদি দাবা খেলাকে আরও বেশি ছড়িয়ে দেই।’
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে আয়োজিত ‘জয়তু শেখ হাসিনা ইন্টারন্যাশনাল অনলাইন চেস টুর্নামেন্ট-২০২০’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইজিপি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, আইজিপি সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ চেস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট। সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিলের উদ্যোগে এই টুর্নামেন্টটির আয়োজনে আরও রয়েছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং গোল্ডেন স্পোর্টিং চেস ক্লাব।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে এই খেলার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ চেস ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট চৌধুরী নাফিস শরাফত, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, এশিয়ান চেস ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি হিশাম আল তাহের, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি সৈয়দ শাহাব উদ্দিন শামীম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান শাহনুল হাসান খানসহ অনেক গ্র্যান্ডমাস্টার ও খেলোয়াড়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ইরান, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ভারতের অনেক দাবাড়ু ও গ্র্যান্ডমাস্টার অনলাইনে যুক্ত হন।
আইজিপি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান জাতি, আমরা উন্নয়নবান্ধব, ভবিষ্যৎমুখী ও খেলোয়াড়বান্ধব একজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক মানবিক বিকাশ আমাদের এই অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অধিকতর টেকসই করবে, যার সুবিধাভোগী হবে দেশের কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সব নাগরিক। আইজিপি বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশে পার্কে দাবা খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলখানায় কয়েদিদের জন্য দাবা খেলার আয়োজন রয়েছে। মানসিক চাপ ও অবসাদ দূরীকরণেও দাবা খেলার সুফল রয়েছে।’
বাংলাদেশেও আগামী প্রজন্মের সুকোমল বৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্মেষের জন্য দাবা খেলাকে ছড়িয়ে দিতে ও জনপ্রিয় করতে স্কুলভিত্তিক দাবা খেলার প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতা আয়োজনের কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের জন্য একটি স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। নবীন খেলোয়াড়দের মান উন্নয়নে নিয়মিত উন্নতমানের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। তবে দাবা ফেডারেশনের আর্থিক সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘দাবা খেলোয়াড়রা যাতে আরও বেশি অনুপ্রাণিত হয়, আরও বেশি উৎসাহিত হয় এবং বিশ্ব পরিমণ্ডলে আগামী সময়ে এর মাধ্যমে আমরা আরও বেশি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করতে পারি, সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগে সহযোগী হতে বাংলাদেশের বড় বড় করপোরেট হাউজগুলো এগিয়ে আসতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৫টি দেশের ১৭ জন গ্র্যান্ড মাস্টারসহ মোট ৭৪ জন প্রতিযোগী এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করছেন। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্টের গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।