বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকার মধ্যস্থতাকারীর দায়িত্ব নিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা এখনই সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে চাই না। তবে আমরা ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করতে চাই। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে চাই। এ বিষয়ে সরকারকে লিখিত প্রস্তাবনাও দেওয়া হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১১ দিনের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জনপ্রতিনিধিরা ঘোষণাপত্র তৈরি করেছিলেন, তারা আলোচনা করে সংবিধান প্রণয়ন করেন। তবে পরবর্তী সময়ে ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে সংযুক্ত করা হয়নি।’
তিনি মনে করেন, ঘোষণাপত্রের রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকলেও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত থাকার বিধান নেই।
তিনি জানান, জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি প্রস্তাবনা বিএনপির কাছে দিয়েছে সরকার। এ নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। এটি নতুন করে ড্রাফট দেওয়া হয়েছে। তবে সে ব্যাপারে এখনই বিস্তারিত বলে গোপনীয়তা ভঙ্গ করতে চান না তারা।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গ
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয় সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ দুজনের মধ্যে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পক্ষে বিএনপি। তবে এ বিষয়ে পুরোপুরি ঐকমত্য তৈরি হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিচার বিভাগকে বাইরে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যাপারে সবাই একমত। তবে কাদের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হবে, তা নিয়ে এক হওয়া যায়নি।’ দলীয় ফোরামে আলোচনা করে উচ্চকক্ষের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা আরও ফলপ্রসূ হবে বলেও মনে করেন তিনি।
‘জরুরি অবস্থা’ ইস্যু
জরুরি অবস্থা জারির বিষয়ে ‘প্রধানমন্ত্রীর’ পরিবর্তে ‘মন্ত্রিপরিষদের’ অনুমোদন নেওয়ার ব্যাপারে একমত পোষণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জীবনের নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনও বিষয় ক্ষুণ্ণ করা যাবে না, সে বিষয়টি অগ্রাধিকার হিসেবে রাখতে চাই আমরা। আর এই আইন যাতে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না হয়, সে বিষয়ে সবাই একমত। তবে কোনও প্রক্রিয়ায় কারা সিদ্ধান্ত নেবেন তা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে।’
অপরদিকে জরুরি অবস্থা জারির ক্ষেত্রে ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দের পরিবর্তে ‘বিলুপ্তির প্রস্তাবে’ বিএনপি একমত বলেও জানান সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘তবে যুদ্ধ এবং বহিঃআক্রমণ ছাড়া আরও কিছু বিষয় যুক্ত করার পক্ষে। রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে পড়লে অথবা প্রাকৃতিক মহামারি হলেও জরুরি অবস্থা চায় বিএনপি।’