X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটের আগে সরকার উৎখাতের চক্রান্ত হচ্ছে: ইনু

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৩ জুন ২০২২, ২০:২৪আপডেট : ২৩ জুন ২০২২, ২১:০০

ভোটের আগে শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করার চক্রান্ত হচ্ছে অভিযোগ করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশের শত্রু বিএনপি-জামায়াত ও ঘরের শত্রু দুর্নীতিবাজদের আক্রমণের মুখে। তিনি বলেন, ‘ভোটের আগে সরকারকে উৎখাত করার চক্রান্ত করছে। অস্বাভাবিক সরকার আনার চক্রান্ত ধূলিসাৎ করে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এমন দাবি করেন।

দেশের টাকা পাচারকারীরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার ছোট ভাই প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সাক্ষাৎ শিষ্য দাবি করে ইনু বলেন, ‘এরা ডাবল চোর। এরা দেশের ভেতরে একবার চুরি করে, বিদেশে টাকা পাঠানোর জন্য আরেকবার চুরি করে। দেশে এই ডবল চোরদের ধরার জন্য আইন আছে, মামলাও আছে। তাই বিদেশে পাচার করা টাকা আনার জন্য যে প্রস্তাবটা হয়েছে, দেশের আইনের সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক। আমি বাতিল করার প্রস্তাব করছি।’

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিয়ে যারা সমালোচনা করেছিল, তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা দাতাদের শিখিয়ে দেওয়া বুলির বাইরে একটা কথাও বলতে পারে না। তারা হচ্ছেন দাতাদের তোতাপাখি। শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর কাজ সফলভাবে করার মাধ্যমে প্রমাণ করলেন— এসব প্রাজ্ঞ, বিজ্ঞ, বিশেষজ্ঞরা যোগ্যতার উচ্চতায় শেখ হাসিনার ধারে-কাছেও যায় না। শেখ হাসিনা অনেক পরিকল্পনাবিদ ও সাহসী রাজনৈতিক নেতা, বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ। তার মতো প্রশ্নাতীত দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ এই বাংলায় নেই, উপমহাদেশেও নেই।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাবলম্বী অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা ও ইন্টারনেটের ব্যবহারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। সেজন্য সংবিধান সংশোধন পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা দরকার। সামাজিক শান্তি ও সমতা বিধানের জন্য সংখ্যালঘু ও আদিবাসী কমিশন গঠন করা দরকার। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন দরকার।’

তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল সেন্টার চালু ও ডিজিটাল কূটনীতি চালুর প্রস্তাব করেন। ইন্টারনেটের ওপর প্রস্তাবিত ভ্যাট-ট্যাক্স, ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের ওপর ট্যাক্স প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন।

ইনু বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি আটকাতে হবে। গরিবদের কেনার ক্ষমতা থাকতে হবে। এজন্য নিত্যপণ্যের ওপর ভর্তুকি দিতে হবে। শ্রমিকদের রেশন কার্ড দিতে হবে। কম মূল্যে খাদ্য বিক্রি করতে হবে। বাজার সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘টাকা পাবেন কোথায়? এনবিআরকে অটোমেশন করেন। ৫৪৪টি উপজেলায় কর অফিস স্থাপন করেন। ৯ লাখ হাটবাজার, দোকানিদের করের আওতায় নিয়ে আসেন। ১ কোটি টাকার বেশি আয়কর দিতে পারে—এ রকম লোক বাংলাদেশে ২ লাখ আছে। ওইটা ধরেন, ২ লাখ কোটি টাকা আপনি পাবেন। সম্পদ কর করেন। অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কথা বলেন।’

জাসদ সভাপতি বলেন, ‘বাজেটে টাকা-পয়সা বাড়িয়ে লাভ নাই। বরং আপনি মৌলিক পরিবর্তন অর্থাৎ বাসস্থান, শিক্ষা, খাদ্য, নিরাপত্তা, ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সর্বজনীন ব্যবস্থা গড়তে, অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য বাড়তি বরাদ্দ দেন।’

তিনি বলেন, ‘বাজেট বাস্তবায়নে রাজনৈতিক শান্তি দরকার। অশান্তির রানি খালেদা জিয়া জেলে থাকলেও বিএনপি-জামায়াত জঙ্গি হেফাজত চক্র, যারা মীমাংসিত বিষয়কে অমীমাংসিত করে এবং মানে না, তারা দেশশত্রু, মাঠে নেমেছে। ভোটের আগে শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করতে চায়।’

ইনু বলেন, ‘অপরদিকে চলছে ঘরের ভেতরে দুর্নীতিবাজ ঘরকাটা ইঁদুরদের উৎপাত। শেখ হাসিনার সরকার, আমাদের সরকার, দুই শত্রুর আক্রমণের মুখে। দেশ শত্রুর আক্রমণের মুখে, ঘরের শত্রুর আক্রমণের মুখে। ভোটের আগে যারা সরকার উৎখাতের প্রস্তাব দিচ্ছে, তারা সাংবিধানিক পদ্ধতি বানচাল করতে চায়।’

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ভোটের আগে যারা সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছে, তারা খাল কেটে অস্বাভাবিক সরকার আনতে চায়। ভোটের আগে যারা সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছে, তারা তালেবানি সরকার আনার চক্রান্ত করছে। আমি এই দুই সরকারকে কুমিরের সঙ্গে তুলনা করছি। এই দুই কুমির আনার ভয়াবহ চক্রান্তকে মোকাবিলা করতে হবে। ভোটের আগে সরকারকে উৎখাত করার চক্রান্ত ধ্বংস করে দিয়ে অস্বাভাবিক সরকার আনার চক্রান্ত ধূলিসাৎ করে, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।’

বিদেশি পরামর্শ গ্রহণে সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার, গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজতন্ত্র প্রশ্নে আমদানি করা বিদেশি প্রেসক্রিপশন দেখেন-শোনেন, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের জন্য বাংলাদেশের মতো করে ভূমিজ কার্যপত্র গ্রহণ করে এগোতে হবে। সুতরাং, জঙ্গি দমনে র‌্যাব, এবিপিএন, বিজিবি থাকবে। তাদের লাগবে। গ্রামের নারী-চাষির জন্য ভর্তুকি থাকবে। প্রণোদনা থাকবে। কারও কথা শোনা যাবে না। ইউরোপ, আমেরিকা, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফের দিকে তাকান, কিন্তু নিজ বুদ্ধিতে কাজ করতে ভুলে যাওয়া যাবে না। আমরা সহযোগিতাও চাই, নিজ দেশের অর্থনীতি ও গণতন্ত্রের বিকাশও চাই। বিদেশি বন্ধুদের বলবো—সহযোগিতার মোড়কে ছবক দিতে আসবেন না। ছবক দেবেন না। ছবকদানকারীরা একাত্তরে পাকিস্তানের দোসর ছিল। পাকিস্তানের সমর্থক ছিল।’

/ইএইচএস/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
‘বাংলাদেশ-আমেরিকা ছাড়া কোনও দেশের স্বাধীনতার লিখিত ঘোষণাপত্র নেই’
সরকার উৎখাতের রাজনীতির খেলার স্থায়ী সমাধান দরকার: ইনু
শেখ হাসিনাকে জাসদের অভিনন্দন
সর্বশেষ খবর
চেলসিকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল
চেলসিকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক