X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্বের কাছে তুলে ধরবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৫৬আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২:৪২

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‌‘জিয়াউর রহমান ছিলেন ঠান্ডা মাথার খুনি। সকালবেলা নাশতা করতে করতে ফাঁসির আদেশে সই করতেন। এটি তার এডিসির বক্তব্য। একসঙ্গে ২১টি ফাঁসির আদেশে সই করেছেন কোনও কোনও দিন। এমনও ঘটেছে, ফাঁসি হয়ে গেছে, রায় হয়েছে ফাঁসির তিন মাস পর। আইনের কোনও যুক্তি শোনা হতো না। কখন যে বিচার হয়েছে কেউ জানতো না। পরিবার জানে না। হঠাৎ মধ্যরাতে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হলো। কোথায় কেন নিয়ে যাচ্ছে—এমন প্রশ্নে বলা হতো আপনার ফাঁসি হবে। এই কথাগুলো দেশবাসীর জানা ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭৭ সালে হত্যার শিকার বিমান ও সেনাবাহিনীর অফিসারদের স্বজনদের বোবাকান্না, বিএনপি ও জিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে বিশ্বের কাছে তুলে ধরবো আমরা। যারা মানবাধিকারের কথা বলে দেশে প্রপাগান্ডা ছড়ায় তাদের স্বরূপ উন্মোচন করবো।’

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গুম-খুনের রাজনীতির কালো অধ্যায় নিয়ে দীপ্ত টেলিভিশন নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘গণফাঁসি ৭৭’ প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দাবি উঠেছে, জিয়াউর রহমান সেনা ও বিমান বাহিনীর যেসব অফিসারকে হত্যা করেছিল, একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করে সেই সত্য উন্মোচন করে জাতিকে জানানো। আমি এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি।’

‘মায়ের কান্না’ ও দীপ্ত টেলিভিশনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান বীর বিক্রম, দীপ্ত টেলিভিশনের সিইও এবং ‘গণফাঁসি ৭৭’ প্রামাণ্যচিত্রের পরিচালক ফুয়াদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, মায়ের কান্না সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিনসহ ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কর্তৃক গুমের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে এখানে যারা বক্তব্য রেখেছেন তারা জানেন না তাদের বাবা ও স্বামীর কবর কোথায়। কখন ফাঁসি হয়েছে, কীভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই জবাব খালেদা জিয়া, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের কাছে জানতে চাই। এখানে দাবি উঠেছে, জিয়াউর রহমান কীভাবে ঠান্ডা মাথায় সেনাবাহিনীর অফিসার এবং জওয়ানদের হত্যা করেছিল, কীভাবে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল দিনের পর দিন, একটি উচ্চতর কমিশন গঠন করে এই সত্য উন্মোচন করার। যে অজানা কান্নাগুলো হারিয়ে গিয়েছিল, যে কথাগুলো জাতি জানতো না, যারা দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বুকের মধ্যে কান্না চেপে রেখেছিল, যারা বেদনার কথা মানুষের সামনে বলতে পারেনি, যাদের কান্না নিজের পরিবারও অনেক ক্ষেত্রে শুনেনি, আজকে তাদের জড়ো করে জিয়াউর রহমানের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার কাহিনি জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে দীপ্ত টেলিভিশন। সেজন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে মানবাধিকারের কথা বলে নয়া পল্টনের অফিস এবং প্রেস ক্লাবের সামনে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা বক্তৃতা করেন। ৪৫ বছর ধরে জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার পরিবারগুলোর কান্নার জবাব বিএনপি নেতাদের কাছে চাই। এই পরিবারগুলোর যে কান্না সেটির জবাব, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাব বিএনপি নেতাদের কাছে চাই।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশীলব জিয়াউর রহমান। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য সেনাবাহিনীর কয়েক হাজার অফিসার এবং জওয়ানকে হত্যা করেছেন। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম-খুন করেছেন, কারাগারে নিক্ষেপ করেছেন। দিনের পর দিন মার্শাল ল দিয়ে দেশ শাসন করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে হত্যার যে দৃশ্য তা দেখার নয়, রাজনীতির নামে বিএনপি এমন নৃশংসতা চালিয়েছে। এসবের জন্য খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা দায়ী। এসব কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? আজকে তারা মানবাধিকারের কথা বলে। চট্টগ্রামের নেতা মৌলভী সৈয়দ জিয়ার হাতে খুন হয়েছেন।’

জিয়াউর রহমানের চেয়ে তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও কম যাননি উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২১ আগস্ট ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে জননেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছেন খালেদা। জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং পুরো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে হত্যা করার অপচেষ্টা করেছেন। ২২ জন নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হলেন। ৫০০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমি নিজেও সেদিন আহত হয়েছিলাম। আমার শরীরে এখনও ৪০টি স্প্লিন্টার আছে। এ ঘটনার পর আমাদের নেতাকর্মীরা যাতে আহতদের সাহায্য করতে না পারে, সেজন্য পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। আলামত হিসেবে গ্রেনেড সংরক্ষণ করার অপরাধে তৎকালীন সেনাবাহিনীর অফিসার মেজর শামসসহ কয়েকজনকে চাকরিচ্যুত করেছে। এসব ছিল খালেদা জিয়ার নৃশংসতা।

/এএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
‘চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে’
অগ্নিসন্ত্রাসের মূলোৎপাটন নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ: তথ্যমন্ত্রী
জনগণ ও নির্বাচন কমিশনকে তথ্যমন্ত্রীর ধন্যবাদ
সর্বশেষ খবর
কানে ডিভাইস নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে থেকে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই
কানে ডিভাইস নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে থেকে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়