X
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২

জামায়াতের প্রার্থী প্রত্যাহার চায় বিএনপি-জোট, ফখরুলকে আলোচনার ভার

সালমান তারেক শাকিল ও আদিত্য রিমন
০৯ জানুয়ারি ২০১৮, ০১:১১আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০১৮, ০১:১১

২০ দলীয় জোটের বৈঠক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচনে একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। এক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিকভাবে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী একক প্রার্থী মনোনয়ন দিলেও এ থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে দলটি। আর এ নিয়ে মীমাংসা করতে জোট-সমন্বয়ক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জামায়াতের সঙ্গে আলোচনার ভার দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী জোটের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকটি রাত ৯টার দিকে শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন খালেদা জিয়া।

বৈঠকে অংশ নেওয়া চারটি শরিক দলের শীর্ষনেতারা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, জোটের বৈঠকে তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়। এতে প্রধান বিষয় ছিল ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে। জোটের শরিকরা প্রার্থী চূড়ান্ত করার বিষয়ে খালেদা জিয়াকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন, তার জন্যই জোটের শরিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন বলে বৈঠকে নেতারা একমত হয়েছেন।

জোট সূত্র জানায়, বৈঠকে মো. সেলিম উদ্দিনকে জামায়াতের মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে দলটির উদ্যোগে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়। জোটের একজন সিনিয়র নেতার ভাষ্য, জামায়াতের প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে কমবেশি সবাই আলোচনা করেছেন। সবাই বলেছেন, হঠাৎ করে তারা কেন প্রার্থী দিলো। শরিকদের আলোচনার পর জামায়াতের প্রতিনিধি দলটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম বৈঠকে বলেন, আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী দিয়েছি। এটি চূড়ান্ত নয়। বিষয়টি বিবেচনা করা যাবে।

পরে আলোচনার এক পর্যায়ে ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

গত ৩ জানুয়ারি জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ঢাকা উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিনকে ডিএনসিসি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়।

জানতে চাইলে জোটের শরিক ও বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ সোমবার রাত ১২টার দিকে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  ‘জোটনেত্রী খালেদা জিয়া প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন, তাকে নিয়েই জোটের শরিকরা কাজ করবেন। এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।’

বৈঠক সূত্র জানায়, সোমবারের বৈঠকে তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়। ডিএনসিসি নির্বাচনে প্রার্থী, খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনও অবস্থাতেই নির্বাচনে অংশ না নেওয়া এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়।

সূত্র জানায়, বৈঠকে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম ডিএনসিসি নির্বাচনের জন্য তাবিথ আউয়াল বা আন্দালিব রহমান পার্থের নাম প্রস্তাব করেন।

সূত্রের দাবি, কোনও কোনও নেতা তাবিথ আউয়ালের নাম উচ্চারণ করলেও অনেকেই কারও নাম উল্লেখ করেননি।

প্রসঙ্গক্রমে আন্দালিব রহমান পার্থ তার বিষয়ে বৈঠকে বলেন, ‘আমি মনে করি, বিএনপির প্রার্থী বেস্ট প্রার্থী। ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে মূল লড়াই হবে ধানের শীষ ও নৌকায়। এক্ষেত্রে বিএনপির প্রার্থী হলেই বেস্ট। ফলে, ম্যাডাম যাকে দেবেন, তার জন্যই একসঙ্গে কাজ করব আমরা।’

 বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক একটি দলের চেয়ারম্যান জানান, জোটের বৈঠকে ডিএনসিসির পাশাপাশি খালেদা জিয়াকে নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তাকে ছাড়া আগামীতে কোনও নির্বাচনে যাবে না জোট, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৈঠকে খালেদা জিয়া সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছেন। জোটের শরিকদের এ নির্বাচনে না ডাকার বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে দাবি এক নেতার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রতিনিধি মুফতি ওয়াক্কাছ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৈঠকে ডিএনসিসি নির্বাচনের প্রার্থী নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে। জামায়াতের যে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করি ‘

বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য আবদুল হালিম, জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার সভাপতি রেহানা প্রধান, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, পিপলস লীগের চেয়ারম্যান গরীবে নেওয়াজ, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামীঐক্য জোটের অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, ন্যাপ ভাসানীর আজাহারুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশ) মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির মঞ্জুর হোসেন ঈসা, সাম্যবাদী দলের সাইদ আহমেদ এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জোটের শরিক লেবার পার্টির মধ্যে নেতৃত্বের বিভক্তির কারণে তাদের কোনও পক্ষকেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সবশেষ গত ১৫ নভেম্বর ২০ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক হয়।

 

 

/এনআই/এএম/
সম্পর্কিত
আটক আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ছাত্রদল নেতাকর্মীর
আওয়ামী ষড়যন্ত্রকারীদের কোনও সুযোগ দেওয়া যাবে না: আমিনুল হক
সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি বিএনপি নেতার, প্রতিবাদে মানববন্ধন
সর্বশেষ খবর
রূপগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
রূপগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
আটক আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ছাত্রদল নেতাকর্মীর
আটক আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ছাত্রদল নেতাকর্মীর
কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাবে অস্বস্তিতে ভারত
কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাবে অস্বস্তিতে ভারত
রাজধানীতে ৩০০ লিমিটেডের যাত্রা শুরু
রাজধানীতে ৩০০ লিমিটেডের যাত্রা শুরু
সর্বাধিক পঠিত
হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম: প্রধান বিচারপতি
হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম: প্রধান বিচারপতি
বিমানবন্দরে তিন উপদেষ্টা, জেরার মুখে দায়িত্বরতরা
সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগবিমানবন্দরে তিন উপদেষ্টা, জেরার মুখে দায়িত্বরতরা
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
সাবেক এমপি শিল্পী মমতাজ গ্রেফতার
সাবেক এমপি শিল্পী মমতাজ গ্রেফতার