X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১
স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত

অর্থ সংকটে বিএনপি, কাউন্সিলে লোক জমায়েত ও প্রকাশনা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত

সালমান তারেক শাকিল
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৪:১০আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৪:১০

বিএনপির লোগো আসন্ন ১৯ মার্চের সম্ভাব্য জাতীয় কাউন্সিল ঘিরে অর্থ সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ কারণে কাউন্সিলে লোক জমায়েত কম রাখা ও প্রকাশনা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটি। বুধবার রাতে গুলশানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দুই ঘণ্টার বৈঠকে অর্থ সংকট মাথায় রেখেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে কাউন্সিল অধিবেশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
এছাড়া কাউন্সিলকে সামনে রেখে সারাদেশে সফর করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আগামী ২-৩ মার্চের মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার সফরনামা নিয়ে রিপোর্ট করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বিএনপির নীতিনির্ধারণী এই বৈঠকে। এতে অংশ নেওয়া স্থায়ী কমিটির দু’জন সদস্য বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানান। পাশাপাশি ব্যক্তিগত আলাপকালে আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতা এসব বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিএনপি নেতারা। এ কারণে কাউন্সিলে ডেলিগেটদের আপ্যায়ন করা, প্রকাশনা, প্যান্ডেল খরচ, যাতায়াতসহ নানা খাতে প্রচুর অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি মাথায় রেখে সুনির্দিষ্ট দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। বুধবার রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আসন্ন কাউন্সিলে ডেলিগেটদের সংখ্যা কম রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে বাকি সদস্যরাও একমত পোষণ করেছেন। পাশাপাশি বিগত কাউন্সিলে ১২ টি প্রকাশনা বের হলেও এবার এক থেকে দুটি প্রকাশনা বের হবে।

সূত্রের দাবি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাউন্সিল করতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেও এ স্থানটি যথাসম্ভব এড়াতে চায় বিএনপি। অনাহুত লোক সমাগমের বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখে ইনডোর প্রোগ্রামে আগ্রহ বেশি দলটির নেতাদের। এ কারণে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারকে বেছে নিতেই খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এক্ষেত্রে ১৯ মার্চের কাউন্সিলের দিনক্ষণে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে কনভেনশন সেন্টার খালি থাকলে এই দিনেই হবে।

জানতে চাইলে বৈঠকে অংশ নেওয়া স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কাউন্সিল তো জাকজমক করেই করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু অর্থসঙ্কট তো আছে। কে দেবে এত টাকা। এ কারণে লোকসমাগম কম রাখার পক্ষে দল। যদিও স্বেচ্ছায় মানুষ আসবে, কিন্তু ভেতরে হয়তো জায়গা দিতে পারবো না। নাম না প্রকাশের শর্তে মন্তব্য করতে রাজি হওয়া এই নেতা জানান, বিশেষ কিছু না। বাকিটা বৃহস্পতিবার দলীয়ভাবে ঘোষণা করা হবে।

জানা গেছে, বিগত কাউন্সিলে ১২ টি প্রকাশনা বের হলেও এবারে কাউন্সিলে মাত্র দু’থেকে তিনটি প্রকাশনা বের হবে। এর সত্যতা স্বীকার করে প্রকাশনার কাজে যুক্ত এক নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গতবার ১২টি বের করেছি। এর মধ্যে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে, খালেদা জিয়ার উপর, জাতীয়তাবাদের উপর নানা বিষয়ে। এবার হবে না। পয়সা কম। এবার কাউন্সিলে দেওয়া ম্যাডামের বক্তব্য, মহাসচিবের রিপোর্ট ও প্রবন্ধ-নিবন্ধ থাকবে।

জানতে চাইলে প্রকাশনার দায়িত্বে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কাউন্সিল নিয়ে বাজেট হয়নি। তবে প্রকাশনা কমতে পারে। সময় কম তো।

স্থায়ী কমিটির সূত্র জানায়, কাউন্সিলের বাজেট নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কে কত খরচ নির্বাহ করবে-এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জানতে চাইলে উপদেষ্টামণ্ডলীর এক সদস্য বলেন,‘কে কত দেবে। ব্যবসা তো ভালো না। এ সরকারের আমলে ব্যবসা হয়নি-এই কারণটি তো আছেই। তাছাড়া দলীয় পদ-পদবি, ভবিষ্যতে মন্ত্রীত্ব, কোন মন্ত্রণালয়-এসব বিষয়ে শিওর না হলে কে পয়সা দেবে। ম্যাডাম বললে পারটিসিপেট করবে, কিন্তু বলা মুশকিল, কে কত টাকা দিবে।’ 

বিভাগীয় সফরে বের হবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা

কাউন্সিলকে সামনে রেখে সারা দেশের বিভাগীয় ও গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোয় সফর করবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। বুধবারের বৈঠকে এ নিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা রোডম্যাপ তৈরি করেছেন। আগামী ২-৩ মার্চ সফর নিয়ে শীর্ষ নেতাদের রিপোর্ট করতেও বলা হয়েছে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কোন নেতা, কোন এলাকায় যাবেন-এ নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা জানান, এ সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। বুধবারের বৈঠকে কীভাবে সিদ্ধান্ত হবে, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, সফরে যাবেন নেতারা। কোথাও সমস্যা হলে সেটি সমাধান করবেন। এটিই বলা হয়েছে। তবে লিখিত সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি ‘মনে নেই’ বলে মন্তব্য করেন।

বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, আ স ম হান্নান শাহ, জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। বাসার টেলিফোনে ফোন করা হলে মন্তব্য নেই বলে জানান লে. জে. অব. মাহবুবুর রহমান।

/এসটিএস/এমএসএম/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গৃহীত
জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গৃহীত
‘তীব্র গরমে’ মারা যাচ্ছে মুরগি, অর্ধেকে নেমেছে ডিম উৎপাদন
‘তীব্র গরমে’ মারা যাচ্ছে মুরগি, অর্ধেকে নেমেছে ডিম উৎপাদন
ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করলো তুরস্ক
ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করলো তুরস্ক
রোমাকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা লেভারকুসেনের
ইউরোপা লিগরোমাকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা লেভারকুসেনের
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
শিগগিরই শুরু হচ্ছে উন্মুক্ত কারাগার তৈরির কাজ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
শিগগিরই শুরু হচ্ছে উন্মুক্ত কারাগার তৈরির কাজ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী