বোর্ড পরিচালকদের অনাস্থার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে গতকালকেই বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ফলে দায়িত্বে থাকার আনুষ্ঠানিক ভিত্তিটাই হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
ফারুকের জায়গায় সম্ভাব্য বোর্ড সভাপতি হিসেবে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম শোনা যাচ্ছে। তাকে আনতে সব প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু করেছে ক্রীড়া পরিষদ। সাবেক অধিনায়ককে কাউন্সিলর হিসেবে বেছে নিয়েছে। নিজের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আমিনুল ইসলাম এরই মধ্যে ক্রিকবাজের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে জানিয়েছেন, মূলত অক্টোবরে নির্ধারিত বোর্ড নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে করার লক্ষ্যে বোর্ডে যোগ দিচ্ছেন তিনি। আরও জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর বোর্ডে থাকার কোনও আগ্রহ নেই তার, ‘আমার প্রধান লক্ষ্য হলো একটি স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন এবং ভালো ক্রিকেট বোর্ড তৈরি করা। এটাই সব। আমি পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী নই।’
আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেই বোর্ডে আসার জন্য অনুরোধ করা হয় তাকে, ‘আমাকে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল, আমি তাতে রাজি হয়েছি। এখন কেবল প্রক্রিয়া অনুসরণ করার বিষয়।’
নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, ‘আমি সবসময় ক্রিকেট উন্নয়নে যুক্ত ছিলাম। আগেও বলেছি, এই ধরনের কোনও দায়িত্বে আগে কাজ করার সুযোগ পাইনি। প্রথমবারের মতো একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেয়েছি এবং না বলিনি। এটাই প্রথম বিষয়।’
‘দ্বিতীয়ত, যেহেতু সুযোগ এসেছে, আমি কাজ করবো। আপাতত আমার মনোযোগ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে। এরপর আমাকে কোনও কাজ দেওয়া হবে কি না, আমি আইসিসিতে ফিরে যাবো কি না, ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলতে পারি না। তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা আমার নেই। দীর্ঘমেয়াদে এই ভূমিকায় থাকার ইচ্ছাও নেই।’
বুলবুল অবশ্য বলেছেন তিনি যে সভাপতি পদে আসবেন, সেরকম আনুষ্ঠানিক কোনও তথ্য তিনি নিজেও জানেন না, ‘আমি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানি না ঠিক কী দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হবে। যেহেতু আমি বোর্ডের গঠনতন্ত্র পুরোপুরি জানি না, আমার মনে হয় যদি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) আমাকে কাউন্সিলর হিসেবে নিয়োগ দেয় এবং আমাকে পরিচালকের দায়িত্ব দেয়, তাহলে বিসিবির পরিচালকরাই সিদ্ধান্ত নেবেন আমাকে সভাপতি করবেন কিনা।’
বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করা আমিনুল বলেছেন, সরকার পক্ষ থেকে বোর্ডে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব পাওয়ার পর তিনি আইসিসির সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং তারা তাকে অনির্দিষ্টকালের ছুটি দিয়েছেন, ‘‘আইসিসি আমাকে বলেছে, ‘তুমি স্বাধীন। যতদিন দরকার বাংলাদেশে গিয়ে কাজ করতে পারো। যখন ইচ্ছা ফিরে আসতে পারো। তোমার জন্য দরজা সবসময় খোলা।’ আমি কৃতজ্ঞ আইসিসির প্রতি, তারা আমাকে সবুজ সংকেত দিয়েছে। যদিও আমি এখন এশিয়া অঞ্চলের একমাত্র সদস্য।’
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আমিনুল। ২০০০ সালে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে দেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে ১৪৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান হন তিনি।
১৯৮৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর আমিনুল ১৩টি টেস্ট ও ৩৯টি ওয়ানডে খেলেছেন। পরে তিনি কোচ ও ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করেন। গত দুই দশকে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এবং আইসিসির বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে কোচ হিসেবেও যুক্ত ছিলেন তিনি।