গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, নির্বাচনের বিষয়ে সরকার বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে। তবে আমরা বলেছি— এ বিষয়ে যদি একটি সুনির্দিষ্ট সময় বলা যায়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো একটি প্রস্তুতি নিতে পারবে। এছাড়া অনেকে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে, নির্বাচনের যদি একটি সুনির্দিষ্ট তারিখ না থাকে, তাহলে সেগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ওনারা বারবার বলেছেন যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। জুনের ৩০ তারিখের মধ্যে নির্বাচন হবে, এর একদিনও বাইরে যাবে না।
রবিবার (২৫মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সাকি বলেন, নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সে প্রতিষ্ঠানগুলো যখন পরিপূর্ণভাবে কাজ করা শুরু করবে, তখনই তারা নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবেন এবং প্রশাসনকে গোছানোর পরেই তারা সিদ্ধান্ত নিবেন যে, নির্বাচনটা কবে নাগাদ সুনির্দিষ্ট ভাবে দেওয়া যায়।
আমাদের পক্ষ থেকে বলেছি— বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, যেখানে একদিকে হত্যাকারীদের বিচার এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করার জন্য যে গণতান্ত্রিক সংস্কারে যাওয়ার প্রয়োজন, এতে যে দায়িত্ব নেওয়ার দরকার সেটা আপনার সরকারকেই নিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় আর কোনও সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, ডক্টর ইউনূসকে যেহেতু জনগণ একটা ভরসার জায়গা রেখেছে, সে কারণে তাকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। আপনার ওপর যত চাপই থাকুক না কেন। আপনি যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তা পালন করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন— যাতে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকে।
সাকি বলেন, আমরা বলেছি এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নানা জায়গায় যেই অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, যা কিনা একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এই অনাস্থার জায়গা থেকে এবং দূরত্বের জায়গাটা আমাদের কমিয়ে আনতে হবে। যে কারণে আমাদের আলাপ আলোচনা দরকার। এখানে তো আমরা পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে বুঝতে পারি যে কে কী চায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি জনগণ একটা দৃশ্যমান বিচার দেখতে চায়। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের বিষয়ে কথা হয়েছে, আমরা বলেছি, জুলাইয়ের অবস্থান সবার অবদানে সম্মিলিত অবদানে তৈরি হয়েছে। তবে কোনও একটি পক্ষ এমনভাবে জুলাইয়ের ক্রেডিট দাবি করছে, তারা এমনটা বোঝাতে চাচ্ছে যে, একদল জুলাইকে ধারণ করে আরেক দল ধারণ করে না। এ সব বিষয়ে আমরা সরকারকে সচেতন থাকতে বলেছি।
আমরা সরকারকে বলেছি, ন্যূনতম ঐকমত্য ছাড়া গণতান্ত্রিক উত্তোলন সম্ভব না। প্রশাসনসহ নির্বাচন সংক্রান্ত যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর বিষয়ে আরও কমফোর্টেবল হতে চাচ্ছি। সবাই যে মনে করছে নির্বাচনের বিষয়টা বিলম্ব করা হচ্ছে, সেটা তারা মানছেন না।
আমরা মনে করি, বাংলাদেশ একটা জাতীয় পুনর্গঠনেরকালে আছে। আমাদের এখানে জাতীয় নির্বাচনটাই মুখ্য— তাই জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটা রোডম্যাপ হওয়া প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে স্থানীয় নির্বাচন পরে হলেও সমস্যা নেই, বলেন সাকি।