গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগের রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মেরে রাখা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার (২৪ জুন) বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশঙ্কার কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যেসব কেন্দ্রে ৩ হাজারের বেশি ভোটার আছে, সেসব কেন্দ্রে আগের রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে রাখা হবে। নির্বাচনের দিন ব্যালট বাক্স পরিবর্তন করে আগে থেকে সিল মেরে রাখা বাক্স রেখে দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি সাংবিধানিকভাবে রাজনৈতিক দল, আমরা গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা চর্চা থাকুক, এটা চাই। ন্যূনতম ভোটাধিকারের অধিকার যেন বজায় থাকে সেজন্য সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। একই সঙ্গে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের জন্য টেস্ট কেস হিসেবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। আর তা দেখেই আমরা পরবর্তী তিন সিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’
২৬ জুনের গাজীপুর সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অন্যথায় নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগ করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে তারা সম্পূর্ণ অযোগ্য। যারা একটি সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পারে না, তারা কীভাবে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবে? এরা প্রতিটি নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। যেন তোমরা যে যা-ই বলো কানে দিয়েছে তুলা। কারণ, সম্পূর্ণ দলীয় লোকজনদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করলাম, সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে।’
নির্বাচন কমিশন কোনও কথা শুনতে চায় না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দেন তারা সেভাবে কাজ করেন। যার প্রমাণ দেখতে পেয়েছি খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে।’
গাজীপুরের পুলিশ সুপারকে অন্যত্র সরানোর দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গাজীপুরের পুলিশ সুপারের আওয়ামী লীগের দলীয় লোক হিসেবে দায়িত্ব পালনে সুনাম রয়েছে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তাকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। অথচ উনি টেলিভিশনে বক্তব্যে দেন দাগি আসামিদের গ্রেফতার করছি, গ্রেফতার করে যাবো। কিন্তু গ্রেফতার করা হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের, যাদের নামে মামলা নেই, মামলা থাকলেও জামিনে রয়েছেন তারা।’
গাজীপুরের ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গাজীপুরের ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। তাই আপনারা বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে ভোটকেন্দ্রে যান, ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন।’
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘গাজীপুর সিটি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হলে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হবে শতভাগ। আশাবাদী লক্ষাধিক ভোটে জয়লাভ করবো। তবে আশঙ্কা, এজেন্টরা কেন্দ্রে থাকতে পারবে কিনা, তার ওপর নির্ভর করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ড. মঈন খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।