স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে): বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭.১ ওভারে ১০১/৩, পিছিয়ে ১০১ রানে (মুশফিক ৩১*, জয় ৩৮*; সাদমান ১, মুমিনুল ০, শান্ত ২৩)
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮৮.৪ ওভারে ৩০৮/১০, লিড ২০২ (রাবাদা ২*; মারক্রাম ৬, স্টাবস ২৩, বেডিংহ্যাম ১১, ডি জর্জি ৩০, ব্রিটজকে ০, রিকেলটন ২৭, মুল্ডার ৫৪, মহারাজ ০, পিয়েট ৩২, ভেরেইন ১১৪)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৪০.১ ওভারে ১০৬/১০ (হাসান ৪*; সাদমান ০, মুমিনুল ৪, শান্ত ৭, মুশফিক ১১, লিটন ১, মিরাজ ১৩, জয় ৩৩, জাকের ২, নাঈম ৮, তাইজুল ১৬)
আলোর স্বল্পতায় দ্বিতীয় দিনের খেলাও আগেভাগে শেষ হয়েছে। তার আগে মাহমুদুল হাসান জয়কে স্টাম্পড করা নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নটআউট থেকেছেন এই ওপেনার। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১০১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে। দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০১ রান। ক্রিজে আছেন মাহমুদুল হাসান জয় (৩৮) ও মুশফিকুর রহিম (৩১)। অবশ্য আগের ওভারেও মহারাজের বলে জয় জীবন পেয়েছেন। তার ফিরতি ক্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার নিতে পারেননি।
৪ রানে দ্রুত ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে টেনে তুলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাহমুদুল হাসান জয়। শান্তর বিদায়ে ভাঙে ৫৫ রানের দারুণ জুটি। শান্ত-জয়ের জুটি ভাঙার পর মুশফিকুর রহিম আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ড এগিয়ে নিয়েছেন। তার ব্যাটে রান উঠেছে দ্রুত। জয়-মুশফিকের ৪২ রানের জুটিতে দলের স্কোর শেষ বিকালে একশ ছাড়িয়েছে। ৩১ রানে অপরাজিত থেকে আবার টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৬ হাজার রানের মাইলফলকও ছুঁয়েছেন মুশফিক। তিনি ৯৩ টেস্টে এই কীর্তি গড়েছেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়াদের হয়ে ১০ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন কাগিসো রাবাদা। ৩৩ রানে একটি নিয়েছেন কেশভ মহারাজ।
৫৫ রানের জুটি ভাঙলো শান্তর বিদায়ে
শুরুতে দ্রুত দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাহমুদুল হাসান জয়। ৫৫ রান যোগ করে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিচ্ছিলেন তারা। কিন্তু ১৮.৫ ওভারে মনোযোগ হারিয়ে বসেন অধিনায়ক শান্ত। কেশভ মহারাজের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ২৩ রানে থেমেছেন তিনি। তাতে ভাঙে দারুণ একটি জুটি।
শান্ত-জয়ের ব্যাটে বাংলাদেশের প্রতিরোধ
৪ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে শান্ত-জয়ের জুটিতে স্বাগতিকরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তৃতীয় উইকেটে পঞ্চাশ রান ছাড়িয়েছে দুজনের জুটি।
দুই উইকেট হারিয়ে চায়ের বিরতিতে বাংলাদেশ
প্রোটিয়াদের ২০২ রানের লিডের পর প্রথম ইনিংসের মতোই বাজে ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের সূচনা করেছে বাংলাদেশ। ৪ রানের ব্যবধানে দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে। রাবাদার আঘাতে সাজঘরে ফিরেছেন ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মুমিনুল হক। বাংলাদেশ চাপে থেকে চায়ের বিরতিতে গেছে। দ্বিতীয় সেশন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৯ রান। তারা এখনও ১৮৩ রানে পিছিয়ে। ক্রিজে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত (৫) ও মাহমুদুল হাসান জয় (১১)।
তৃতীয় ওভারেই সাদমান-মুমিনুলকে ফেরালেন রাবাদা
