গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আম্পায়ার্স বিভাগে আয়োজিত এক অভ্যন্তরীণ সভায় ম্যাচ রেফারিদের মাঝে দ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আম্পায়ারিং বিভাগে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান করছেন। বৈঠকের পরপরই একটি পক্ষ বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও),আম্পায়ার্স ও ম্যাচ অফিসিয়াল বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। যেখানে নিয়ামুর রশিদের নেতৃত্বে সেই অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন সাতজন ম্যাচ রেফারি।
চিঠিতে ম্যাচ রেফারিরা উল্লেখ করেছেন, দেবব্রত পালের সাম্প্রতিক আচরণ তাদের জন্য ‘অসুরক্ষার’ জন্ম দিয়েছে। বৈঠকের সময় তার কথাবার্তা ছিল ‘অত্যন্ত আগ্রাসী’, যা প্রায় শারীরিক সংঘর্ষের পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল। তাই ভবিষ্যতে দেবব্রতের সঙ্গে কোনও অফিসিয়াল আলোচনায় অংশ নিতে তারা অনাগ্রহী বলেও স্পষ্ট জানান। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দেবব্রত আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠুর কোন সহযোগিতা না পেয়ে বিসিবির সভাপতি ফারুক আহমেদের বরাবর চিঠি দিয়েছেন। ম্যাচ রেফারির সভাতে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
দেবব্রত বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ অস্বীকার করে পুরো ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেন তিনি, ‘আমি সব সময় সত্য বলেছি, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করেছি। সেই কারণে আজ আমি তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে এখন রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে মিডিয়ায় ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। আমি ৫ আগস্টের আন্দোলনের আগ থেকেই বিসিবির নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। গত ১৭ বছর যারা সুবিধা নিয়েছে, এখন তারা দিশেহারা হয়ে নতুন ক্ষমতার কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে চাইছে। আমার বিরুদ্ধে গঠনমূলক নয়, বরং ব্যক্তিগত আক্রমণ চলছে।’
দেবব্রত পাল আরও বলেছেন, বৈঠকের পুরো অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে এবং তাতে প্রমাণ রয়েছে তিনি নন বরং নিয়ামুর রশিদ রাহুলই প্রথমে গালিগালাজ শুরু করেন এবং তার পরিবার সম্পর্কেও অশালীন মন্তব্য করেন, ‘আমি শুধু বলেছিলাম যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটেও অপরাধ অনুযায়ী কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত। এই কথা বলতেই রাহুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ও আমার চরিত্রে, এমনকি পরিবার নিয়েও বাজে কথা বলেছে। আমি এরইমধ্যে বিসিবি সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি চাই যারা সত্যিই নিয়ম ভঙ্গ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
সম্প্রতি মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি কমানোর ঘটনাকে ঘিরে বিসিবিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এই ঘটনায় বিসিবির অভিজ্ঞ আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত ঘরোয়া ম্যাচ পরিচালনা থেকে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। টেকনিক্যাল কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন এনামুল হক মনিও। সবকিছু মিলিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় অস্থিরতা বিরাজ করছে।