টানা ছয় ম্যাচ হারার পর দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে জ্বলে উঠলো ঢাকা ক্যাপিটাল। দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম রাজশাহীর বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে উঠেন। দারুণ ছন্দে থাকা তাসকিনও লিটনের কাছে রেহাই পাননি। এই দুই ব্যাটারের রেকর্ড জুটির ওপর দাঁড়িয়ে ঢাকা ২৫৪ রান করে। কঠিন এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে রাজশাহীর ইনিংস ১০৫ রানেই থেমে যায়। ফলে ১৪৯ রানের রেকর্ড জয়ে বিপিএলে হারের বৃত্ত ভাঙলো ঢাকা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৫৫ রান করতে রাজশাহীকে ভাঙতে হতো পুরানো সব রেকর্ড। কিন্তু পারেনি তারা। রানের পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে ১০৫ রানেই অলআউট হয় এনামুল হক বিজয়ের দল। ঢাকার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতেই টপ অর্ডার ধসে পড়ে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন রায়ান বার্ল। এর বাইরে ইয়াসির আলীর ব্যাট থেকে আসে ১৭ রানের ইনিংস।
ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে দুর্বার ছিলেন ঢাকার বোলাররা। দলের সবাই দারুণ বোলিং করে রাজশাহীর ব্যাটারদের আটকে রাখেন। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ, মুকিদুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন ও ফারমানউল্লাহ। মোস্তাফিজুর রহমান নেন একটি উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে ঢাকা শুরু থেকেই দাপট দেখায়। লিটন ও তানজিদের সামনে বল ফেলার জায়গাই যেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না রাজশাহীর বোলাররা। দাপুটে ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন লিটন। ডানহাতি ওপেনার অপরাজিত ছিলেন বিপিএলে চতুর্থ সর্বোচ্চ ১২৫ রানের ইনিংস খেলে।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার দিনে বিপিএলে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছেন লিটন। রাজশাহীর বিপক্ষে মাত্র ২৪ বলেই পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি, ৪৪ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় দ্রুততম শতক তার। সবমিলিয়ে ৫৫ বলে ১০ চার ও ৯ ছক্কায় সাজানো ছিল এই বিস্ফোরক ইনিংস।
আরেক ওপেনার তানজিদ আউট হওয়ার আগে খেলেছেন ১০৮ রানের অনবদ্য ইনিংস। তানজিদ ফেরায় ভেঙেছে তাদের দুজনের ১১৮ বলে ২৪১ রানের ওপেনিং জুটি। বিপিএলের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বেশি রানের জুটি এবং ছেলেদের টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
দুইজনের জোড়া সেঞ্চুরিতে বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রানের পুঁজি পায় ঢাকা। এই সময় তারা পেছনে ফেলেছে ২০১৯ সালে রংপুর রাইডার্সের করা ২৩৯ রানের পুঁজিকে। রবিবার ২৫৪ রানের রেকর্ড পুঁজি করার পথে তানজিদ-লিটন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ক্রিস গেইলের জুটির রেকর্ডও ভেঙেছেন। ২০১৭ সালে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে অবিচ্ছিন্ন ২০১ রানের জুটি গড়েছিলেন রংপুর রাইডার্সের দুই ব্যাটার।
এদিনে রাজশাহীর কোনও বোলারই ছন্দে ছিলেন না। তাদের বোলিং ছিল নখদন্তহীন। একমাত্র তাসকিনই যা একটু ভালো বোলিং করেছেন।