৬৭ মিনিটে বাংলাদেশ এক গোল শোধ দেয়। গর্জনে ফেটে পড়ে পুরো স্টেডিয়াম। হামজার থ্রুপাস ধরে বক্সের প্রান্ত থেকে রাকিব হোসেনের প্লেসিংয়ে বল গোলকিপারের পায়ে লেগে আস্তে আস্তে জালে আশ্রয় নেয়।
৭৩ মিনিটে বাংলাদেশের আরও দুই পরিবর্তন। আক্রমণে আরও জোর দেন কাবরেরা। শেখ মোরসালিন ও আল আমিন নামেন। হৃদয় ও তপু উঠে যান।
একটু পর হামজার ফ্রি কিক সিঙ্গাপুর ক্লিয়ার করে। শেখ মোরসালিনের প্রচেষ্টাও সফল হয়নি।
৭৯ মিনিটে শাহরিয়ার ইমনের শট সোজা চলে যায় গোলকিপারের হাতে।
এরপর সিরিজ কর্নার। চতুর্থবারের চেষ্টায় হামজার কর্নারে তপুর হেড এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করেন।
যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ মুহুর্মুহু আক্রমণ করেও সফলতা পায়নি। শেষ মুহূর্তে হামজার শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। এরই সঙ্গে আক্ষেপও বাড়ে।
দ্বিতীয়বার জাল কাঁপালো সিঙ্গাপুর
৫৮ মিনিটে সিঙ্গাপুর আবারও এগিয়ে যায়। বক্সের বাইরে থেকে হামিন শায়িনের জোরালো শট মিতুল মারমা ঠিকঠাক প্রতিহত করতে পারেননি। বল পড়ে সামনে থাকা ইকসান ফান্ডির কাছে। তার বুদ্ধিদ্বীপ্ত শট হৃদয়ের ফাঁক গলে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়।
এসময় মিতুল পা বাড়ালেও কিছু করতে পারেননি। ওই সময়ে ফাহামিদুলের জায়গায় নামেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।
একটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে বাংলাদেশ
বিরতির পর বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন আসে। সৈয়দ কাজেম শাহের জায়গায় নামেন শাহরিয়ার ইমন।
৪৮ মিনিটে রাকিবের ক্রসে শাহরিয়ার ইমন বলের নাগাল পাননি।
এক গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে বাংলাদেশ
গোলশূন্য থেকে বিরতিতে যাওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু প্রথমার্ধে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে তারা গোল হজম করেছে। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে হাফটাইমে সিঙ্গাপুর।
ম্যাচের আগে জেফার ও মোজা গান গেয়ে মাতিয়ে রাখেন। খেলার বিরতিতে হয় লেজার শো। স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট বন্ধ। এসময় গ্যালারিতে সব মোবাইল ফোনের লাইট জ্বল উঠে। কয়েক মিনিটের লেজার শো হয়।
বাংলাদেশকে গোল দিলো সিঙ্গাপুর
৪৫ মিনিটে বাংলাদেশ পেছনে পড়ে গেলো। গ্যালারির গর্জন থামিয়ে উল্লাসে মাতে সিঙ্গাপুর।
হারিসের শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল উঁচুতে উঠে যায়, মিতুল মারমা পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ক্লিয়ার করেন। তবে তা ঠিকঠাক হয়নি। হ্যারিসের ক্রসে উই ইয়াং সাইড ভলিতে জাল কাঁপান।
যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ সমতায় ফেরার সুযোগ হারায়। শমিতের কর্নারে তপু দৌড়ে এসে হেড নিলেও তা গোলবার ঘেষে যায়।
হামজার ফ্রি কিক আশা জাগিয়েছিল
৩৫ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে হামজা চৌধুরীর শট অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।
৩৯ মিনিটে হৃদয়ের দারুণ এক পাস থেকে ফাহামিদুল বক্সের প্রান্তে এক ডিফেন্ডারকে ডজ দিয়ে লক্ষ্যে শট নিলেও তা আরেক ডিফেন্ডার ব্লক করেন।
চোট পেলেন তারিক, পরে মাঠে ফিরলেন
২৮ মিনিটে প্রতিপক্ষের একজনের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে তারিক কাজী চোটে পড়েন। তবে আশার কথা একটু পরই খেলতে নামেন এই ডিফেন্ডার।
দুই মিনিট পর সিঙ্গাপুরের ফান্ডির শট ঝাঁপিয়ে আটকান মিতুল মারমা।
একটু পর কয়েকজনের মাঝ দিয়ে শমিত সোমের বুদ্ধিদ্বীপ্ত রক্ষণচেড়া পাসে বলের গতি একটু বেশি থাকায় রাকিব কিছু করতে পারেননি। গোলকিপার দৌড়ে এসে তালুতে নেন।
গোলের খোঁজে বাংলাদেশ
১৫ মিনিটে বাংলাদেশের শাকিল আহাদ তপুর ক্রসে রাকিব হোসেনের আলতো প্লেসিং এক ডিফেন্ডারের পা হয়ে গোলকিপারের হাতে। পরের মিনিটে সিঙ্গাপুর সুযোগ পায়। সতীর্থের ক্রসে ইকসান ফান্ডির জোরালো হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট।
গোলের প্রথম সুযোগ সিঙ্গাপুরের
বাংলাদেশের দাপটের মুখে প্রথম আক্রমণটা কিন্তু সিঙ্গাপুরের। ৯ মিনিটে হ্যারিস হারুনের লম্বা থ্রো-ইন থেকে জটলার মধ্যে কেউ ক্লিয়ার করতে পারেননি। দ্বিতীয় পোস্টের পাসে সং উই ইয়াং পা ছোঁয়ালেও লক্ষ্যভ্রষ্ট।
মাঠে তপুর হাতে নিখোঁজ তামিমের ছবি!
