দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ দলীয়ভাবে কোনও ব্যয় করেনি বলে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছে। এ জন্য দলটিকে ইসি জরিমানা করলেও সেটা দেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। অপরদিকে, জরিমানার মুখোমুখি হওয়া গণফ্রন্ট ও ন্যাপ বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ ইসিতে হিসাব জমা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিনিধি দল।
পরে দলটির সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে যথেষ্ট খুশি হয়েছি৷ আরপিও অনুযায়ী, যেটা লেখা আছে তা জানিয়ে দিয়েছি যে- আমরা কোনও খরচ করিনি৷ একটা দূরত্ব হয়তো ছিল, তারা হয়তো আমাদের লেখাটা স্পষ্ট করে বুঝতে পারেনি৷ এটা মিটে গেছে।
গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৮টি দল অংশ নেয়। এরমধ্যে নির্ধারিত সময় ৭ এপ্রিলের মধ্যে ২৫টি দল নির্বাচনি ব্যয়ের বিবরণী জমা দিয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দলীয় ব্যয়ের হিসাব না দিলে ৩০ দিন সময় দিয়ে সতর্কতা নোটিস, এরপর ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে আরও ১৫ দিন সময় এবং বর্ধিত সময়েও হিসাব জমা দিতে ব্যর্থ হলে নিবন্ধন বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে ইসির।
কৃষক শ্রমিক লীগের হিসাব প্রশ্নে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, আরপিও অনুযায়ী— সংসদ নির্বাচনে দলগতভাবে যে ব্যয় হয়, তার একটা হিসাব দিতে হয়। উনাদের বক্তব্য হলো, গত ৮ মে যে তথ্য জমা দিয়েছেন ওইটাই উনাদের ব্যয় বিবরণী। সেটা ব্যয় বিবরণী ফরমে দেওয়া ছিল না, যে জন্য আমরা পরবর্তীতে উনাদের চিঠি দিয়েছিলাম। এখন বিষয়টি আলোচনার প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন সেটা গ্রহণ করেছে।
তিনি জানান, সেটাকে ব্যয় বিবরণী হিসেবে ধরা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে সাপোর্টিং হিসেবে ওটা ব্যয় বিবরণী হিসেবে জমা দিয়ে দেবে। দলীয়ভাবে উনারা কোনও ব্যয় করেননি। ব্যক্তির ব্যয় হয়েছে। কমিশন এই বক্তব্য গ্রহণ করেছে।
৮ মে’র হিসাব বিবরণী গৃহীত হওয়ায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়নি দলটিকে। ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, “জরিমানা করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আগের হিসাব বিবরণী গৃহীত হওয়ায় তা দিতে হয়নি। তবে অন্য দুটি দল জরিমানা দিয়েছে।”
নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনি সহায়তা ও সমন্বয় শাখার কর্মকর্তারা জানান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি— এ তিনটি দলকে জরিমানাসহ সময় বেঁধে দিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এরমধ্যে দুটি দল জমা দেয়। কিন্তু কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ মঙ্গলবার ইসির সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টির সুরাহা করে।
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৪৪টি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ ২৮টি দল এবারের ভোটে অংশ নিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ ১৬টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে।