এক বছর আগের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর কেন সংস্কার নিয়ে বিরোধ, কেন অবদান নিয়ে দ্বিধা— তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আমরা বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, আজকে কেন এত প্রশ্ন। সংস্কার নিয়ে কে কত অবদান রেখেছেন, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে কেন এত দ্বিধা।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর উপলক্ষে আমার বাংলাদেশ পার্টির উদ্যোগে ‘অনুপ্রেরণা, অন্তপর্যালোচনা ও প্রতায়নীপ্ত অঙ্গীকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৩৬ দিন উদযাপন’ শীর্ষক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, যখন গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, তখন কিন্তু আমরা কেউ কারও অথরিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি। ছাত্ররা যখন কমপ্লিট শাটডাউন ডেকেছিল, ঢাকা ব্লকেড দিয়েছিল, রেমিটেন্স শাটডাউনের আহ্বান করেছিল, যখন ঢাকা মার্চের আহ্বান করেছিল— আমরা তাদের কেউ প্রশ্ন করিনি তোমরা কারা? সেদিন আমরা তাদের আহ্বানে রাজপথে নেমে এসেছিলাম। তাহলে আজকে কেন প্রশ্ন ওঠে তোমরা কারা, তোমাদের সংগ্রাম কতদিনের?
তিনি বলেন, একইভাবে আমার প্রশ্ন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধারা কেন আজকে প্রশ্ন তোলেন, আপনারা তো বালুর ট্রাকও সরাতে পারেননি।
মঞ্জু বলেন, আমরা বাংলার মানুষ বার বার ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, বার বার দ্বিধা বিভক্ত হয়েছি, আমরা বার বার শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আবার দুর্ভাগ্যের সঙ্গে ইতিহাস বলতে হয়, আমরা নিজেও নিজের সঙ্গে লড়াই করেছি, রক্ত ঝরিয়েছি। এত রক্ত যাওয়ার পরও কেন পরিবর্তন হয় না।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোনও মতাদর্শিক জোট, কোনও ক্ষমতার জোটে বিশ্বাসী না। আমরা বিশ্বাস করি, বৈষম্যের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের পক্ষে, নতুন এক বাংলাদেশের রূপান্তরের পক্ষে, সাধারণ জনতার জোটে আমরা বিশ্বাস করি। জুলাই শহীদ নাজমুল কাজী, আবু সাঈদ, মুগ্ধের রক্তের বিনিময়ে একটা কল্যাণকর বাংলাদেশের জন্য এবি পার্টির সংগ্রহ অব্যাহত থাকবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, একজন সম্পাদক ও পলিটিক্যাল অ্যানালিস্ট হিসেবে আমি রাজনীবিদদের কাছে প্রস্তাব দিচ্ছি, সেটা হলো— আমাদের একটি ন্যাশনাল ওমবুডসম্যানের পদ তৈরি করতে হবে। আমার ধারণা, আপনারা আমার সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন। সেটি হবে প্রধানমন্ত্রীর র্যাংক অ্যান্ড স্ট্যাটাসের একটি পদ। কিন্তু তার কোনও নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না। কারণ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হলে রাষ্ট্র পরিচালনা করা যাবে না। ওমবুডসম্যানের কাজ হবে নৈতিক বল। অর্থাৎ যে নাগরিক রাষ্ট্র দ্বারা অত্যাচারিত হবেন, কিংবা যিনি ন্যায়বিচার পাবেন না, তিনি ন্যাশনাল ওমবুসম্যানের কাছে তার নালিশ জানাতে পারবেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা রাখি ও সন্তান আরিয়ানা কাজী নুজাইরাহ। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ মাসুদ প্রমুখ।