বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংস্কার ও গণতন্ত্র পরস্পরবিরোধী না। এটা পরিপূরক। একটার জন্য আরেকটাকে আটকে রাখার সুযোগ নাই। সেজন্য আমরা বলি, বিচারও হতে হবে, সংস্কারও হতে হবে, নির্বাচনও হতে হবে এবং সবই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন ।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই যে সংস্কার এবং নির্বাচনকে সামনা সামনি করে দেওয়া হচ্ছে— এটাতো আরেকটা অপরাধ, আরেকটা ভুল। আরে গণতন্ত্র নিজেইতো একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এর আগে রাজতন্ত্র ছিল, সামন্তবাদ ছিল। গণতন্ত্র যে আসছে এটাও তো একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে আসছে, একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আসছে। আর সেই গণতন্ত্র সারা দুনিয়ায় অনেকভাবে কাজ করতেছে। গণতন্ত্র একেক দেশে একেক রকমভাবে কার্যকর হয়। এটাও একটা রিফর্মের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চলতেছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি। আমরা জানি, বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক শক্তি আছে, কিছু সামাজিক শক্তি আছে। অনেকেই তাদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে, কিংবা তাদের গোষ্ঠীর স্বার্থে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটাকে বিলম্বিত করতে চায়। নানা কায়দায় নানা কৌশলে তারা এই গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে বিলম্বিত করতে চায়। এতে তাদের স্বার্থ কতখানি হাসিল হবে আমরা জানি না।
তিনি বলেন, আমরা শুনতেছি একটা নতুন কথা যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হবে। আমাদের তরফ থেকে কোনও অবজেকশান নাই। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করা আমাদের সবার দাবি। কিন্তু আপনারা জানেন, এটা হবে নরমালি জাতীয় নির্বাচনের পর। এতদিন ধরে আমরা তাই তো জানি। জাতীয় নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। তাই এটা (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) টেকনিকালি সম্ভব না।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমি যেটা বলতে চাই, ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর ছিল যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, যারা তাদের সাথে ছিল, তাদের সবার বিচার অবশ্যই করতে হবে। কারণ তারা আমার বিরুদ্ধে, আমার পরিবারের বিরুদ্ধে, আমার বন্ধুর বিরুদ্ধে, আমার সহকর্মীর বিরুদ্ধে, আমার দেশবাসীর বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। অবশ্যই বিচার চাই। কিন্তু সেই বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন করা যাবে না। এই প্রশ্ন যারা তোলে তারা আসলে— এই কথা বলে জনপ্রিয় কথার আড়ালে নির্বাচনটাকে বিলম্বিত করতে চায়।
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি এম এ ওহাবের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির কারি আবু তাহের, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, জাগপার প্রেসিডিয়াম মেম্বার খন্দকার আবিদুর রহমান প্রমুখ।