বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে আবাহনীর হারের রেকর্ড বেশি। প্রিমিয়ার লিগে তো জিততেই পারেনি আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। তারওপর এবার স্থানীয় খেলোয়াড় নিয়ে মুখোমুখি হতে হয়েছে। ফল কী হয় তা ছিল দেখার। মারুফুল হকের দল দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে সুমন রেজা-মিতুল মারমার নৈপুণ্যে কিংসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আবাহনী। আর এটাই লিগে চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথম জয় ঐতিহ্যবাহী দলটির। তাতেই স্মরণীয় হয়ে থাকলো দিনটি।
লিগে আবাহনী চার ম্যাচে তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। সমান ম্যাচে কিংস দ্বিতীয় হারে আগের ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে।
শুক্রবার কুমিল্লা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আবাহনী রক্ষণ জমাট করে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছে। শেষ মিনিট পর্যন্ত কিংসের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে খেলেছে। সুযোগ যা পেয়েছে তা থেকে দারুণ এক গোল আদায় করে নিয়েছেন সুমন রেজা।
বিপরীতে বল দখলে কিংবা আক্রমণে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও কিংস গোল করার মতো সুযোগ কম পেয়েছে। দলে নাম্বার নাইনের অভাব বেশ অনুভূত হয়েছে। পেনাল্টি পেলেও মিগেলকে গোল করতে দেননি মিতুল।
ম্যাচের ২ মিনিটে আবাহনী এগিয়ে যায়। এক ডিফেন্ডার ঠিকমতো বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। শাহরিয়ার ইমন পেয়ে বাঁ দিকে এগিয়ে গিয়ে দারুণভাবে বল ভাসিয়ে দেন পোস্টের সামনে, দৌড়ে এসে সুমন দুর্দান্ত এক হেডে গোলকিপারকে পরাস্ত করে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটান। শুরুর গোলে পাওয়া লিড শেষ পর্যন্ত ধরে রেখেছে সবাই।
২৪ মিনিটে শাহরিয়ার ইমনের ক্রস জায়গামতো পড়েনি। পড়লে হয়তো গোলের সুযোগ ছিল। যার কারণে আফসোস করতে হয়েছে এই্ উ্ইঙ্গারকে।
৩৩ মিনিটে কিংস দারুণ এক সুযোগ নষ্ট করে। দুই ব্রাজিলিয়ানের প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল। মিগেলের পাসে বক্সে ঢুকে ফের্নান্দেজ গোলকিপার মিতুল মারমাকে একা পেয়ে তাড়াআড়ি প্লেসিং করতে চাইলেও তা ঠিকঠাক হয়নি। বল চলে যায় পোস্টের বাইরে। এরজন্য অবশ্য মিতুলের অবদান কম নয়। আগে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে বাঁ পা বাড়িয়ে ফের্নান্দেজের পথ কঠিন করে ফেলেন।
৩ মিনিট পর মিগেল আর একটু হলেই গোল পেতে যাচ্ছিলেন। বক্সের বাইরে থেকে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের শট গোলকিপার ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করে দলকে বাঁচান।
যোগ করা সময়ে ইব্রাহিমের ফাউলকে কেন্দ্র করে অন্য পাশে মিগেলের সঙ্গে আবাহনীর খেলোয়াড়রা ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। তবে তা বেশিদূর গড়াতে পারেনি। রেফারি দুইদলের একজনকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে দেন।
বিরতির পর একই ধারায় খেলা চলে। ৫২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল শোধ দিতে পারেনি কিংস। মোহাম্মদ হৃদয়ের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বেজে উঠে। স্পটকিক থেকে মিগেলের শট মিতুল বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে আটকে দিয়ে জয়ের অন্যতম নায়ক বনে যান।
৬২ মিনিটে আবাহনীর এক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেন শ্রাবণ। বক্সে বল আসতেই দৌড়ে এসে প্রতিপক্ষের একজন শট নেওয়ার আগেই ক্লিয়ার করে দলকে বাঁচান।
৮৫ মিনিটে কিংসের জনির শট মিতুল তালুবন্দি করেন। রেফারির শেষ বাঁজি বাজতেই আবাহনী শিবিরে উল্লাস। বিদেশি ছাড়া ম্যাচ জিতে আবাহনী সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আরও রসদ পেলো।