বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার মানেই দুর্বল সরকার। কারণ এদের পেছনে কোনও জনসমর্থন নেই। তবু আমরা আশা করবো আগামী দিনগুলোতে পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বর্তমান প্রফেসর ইউনূসের সরকার বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির উদ্যোগে ‘মওলানা ভাসানী ফারাক্কা লং মার্চ স্মরণে গণসমাবেশ’ উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন একটি নতুন অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকার মানেই দুর্বল সরকার। কারণ এদের পেছনে কোনও জনসমর্থন নেই। আমাদের দল এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে বারবার বলা হয়েছে যে একটা নির্বাচন দেন। যাতে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় অঙ্গনে আমরা বাংলাদেশের মানুষের দাবিগুলো তুলে ধরতে পারি। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে আমরা যে বলিষ্ঠ ভূমিকা আশা করি, ততটা পাইনি। তবু আমরা আশা করবো আগামী দিনগুলোতে পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বর্তমান প্রফেসর ইউনূসের সরকার বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মানবিক করিডোরের কথা বলেছে। বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ। আমরা জানি না, জনগণ জানে না, প্রতিনিধিরা জানে না, কী ধরনের করিডোর দেওয়া হবে এবং এর লক্ষ্য কী। আমরা কি নতুন কোনও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছি? এগুলো সম্পর্কে তো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলাপ-আলোচনা করার দরকার ছিল। কিন্তু দেখি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এক কথা বলেন, প্রেস সচিব আরেক কথা বলেন। জনগণ অন্ধকারে আছে, এটা কী ধরনের সরকার। আমরা গণতান্ত্রিক পরিবেশে অভ্যস্ত। গণতন্ত্রের জন্যই তো আমরা ১৬ বছর সংগ্রামের পর এই মাফিয়া সরকারকে বিদায় করেছি। এখনও কেন আমরা অন্ধকারে থাকবো? সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বিএনপি, কিন্তু আমরাই জানি না কীসের জন্য এই করিডোর দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ভারত হস্তক্ষেপ করেছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি প্রকল্পে বাংলাদেশের নতজানু সরকার, শেখ হাসিনার সরকার দেশের মানুষের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে দেশকে ভারতের একটি কলোনি বানিয়ে দিয়েছিল। দেশের মানুষ বাধ্য হয়ে দীর্ঘদিন সংগ্রাম করে এই মাফিয়া সরকারকে অপসারণ করেছে।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, পানি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ৫৪টা নদী ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। প্রত্যেকটার ওপরে অগণিত বাঁধ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে আমাদের পানির নাব্য কমে গিয়েছে। পানি ছাড়া বাংলাদেশের নদীমাতৃক দেশের কৃষককুলের যে করুণ অবস্থা, তা বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশ অন্যান্য আগ্রাসনের মতো পানি আগ্রাসনের শিকার। এ কথাটি আমরা গত ১৬ বছর ধরে শুনি নাই যে বাংলাদেশ পানি আগ্রাসনের শিকার। না শোনার কারণ হলো, যারা এই আগ্রাসনের হোতা, তারা এমন একটি সরকার এখানে বসিয়ে রেখেছিল, যারা বাংলাদেশের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে প্রতিবেশীর স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীসহ অনেকে।