আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্লেয়িং কন্ডিশনে পরিবর্তন এনেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লে হিসাবের পদ্ধতি। এখন থেকে ইনিংস ছোট হলে পাওয়ার প্লের দৈর্ঘ্য ওভারের হিসেবে নয়, বলের হিসেবে নির্ধারিত হবে।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী প্রথম ছয় ওভার থাকে পাওয়ার প্লে। যা সাধারণত ২০ ওভারের ইনিংসের প্রায় ৩০ শতাংশ। কোনও কারণে ইনিংস ছোট হয়ে গেলে আগে এই হিসাবটি কাছাকাছি ওভারে সম্পূর্ণ ওভার হিসেবেই রাখা হতো। যা অনেক সময় বড় পার্থক্য তৈরি করতো। কিন্তু এখন সেটা নির্ধারিত হবে বলের হিসেবে। যেমন আগে ৮ ওভারের ইনিংসে থাকত ২ ওভারের পাওয়ার প্লে। ৯ ওভারে থাকতো ৩ ওভারের পাওয়ার প্লে। এখন নতুন নিয়ম অনুযায়ী ৮ ওভারের ইনিংসে পাওয়ার প্লে শেষ হবে ২.২ ওভারে, আর ৯ ওভারে তা শেষ হবে ২.৪ ওভারে। অর্থাৎ বলের হিসেবে ওভার অসম্পূর্ণ থাকছে। আগের নিয়মে সম্পূর্ণ ওভার রাখা হলেও এখন সেটা হবে না। এতে করে পাওয়ার প্লের অনুপাত ৩০ শতাংশের অনেক কাছাকাছি থাকবে।
আইসিসি সদস্যদের জানিয়েছে, ‘এটা বহু বছর ধরে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, যেখানে ওভারের মাঝখানে পাওয়ার প্লে শেষ হলেও খেলোয়াড় ও আম্পায়ারদের এতে কোনও অসুবিধা হয়নি। আইসিসির মেনস ক্রিকেট কমিটি এখন এটিকে ভবিষ্যতের জন্য পছন্দের পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করেছে।’
উদাহরণস্বরূপ, ৮ ওভারের ম্যাচে তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে পাওয়ার প্লে শেষ হলে আম্পায়ার যখন সিগন্যাল দেবেন, তখন অতিরিক্ত তিনজন ফিল্ডার সার্কেলের বাইরে চলে যেতে পারবেন।
টেস্টে স্টপ ক্লক
এছাড়া উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যে আছে টেস্টে ক্রিকেটে স্টপ ক্লক। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে গত বছর থেকে এটা চালু করে আইসিসি। এবার স্লো ওভার রেট কমাতে টেস্টেও একই ব্যবস্থা অনুসরণ করা হবে। এই পদ্ধতিতে বোলিং টিমকে তাদের পরবর্তী ওভারের প্রথম বলটি করার জন্য ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে প্রস্তুত থাকতে হবে। সেটা না করলে আম্পায়ার সতর্ক করবেন দুইবার। তৃতীয়বারও ব্যর্থ হলে তখন আম্পায়ার বোলিং টিমকে শাস্তি হিসেবে ৫ রান পেনাল্টি করবেন।
ওয়ানডে প্রতি ইনিংসে বল ২টি
ওয়ানডেতে এখন প্রতি ইনিংসে প্রথম ৩৪ ওভারে দুটি নতুন বল ব্যবহারের সুযোগ থাকবে। বাকি ওভারের ক্ষেত্রে ওই দুটি বল থেকে বেছে বোলিংয়ের সুযোগ পাবে বোলিং টিম।
ইচ্ছেকৃত শর্ট রান
এতদিন ব্যাটাররা রান নেওয়ার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে ‘শর্ট রান’ নিলে পাঁচ রান পেনাল্টি দেওয়া হতো। নতুন নিয়মে সেই পাঁচ রানের পেনাল্টির সঙ্গে এখন ফিল্ডিং টিমকে আম্পায়াররা জিজ্ঞাস করবেন তারা কোন ব্যাটসম্যানকে স্ট্রাইকে চান। তখন সেই অনুযায়ী ব্যাটসম্যান স্ট্রাইক নেবেন।
কনকাশন প্রটোকল
কনকাশন প্রোটোকলে দুটি পরিবর্তন এনেছে আইসিসি। প্রথমত, এখন থেকে প্রতিটি দলকে ম্যাচের জন্য নির্ধারিত কনকাশন বদলি খেলোয়াড় আগেই মনোনীত করতে হবে। এর ফলে হোম টিমের বাড়তি সুবিধা কমে যাবে, যারা আগে সাধারণত বড় স্কোয়াড থেকে বদলি বেছে নেওয়ার সুযোগ পেতো।
দ্বিতীয়ত, কোনও খেলোয়াড় যদি ম্যাচ চলাকালে কনকাশনে আক্রান্ত হন, তাহলে অন্তত সাত দিনের জন্য তাকে খেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। আইসিসির মেডিক্যাল অ্যাডভাইজরি কমিটি খেলোয়াড়দের সুরক্ষা ও সুস্থতার কথা বিবেচনায় এনে এই পরিবর্তনটি সুপারিশ করেছে।