প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ ছিলেন ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ইনিংসেও দেখা গেলো একই চিত্র! প্রতিরোধ গড়ার আগেই তৃতীয় ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। প্রথম বলে সাদমান ইসলামকে ফিরিয়ে শুরুর ব্রেক থ্রু এনে দেন কাগিসো রাবাদা। সাদমান শর্ট লেগে জর্জিকে ক্যাচ দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে শূন্যতে আউট হওয়া এই ওপেনার এবার ফিরলেন এক রানে। তার পর নতুন নামা মুমিনুল হকও ব্যর্থ হয়েছেন। একই ওভারে মাত্র দুই বল টিকতে পেরেছেন তিনি। রাবাদার ব্যাক অব লেংথের চতুর্থ ডেলিভারিতে ছিল বাড়তি বাউন্স। সেটা খোঁচা মারতে গিয়ে তৃতীয় স্লিপে মুল্ডারকে ক্যাচ দিয়ে শূন্যতে ফিরেছেন মুমিনুল।
২০২ রানের লিড নিয়ে শেষ প্রোটিয়াদের ইনিংস
বাংলাদেশকে হতাশ করে প্রথম ইনিংসে ২০২ রানের লিড পেয়ে থেমেছে প্রোটিয়া দল। কাইল ভেরেইনের সেঞ্চুরিতে সফরকারীরা প্রথম ইনিংসে থেমেছে ৩০৮ রানে।
স্বাগতিকরা যে চাওয়া নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল তাতে মোটেও সফল হয়নি। উল্টো সকালে তাদের হতাশ করে ১১৯ রানের জুটিতে দলকে সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দেন ভিয়ান মুল্ডার ও কাইল ভেরেইন। লাঞ্চের আগে মুল্ডারকে আউট করার মাধ্যমে জুটি ভেঙে জোড়া আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। তার পরেও দলকে পথ হারাতে দেননি ভেরেইন। নবম উইকেটে পিয়েটের সঙ্গে ৬৬ রানের জুটিতে দলকে ভালো লিড পাইয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছেন। পিয়েটের আউটের পর শেষ দিকে ঝড়ো গতিতে খেলে লিড দুইশ ছাড়াতেও অবদান রাখেন তিনি। আগ্রাসী হতে গিয়ে ভেরেইন স্টাম্পড হয়ে ফিরলে ৩০৮ রানে থামে প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংস।
প্রথম ইনিংসে তাইজুল গতকালের পর আজ কোনও উইকেট পাননি ১২২ রানে তার শিকার ৫ উইকেট। হাসান ৬৬ রানে তিনটি শিকার করেছেন। ৬৩ রানে দুটি নিয়েছেন মিরাজ।
পিয়েটকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মিরাজ
লাঞ্চের আগে টানা দুই উইকেট হারালেও ইনিংসের নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হতে দেননি কাইল ভেরেইন। দ্বিতীয় সেশনে ফিরে নবম উইকেটে পিয়েটের সঙ্গে ৬৬ রানের জুটি গড়ে লিড সমৃদ্ধ করেছেন। মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পিয়েটকে ৩২ রানে এলবিডাব্লিউতে ফেরান তিনি। পিয়েট রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।
ভেরেইনের সেঞ্চুরি
লাঞ্চের আগে হাসান মাহমুদ টানা দুই উইকেট নিলেও কাইল ভেরেইন ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দ্বিতীয় সেশনে নবম উইকেটে ডেন পিয়েটকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন তিনি। পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটির পর ভেরেইন পূরণ করেছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
১৩৭ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে দক্ষিণ আফ্রিকা
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা আদতে হয়ে থাকলো দক্ষিণ আফ্রিকার। বাংলাদেশ দ্রুত উইকেট নেওয়ার আশায় থাকলেও দেড় ঘণ্টার মতো প্রতিরোধ গড়ে খেলেছেন কাইল ভেরেইন ও ভিয়ান মুল্ডার। গতকাল থেকে খেলা এই জুটি বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে সকালের শুরুতেই। দু’জনে ফিফটি তুলে প্রোটিয়াদের সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন। ১১৯ রানের এই জুটি ভেঙেছে মুল্ডারের বিদায়ে। হাসান মাহমুদ তাকে ক্যাচ আউট করার পরের বলে কেশভ মহারাজকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু লাঞ্চের আগে আর কোনও উইকেট পায়নি স্বাগতিক দল। ভেরেইন একপ্রান্ত আগলে ৭৭ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চ বিরতিতে গেছেন। প্রথম সেশন শেষে প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৪৩ রান। তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ১৩৭ রানে। ভেরেইনের সঙ্গে রয়েছেন ডেন পিয়েট।
