২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের জিততে তখন দরকার ১৫ বলে ২০ রান। তাসকিন আহমেদের বলে ম্যাচ বের করে নেওয়া ক্রিস ওকস শট খেলতে গিয়ে মিডঅনে ক্যাচ দিলেন। কিন্তু সেটি তালুবন্দি করতে পারলেন না তামিম ইকবাল। ওই ক্যাচ মিসে ‘লজ্জায় ডোবা’ তামিম জানালেন, তিনি ৩২ কোটি গালি খেয়েছিলেন!
শুক্রবার রাতে তাসকিন ও রুবেল হোসেনের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে এক ঘণ্টার মতো আড্ডা দিয়েছেন তামিম। হুট করে লাইভে যোগ দেওয়া নাসির হোসেন নিজেদের মধ্যকার মজার স্মৃতি টেনে তামিমের কাছে প্রশ্ন রাখেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ক্যাচ প্রসঙ্গে। তামিমের শুরুটা ছিল এমন, ‘নাসির মনে কর যে, বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ, ১ বলে ২ রান লাগে। তুই তো ভালো ফিল্ডার। ধর, এমন সময়ে একটা ক্যাচ উঠছে আর তুই ক্যাচটা ফেলে দিলি। ফলে আমরাও বিশ্বকাপের ফাইনাল হেরে গেলাম। তোর তখন কী অনুভূতি হবে?’
নাসিরের পাল্টা প্রশ্ন, ‘এটা তো মজা করে বলতেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, অ্যাডিলেডের ম্যাচে তাসকিনের বলে আপনি যে ক্যাচ ছেড়েছিলেন, তখন আপনার অনুভূতি কী হয়েছিল?’ এবার তামিমের উত্তর, ‘ক্যাচ ছাড়ার পর আমার মনে হচ্ছিল, আল্লাহ, মাটি ফাঁক হয়ে যাক, আমি এর ভেতর ঢুকে পড়ি। আমাকে আর কারও দেখার দরকার নেই। আমি ওই মুহূর্তে একসঙ্গে ৩২ কোটি গালি খেয়েছি। ৩২ কোটি কারণ, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ, একটা করে গালি তো দেয়নি, দুইটা করে দিয়েছে সবাই।’
ওই ম্যাচে তামিমকে অবশ্য বাঁচিয়ে দেন রুবেল। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে আত্মসমর্পণ করে ইংল্যান্ডের বাকি ব্যাটসম্যানরা। ম্যাচ জেতানো নায়ক রুবেলের পেছনে জয়ের আনন্দে সবাই দৌড়ালেও তামিম দৌড়িয়েছেন ‘মুক্তি’র আনন্দে, ‘রুবেল যখন এক ওভারে ২ উইকেট নিয়ে নিলো। ওই খেলার হাইলাইটস দেখলে দেখবি সবাই রুবেলের পেছনে দৌড়ায়। সবাই তো রুবেলের পেছনে দৌড়েছে যে ম্যাচ জিতে গেছি বলে, আর আমি রুবেলের পেছনে দৌড়েছি যে, আমি বেঁচে গেছি (হাসি)! যদি ওই ম্যাচ হারতাম, তাহলে আমার আর বাংলাদেশে আসা লাগতো না।’
তামিমের কথা শেষ হতেই নাসির শুরু করেন, “আসলে ভাই আপনি পরে ড্রেসিংরুমে এসে বলেছিলেন, ‘এই কান ধরলাম, আমি আর ক্যাচ নিয়ে কারও সঙ্গে মজা নিবো না।”
প্রতি বিশ্বকাপেই তামিমের হাত থেকে ক্যাচ ছুটেছে। গত বিশ্বকাপেও ৯ রানে তামিমের কাছ থেকে ‘জীবন’ পেয়ে সেঞ্চুরি করেন ভারতের রোহিত শর্মা। বিশ্বকাপেই কেন এমন হয়? উত্তরটা জানা নেই তামিমের, ‘আল্লাহই জানে, কেন বিশ্বকাপ আসলেই আমার কাছ থেকে ক্যাচ ছুটে যায়, গত বিশ্বকাপেও ক্যাচ ছুটে গেছে। আশা করি, ২০২৩ বিশ্বকাপে সব পুষিয়ে দেবো।’
