‘গণতন্ত্রের প্রশ্নে কোনও আপস নেই। কোনও শর্ত মেনে আমি কোথাও যাবো না’ বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের এক বার্তার কথা জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া আমাদের অনুপ্রেরণা, আমাদের বাতিঘর। তিনি ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন, আপস করেননি। তারপর এখনও এই গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে চলেছেন। আজকে তিনি মৃত্যুশয্যায় বলা যেতে পারে। তিনি লড়াই করছেন মৃত্যুর সঙ্গে, জীবনের লড়াই করছেন।’
বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকালে রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক পেশাজীবী কনভেনশনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ও গণতান্ত্রিক পেশাজীবী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এই কনভেনশন হয়। এতে সারা দেশ থেকে শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, কৃষিবিদ, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার দেড় সহস্রাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সেখানেও তিনি (খালেদা জিয়া) পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন, ‘গণতন্ত্রের প্রশ্নে কোনও আপস নেই। কোনও শর্ত মেনে নিয়ে আমি কোথাও যাবো না।’ তৎকালীন বেআইনি সরকারের লোকেরা (১/১১) বলেছিল বিদেশে চলে যাও। তিনি বলেছেন, এই দেশ ছাড়া কোথাও আমার জায়গা নেই। তখন কিন্তু অন্যরা (শেখ হাসিনা) বিদেশে চলে গিয়েছিলেন, তাই না।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেখানে তিনি (আইনমন্ত্রী) বলেছেন, আমি নাকি ভুল বলেছি, মিথ্যাচার করেছি। এখানে আইনজীবীরা আছেন। ৪০১ ধারায় পরিষ্কার বলা আছে, সরকার সরকার সরকার।’
‘তার (সরকার) ক্ষমতা আছে শাস্তি মওকুফ করে দেওয়ার, মাফ করে দেওয়ার। তার ক্ষমতা আছে সাময়িকভাবে স্থগিত করার, তার ক্ষমতা আছে দণ্ডকে মাফ করে দিয়ে তাকে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার। অথচ বেমালুম বলে যাচ্ছে, কোনও সুযোগ নেই। তাকে কারাগারে গিয়ে আবেদন করতে হবে। এ ধরনের কথাবার্তা বলার মানে হচ্ছে, আপনাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে—খালেদা জিয়াকে আপনারা হত্যা করতে চান। সেজন্য আজকে এ ধরনের কথা বলছেন।’
সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, কামরুল ইসলাম সজল, আব্দুস সালাম ও শামীমুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব আবদুল হালিম, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিদর্শক আবদুল কাইয়ুম, ইউনাইটেড ল‘ইয়ার্স ফ্রন্টের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলামসহ বিভিন্ন পেশার নেতারা কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন।
পেশাজীবী কনভেনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জেএসডির আসম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বক্তব্য রাখেন।