প্রথম সেশনে দাপট দেখানো প্রোটিয়ারা দুই উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান যোগ করেছে। এখন দেড়শ রানের লিড নেওয়ার পথে ছুটছে তারা।
হাসানের জোড়া আঘাত
দেড় ঘণ্টার মতো প্রতিরোধ গড়ে খেলেছেন কাইল ভেরেইন ও ভিয়ান মুল্ডার। বাংলাদেশকে হতাশ করে লিড সমৃদ্ধ করছিলেন তারা। তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। তাদের মধ্যে মুল্ডার ক্যারিয়ারে প্রথমবার ফিফটির দেখা পেয়েছেন। মুল্ডারকে অবশ্য ৪৭ রানে ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেছেন মুমিনুল। তবে হাসান মাহমুদ বোলিংয়ে এসে ৬৫তম ওভারে কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন জোড়া আঘাতে। প্রথমে ব্যাক অব লেংথের বলে মুল্ডারকে সাদমানের ক্যাচ বানিয়েছেন। পরের বলে নতুন ব্যাটার কেশভ মহারাজকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে আবার মোমেন্টাম বদলে দেন তিনি। মুল্ডার ফেরার আগে ১১২ বলে ৫৪ রান করেছেন। মহারাজ ফিরেছেন রানের খাতা খুলবার আগে।
মুল্ডারের ক্যাচ ছাড়লেন মুমিনুল
দারুণ জুটিতে বাংলাদেশকে হতাশ করছেন ভিয়ান মুল্ডার ও কাইল ভেরেইন। ঘণ্টাখানেকের প্রতিরোধের পর এই জুটি ভাঙার সুযোগ এসেছিল। ৫৯.৬ ওভারে নাঈম হাসানের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন মুল্ডার। দুর্ভাগ্য শর্ট লেগে থাকা মুমিনুল সেটা নিতে পারেননি। প্রোটিয়া ব্যাটার তখন ৪৭ রানে ব্যাট করছিলেন।
লিড একশ ছাড়ালো দক্ষিণ আফ্রিকার
দিনের শুরুতে দ্রুত উইকেট নেওয়ার আশায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম ঘণ্টায় তাদের হতাশ করে উল্টো কর্তৃত্ব করেছেন ভিয়ান মুল্ডার ও কাইল ভেরেইন। সপ্তম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছেন তারা। গড়েছেন সেঞ্চুরি ছাড়ানো পার্টনারশিপ। ভেরেইনতো চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। তাতে প্রোটিয়ারা এই জুটিতেই প্রথম ঘণ্টায় লিড একশ ছাড়িয়েছে।
মুল্ডার-ভেরেইনের জুটিতে লিড পঞ্চাশ ছাড়ালো দক্ষিণ আফ্রিকার
মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্রুত অলআউট করার আশা নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে দ্রুত রান তুলে লিড পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে প্রোটিয়া দল। মুল্ডার-ভেরেইন জুটি আবার পঞ্চাশও পূর্ণ করেছে।
চ্যালেঞ্জিং উইকেটে ঘটনাবহুলভাবে শেষ হয় মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন। প্রথম দিনেই উইকেট পড়েছে ১৬টি! বাংলাদেশ শুরুতে ব্যাট করলেও বাজে ব্যাটিংয়ে গুটিয়ে গেছে মাত্র ১০৬ রানে। তবে দলের পারফরম্যান্সে বাজে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ছিল ভালো বোলিংয়ের সমন্বয়। দক্ষিণ আফ্রিকা লিড নিয়ে এগিয়ে থাকলেও তাদের অর্ধেকের বেশি উইকেট তুলে নিতে পেরেছে স্বাগতিকরা। তাতে চাপে রয়েছে প্রোটিয়া দল। প্রথম দিনে আলোর স্বল্পতায় খেলা আগেভাগে সমাপ্ত হওয়ার আগে তাদের স্কোর ছিল ৪১ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪০ রান। প্রোটিয়ারা দিন শেষে এগিয়েছিল ৩৪ রানে।
১০৮ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ৩২ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে মাঠ ছাড়েন কাইল ভেরেইন ও ভিয়ান মুল্ডার। এ দুজনই লিড বাড়িয়ে নেওয়ার সংকল্প নিয়ে দ্বিতীয় দিন খেলতে নেমেছেন।
প্রথম দিন বাংলাদেশের সেরা বোলার ছিলেন বামহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৪৯ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন। এটি তাইজুলের ১৩তম ৫ উইকেট শিকারের নজির। একটি উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। মিরাজ ছিলেন উইকেটশূন্য।
