সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে একই সংস্করণে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে যাবে বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচ শুরু হবে ২৮ মে। এই সফরে বাংলাদেশি পেসার নাহিদ রানা যাচ্ছেন না। তার পাশাপাশি ট্রেনার নাথান কেলি ও ফিল্ডিং কোচ জেমস প্যামেন্টও পাকিস্তানের বিমানে উঠবেন না। যদিও নাহিদের বদলে কাউকেই দলের সাথে যুক্ত করা হবে না।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের সিরিজ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে সিরিজটি বেশ কয়েকদিন পিছিয়ে শুরু হচ্ছে। পাশাপাশি সিরিজটিও কমে দাঁড়িয়েছে তিন ম্যাচের। মূলত নিরাপত্তা ইস্যু এবং ঈদের আগে দ্রুত খেলা শেষ করার চিন্তা থেকেই ম্যাচের সংখ্যা কমানো হয়েছে। দুবাইয়ে সোমবার রাতে শারজাতে পিসিবি চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ৷ সেখানে ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিমও উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকেই বাংলাদেশের সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। পাকিস্তান সফর নিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে বিসিবি। ক্রিকেটারসহ কোচিং স্টাফদের কাছে জানতে চাওয়া হয় কারা কারা পাকিস্তান যেতে চান না? ক্রিকেটাররাদের মধ্যে নাহিদ রানা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর বাইরে দুই কোচিং স্টাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা যেতে চান না পাকিস্তানে। বিসিবি তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে।
আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে নাহিদ ও রিশাদ হোসেন পাকিস্তানে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) খেলতে গিয়েছিলেন। নাহিদ পেশাওয়ার জালমি এবং রিশাদ লাহোর কালান্দার্সের হয়ে পিএসএল খেলতে যান। তবে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতের কারণে নিরাপত্তা শঙ্কায় মাঝপথে স্থগিত করা হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি টুর্নামেন্টটি। জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ বিমানে পাকিস্তান থেকে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে ফেরে ওই দুই ক্রিকেটার। এর মধ্যে তারা খবর পায়, বিমান ছাড়া ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ওই বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়েছে। যদিও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক, পাকিস্তানও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
তারপরও তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে দেশটিতে যেতে রাজি নন নাহিদ। যদিও রিশাদ যাচ্ছেন। নাহিদের নিজের নাম প্রত্যাহার নিয়ে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন বলেছেন, ‘যে ধরনের ঘটনার মুখোমুখি ওদের হতে হয়েছে, নাহিদ রানা বা রিশাদকে মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেটা কিছুটা যদি ট্রমাটাইজড করে একজনকে, তাদের দোষ দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। সে কারণে সম্ভবত ও নিজেকে উইথড্র করেছে। অন্য দুইজন, আমরা জানি ওরা এই ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হতে চায় না। এই ধরনের পরিস্থিতি আসলে সাধারণত অ্যাভয়েড করতে চায়। সেটাই হয়তো কারণ।’
এদিকে রিশাদের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘রিশাদও কিন্তু ভাবেনি যে, তা নয়। তবে আমার ধারণা গ্র্যাজুয়্যালি আস্তে আস্তে সবাই বোধ হয় একটু স্বাভাবিক হতে পেরেছে। নিজেদের মধ্যে আলাপ করেছে। আমাদের হেড কোচ নিজে যাচ্ছে। সবকিছুই হয়তো অন্যদেরকে মোটিভেট করেছে একটু অন্যভাবে চিন্তা করতে এবং শেষে দলের সঙ্গে যেতে।’
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নিশ্চিত করেছেন, এ সিরিজে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিবে পাকিস্তান। সবকিছু পর্যবেক্ষণে রাখতে বাংলাদেশও থেকেও নিরাপত্তা দল যাবে সেখানে। নাজমুল আবেদীন বললেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আমি গিয়েছিলাম। মনে হয় না এর চেয়ে বেশি কিছু করার সুযোগ আছে। যেরকম নিরাপত্তা তারা দেয়, তার থেকে বেশি। আমার পিসিবি সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বলেছেন, তাদের পক্ষে যতটুকু নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব দেবে। অলরেডি তো তারা যথেষ্ট সিকিউরিটি অ্যারেঞ্জমেন্ট করে।’
এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলে দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলতে আইপিএলে যোগ দিয়েছেন মোস্তাফিজ। পাকিস্তান সিরিজে তিনি আবার দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।
বুধবার সন্ধ্যায় তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলও ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ মে প্রথম টি-টোয়েন্টি মাঠে গড়াবে। ৩০ ও ১ জুন দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবে দুই দল। সবগুলো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে।