টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে চার ম্যাচের তিনটি জিতে সুপার এইটে সুযোগ করে নিয়েছে বাংলাদেশ। পরের পর্বে কঠিন পরীক্ষায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলবে। বড় তিনটি দলের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে টপ অর্ডারের ব্যাটিং নিয়ে অস্বস্তিতে টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশের ব্যাটাররা কতটা খারাপ করেছে এটি টুর্নামেন্টে ব্যাটারদের তালিকা দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। ৯৫ রান নিয়ে তালিকার ১৮ নম্বরে অবস্থান তাওহীদ হৃদয়ের। ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে দারুণ করেছে টাইগাররা। সেরা দশে বাংলাদেশের দুই বোলার জায়গা করে নিয়েছেন। দশের পর পরই আছেন তাসকিন আহমেদ ও রিশাদ হোসেন।
বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বোলাররা। এবারের বিশ্বকাপে উইকেটে ভালো সহায়তা পাচ্ছেন তারা। তবে বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন, বিশ্বকাপের উইকেট এতটা খারাপও নয়। গ্রুপ পর্বের চারটি ম্যাচেই ব্যর্থ টপ অর্ডার। সব ম্যাচেই বোলারদের প্রভাব ছিল উল্লেখ করার মতো। সুপার এইটে ব্যাটাররা তাদের ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে ম্যাচ জেতা সহজ হবে না।
বিপরীতে বোলিংয়ে যৌথভাবে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। ৪ ম্যাচে ৪.৮০ ইকোনমিতে তার শিকার ৯ উইকেট। শীর্ষ দশ বোলারদের তালিকায় পাঁচ নম্বরে আছেন এই তরুণ। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট ফজল হক ফারুকির, ১২টি। তাছাড়া সাকিবের ওপরে আছেন ট্রেন্ট বোল্ট, আকিল হোসেন ও আইনরিখ নর্কিয়া। তাদের শিকার ৯টি উইকেট।
৭ উইকেট নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানও আছেন সেরা দশে। বাংলাদেশের আরও দুই বোলার রিশাদ ও তাসকিন প্রত্যেকে ৭টি করে উইকেট শিকার করেছেন। তারাও যৌথভাবে চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। সেরা বোলারদের তালিকায় আছেন ১৭ ও ১৮ নম্বরে।
শীর্ষ বোলারদের তালিকায় যেখানে বাংলাদেশের আধিপত্য, সেখানে ব্যাটারদের চিত্র ভিন্ন। সেরা দশে নেই কোনও বাংলাদেশি ব্যাটার। ৪ ম্যাচে ১২৫ স্ট্রাইকরেটে ৯৫ রান করে তালিকার ১৯ নম্বরে আছেন তাওহীদ। তিনিই এখন অব্দি দলের সেরা ব্যাটার। ১০৬.৯৭ স্ট্রাইকরেটে ৯২ রান করে সাকিব আল হাসান আছেন ২২ নম্বরে। ১০০ স্ট্রাইকরেটে ৭২ রান নিয়ে ২৯ নম্বরে আছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৮৬.১৫ স্ট্রাইকরেটে ৫৬ রান নিয়ে ৫৮ নম্বরে লিটন। ১১১.৯০ স্ট্রাইকরেটে ৪৭ রান করে তানজিদ হাসান তামিম রয়েছেন ৬৯ নম্বরে। ৫৯.০৯ স্ট্রাইক রেটে ৪ ম্যাচে ২৬ রান করে তালিকায় ১০৫ নম্বরে আছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত!
তালিকায় বাংলাদেশের ব্যাটারদের অবস্থানই বলে দিচ্ছে ব্যাটিংয়ে কতটা কঠিন সময় পার করছেন তারা। সুপার এইটের আগে এমন পরিস্থিতি দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আশা করছেন, সুপার এইটে ব্যাটাররা রানে ফিরবেন, ‘এই পুরো টুর্নামেন্টেই খুব বড় স্কোর হচ্ছে না। বেশির ভাগ ম্যাচেই কম রান হচ্ছে। সেগুলো ডিফেন্ড করছে আবার জিতে যাচ্ছে। আমি যেটা বললাম, কম রান হয়েছে। এত কম রানেরও উইকেট না। ১৩০-১৪০ রানের উইকেট ছিল। প্রতিদিন বোলাররা ম্যাচ জেতাবে, এটাতো সম্ভব না। আশা করবো, প্রতিদিনই তারা ম্যাচ জেতাক। ব্যাটারদের দায়িত্বও আছে। কেন হচ্ছে না, সবাই চেষ্টা করছে বের করার—কিন্তু হচ্ছে না, এটা গ্রহণযোগ্য না। আশা করি, সুপার এইটে ব্যাটাররা রানে ফিরতে পারবে।’