২২ দিন ধরে নিখোঁজ থাকা রাজবাড়ী পাংশার স্কুল ছাত্র আব্দুল্লাহ তামিমের ছবি নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন তপু বর্মণ। জামাল ভূঁইয়া না থাকায় তপুর হাতে অধিনায়কের দায়িত্ব।
হামজা-ফাহামিদুল আছেন, শমিতের অভিষেক, বেঞ্চে জামাল
আগের ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলে ছিলেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। আজ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে প্রথম একাদশে নেই এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। তবে জাতীয় দলের হয়ে এদিন অভিষেক হচ্ছে কানাডিয়ান লিগে খেলা মিডফিল্ডার শমিত সোমের।
ভুটান ম্যাচ থেকে এসেছে আরও দুই পরিবর্তন। মিডফিল্ডে জায়গা হয়নি ভুটান ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে গোল করা সোহেল রানার। তার জায়গায় সেরা একাদশে মোহাম্মদ হৃদয়কে রেখেছেন হাভিয়ের কাবরেরা। রক্ষণেও এসেছে পরিবর্তন, লেফটব্যাক তাজ উদ্দিনের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন শাকিল আহাদ তপু। সম্ভাব্য ৪-২-৩-১ ছকে খেলাবেন কাবরেরা।
২৩ সদস্যদের চূড়ান্ত স্কোয়াড থেকে তিন জন নেই। ইসা ফয়সাল, মজিবর রহমান জনি ও মোহাম্মদ ইব্রাহিমের জায়গা হয়নি।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান। দলের সবার চোখ এখন শীর্ষে জায়গা করে মূল পর্বে পা দেওয়া। সিঙ্গাপুরের ম্যাচে তাই জয় ছাড়া বিকল্প কী আছে। কাবরেরা অবশ্য কালকের ম্যাচের মধ্যে থাকতে চাইলেন, ‘আবারও বলছি প্রস্তুতি ভালো। গেম প্ল্যানও ভালো আমাদের। তবে আমাদের ফুটবলের লেভেলটা আরও উন্নতি করতে হবে। সেই চেষ্টা করছি। ভারতের সঙ্গে আমরা যেমন ভয়ডরহীন ফুটবল খেলেছি, সেটা খেলবো। আমাদের অবশ্যই সেরাটা খেলতে হবে। অন্য কোনও বিকল্প নেই। আশা করি ভালো খেলবো। আমাদের ৩ পয়েন্ট পেতেই হবে।’
সিঙ্গাপুর ঢাকায় আসার আগে মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলে এসেছে। সেই ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছে তারা। ম্যাচটা দেখেছেন কাবরেরা। তার মূল্যায়ন, ‘ওই ম্যাচ দেখেছি। আমাদের সামর্থ্য আছে আক্রমণ ভাগে ভালো করা, মাঝমাঠে ভালো। ভালো ট্রেনিং হয়েছে। আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলবো। দলে যারা আছে, ওদের যে কোয়ালিটি তাতে আস্থা আছে। তবে এটা সত্যি, সিঙ্গাপুর অবশ্যই কঠিন দল।’
বাংলাদেশের একাদশ: মিতুল মারমা, তারিক কাজী, তপু বর্মণ, সাদ উদ্দিন, শাকিল আহাদ তপু, হামজা চৌধুরী, শমিত সোম, মোহাম্মদ হৃদয়, সৈয়দ কাজেম শাহ কিরমানি, ফাহামিদুল ইসলাম ও রাকিব হোসেন।
