X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘বাবা চাইতেন না ফুটবল খেলি, এখন বাংলাদেশ দলে নাম দেখে অনেক খুশি’

তানজীম আহমেদ
০৫ নভেম্বর ২০২৩, ২০:৩২আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ২১:৩২

ছোটবেলায় ‘ভীষণ ডানপিটে’ ছিলেন চন্দন রায়। গ্রামের মাঠে-ঘাটে দৌড়ে বেড়াতেন। বিশেষ করে ফুটবলের প্রতি ছিল আলাদা ঝোঁক। তিন মেয়ের পর একমাত্র ছেলের ফুটবলের প্রতি ঝোঁক দেখে বাবা গৌরাঙ্গ রায় কিছুটা শঙ্কিত ছিলেন। ভয়ে থাকতেন খেলার কারণে না পড়াশোনা লাটে ওঠে! তাই খেলা ছেড়ে পড়াশোনায় বেশি মনোযোগী হতে বলতেন। কিন্তু চন্দন পড়াশোনার পাশাপাশি ফুটবলকে আঁকড়ে ধরেই ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় ১৭ বছর বয়সী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এবার প্রথমবারের মতো লাল-সবুজ দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। 

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অস্ট্রেলিয়া ও লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে আজ রবিবার হাভিয়ের কাবরেরা ৩০ সদস্যের নাম ঘোষণা করেছেন। এই দলে নীলফামারী সদরের আমনগর গ্রামের চন্দনও রয়েছেন।

সপ্তম শ্রেণিতে থাকতেই ফুটবলে দিশা খুঁজে পান চন্দন। নীলফামারী জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাকাডেমিতে জায়গা করে নেন। দুই বছরের মাথায় ঢাকার বাফুফের এলিট অ্যাকাডেমিতে সুযোগ এলো। সেখান থেকে আরও দুই বছর পর এবার চন্দন শেখ রাসেলে প্রথমবার খেলে বাংলাদেশ কোচ কাবরেরার দৃষ্টিতে আটকে গেলেন।

চন্দনের পরিবার চাইছিল শুধু পড়াশোনায় মনোযোগী হতে। ফুটবলের ঝোঁকটা সেভাবে যেন না থাকে। কিন্তু চন্দন কিছুটা জোর করেই স্কুল পর্যায় থেকে দুটোই চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামের এক আন্টি বিঞ্চুপ্রিয়ার অনুপ্রেরণায় জেলা সদরের অ্যাকাডেমিতে নাম লেখানোর সুযোগটা লুফে নিয়ে সময়ের পরিক্রমায় এখন বাংলাদেশের প্রাথমিক দলে। উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষে পড়ুয়া চন্দন আজ সন্ধ্যায় এমন খবর শুনে যারপরনাই আনন্দিত। 

বাংলা ট্রিবিউনের কাছে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বাবা চাইতেন না ফুটবল খেলি। শুধু পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে বলতেন। যখন আমি ঢাকায় এলিট অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পেলাম, তখন পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যেতে শুরু করে। সবাই সাপোর্ট দিতে শুরু করে। আর এখন বাংলাদেশের প্রাথমিক দলে আমার নাম দেখে বাবা-মাসহ সবাই অনেক খুশি। আমার নিজেরও অনেক ভালো লাগছে, যা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। আসলে আমি পড়াশোনা ও খেলা দুটোই চালিয়ে যাচ্ছি।’

এবার নিলামে এলিট অ্যাকাডেমি থেকে চন্দনকে শেখ রাসেল কিনে নিয়েছে। চন্দনের এখন লক্ষ্য মূল স্কোয়াডে জায়গা করে নেওয়া। বর্তমানে মোহাম্মদ হৃদয়-দুই সোহেল রানা ও জামাল ভূঁইয়াদের সঙ্গে লড়াই করে যে কাজটি কঠিন তা ভালোই বুঝতে পারছেন চন্দন, ‘আমি জানি ওই পজিশনে আমার সব বড় ভাইরা আছেন। তবে আমি চেষ্টা করবো লড়াই করে নিজেকে প্রমাণের। যে করেই হোক মূল স্কোয়াডে ঢুকতে হবে। আমার স্বপ্ন লাল-সবুজ দলের জার্সি গায়ে মাঠে খেলার। এর জন্য আমি কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’

চন্দনের স্বাধীনতা কাপের পারফরম্যান্স দেখে বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফরাও খুশি। এর আগে খেলেছেন জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ ও ১৯ দলে। জাতীয় দলের সহকারী কোচ হাসান আল মামুন বলেছেন, ‘চন্দন হার্ড ওয়ার্কার। ওর পজিশন সেন্স ভালো। কখন কী করতে হবে তা ভালো বোঝে। সবকিছু দেখে পছন্দ হওয়ায় দলে ডাক পেয়েছে।’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেলবোর্নে ১৬ নভেম্বর খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ঢাকায় ২১ নভেম্বর লেবাননের বিপক্ষে খেলতে হবে জামালদের। ১০ নভেম্বর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে। এখন দেখার অস্ট্রেলিয়া নাকি লেবানন ম্যাচে চন্দনের লাল-সবুজ জার্সি পরে খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়!

/এফএইচএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ধর্ষণের অভিযোগ: জুজুৎসুর নিউটনসহ ২ জন রিমান্ডে
ধর্ষণের অভিযোগ: জুজুৎসুর নিউটনসহ ২ জন রিমান্ডে
ভাইরাল সেই বক্তব্যের বিষয়ে কুষ্টিয়া আ.লীগ সভাপতিকে শোকজ
ভাইরাল সেই বক্তব্যের বিষয়ে কুষ্টিয়া আ.লীগ সভাপতিকে শোকজ
ঢাকার চেয়ে আফ্রিকার ছোট শহরের বাসগুলোও সুন্দর: সড়কমন্ত্রী
ঢাকার চেয়ে আফ্রিকার ছোট শহরের বাসগুলোও সুন্দর: সড়কমন্ত্রী
৮৫ গ্রাম হেরোইন উদ্ধারের মামলায় আসামির যাবজ্জীবন
৮৫ গ্রাম হেরোইন উদ্ধারের মামলায় আসামির যাবজ্জীবন
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
‘নীরব’ থাকবেন মামুনুল, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
‘নীরব’ থাকবেন মামুনুল, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
‘অধিকার দিতে হবে না, কেড়ে না নিলেই হবে’
‘অধিকার দিতে হবে না, কেড়ে না নিলেই হবে’