২০১৮ সালে শুরু হয়ে নাঈম হাসানের টেস্ট ক্যারিয়ারের বয়স এখন সাত বছর। চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুরু। প্রথমবার দেশের বাইরে টেস্টে বল করলেন এবং ২৫ বছর বয়সী অফস্পিনার ছাপ রাখলেন প্রথম ইনিংসে ১২১ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নিয়ে। তাতে অপ্রত্যাশিতভাবে ১০ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার গল টেস্টে অন্যরকম অভিষেক হলো নাঈমের। তৃতীয় দিন নিয়েছিলেন এক উইকেট। চতুর্থ দিন আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরলেন। নিলেন আরও চার উইকেট। লাঞ্চের পরপর শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে গেলো ৪৮৫ রানে।
শুক্রবারের খেলা শেষে নাঈম বললেন, ‘সত্যিই ভালো লাগছে। এমন একটা সুযোগ দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আমি খুশি।’
ডানহাতি এই অফস্পিনার বলেন, ‘উইকেটটা আসলে ব্যাটিং বান্ধব। আমরা চেষ্টা করেছি লম্বা সময় ধরে একটা ভালো জায়গায় বোলিং করার। যখনই রানটা আসবে না... ব্যাটাররা ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করবে। দিনশেষে ক্রিকেট তো রানের খেলা। চাপে পড়ে ব্যাটার তখন অন্য কিছু করতে গেলে ভুল কিছু করবে ওই পরিকল্পনায় বোলিং করেছি।’
একদিক থেকে এটা দেশের বাইরে নাঈমের প্রথম টেস্ট নয়। ২০১৯ সালে কলকাতায় ইডেন গার্ডেন্সে ভারতের বিপক্ষে গোলাপি বলের টেস্টের একাদশে ছিলেন তিনি। তবে ব্যাটিংয়ের সময় কনকাশনে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয়। ওই ম্যাচে বল করেননি।
বলা চলে, দেশের ক্রিকেটে নাঈমের আবির্ভাব ভুল সময়ে। অভিষেক টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৬১ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নেন। এই লম্বা সময়ে গল টেস্ট তার ক্যারিয়ারের ১৩তম। সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজকে ছাপিয়ে জায়গা হয়নি তার।
এই টেস্টেও নাঈমের সুযোগ ছিল ক্ষীণ। কিন্তু মিরাজ জ্বর নিয়ে ছিটকে যাওয়ায় তাকে একাদশে সুযোগ দেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। আকস্মিক সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগাতে ভুল করেননি নাঈম।
তবে নিজেকে দুর্ভাগা মনে করেন না এই অফস্পিনার, ‘আনলাকি (দুর্ভাগা) বলতে কিছু নাই। যা আল্লাহ রিজিকে রাখছেন তাই হবে, আলহামদুলিল্লাহ। আপনার দেখেন সবার তো ক্যারিয়ার একরকম হয় না। স্পোর্টসম্যানদের একেকজনের একেক রকম হয়। আমারটা যেরকম হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।’
বাংলাদেশ ১৮৭ রানের লিড নিয়েছে। হাতে আছে আরও সাত উইকেট। শেষ দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত আরও রান তুলতে পারলে বাংলাদেশের জেতার সুযোগ আছে মনে করেন নাঈম, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের জেতার জন্য যাওয়ার সুযোগ আছে। আমরা যদি খুব ভালো একটা টোটাল করি এবং এরপর যদি ছাড়ি...। ইনশাআল্লাহ, পঞ্চম দিনের উইকেটে অনেক কিছু হয়। জেতার সুযোগ আছে।’
ডানহাতি এই অফ স্পিনার আরও যোগ করেন, ‘দেখুন, আসলে পঞ্চম দিনে অনেক কিছু হয় উইকেটে। যদি আমরা ভালো টোটাল দিতে পারি, তখন ওরা চাপে থাকবে। যখন আপনার নরমাল ক্রিকেট খেলা এক জিনিস আর চাপে থেকে খেলা অন্য জিনিস। তখন ওদের ম্যাচ হারানোর ভয় থাকবে। তো অনেক কিছু করা সম্ভব। যদি আমরা ইনশাআল্লাহ্ ভালো টোটাল দিই, আমাদের জন্য ভালো।’