গত ডিসেম্বরে ঢাকায় প্রথমবারের মতো এশিয়ান চ্যা্ম্পিয়নস ট্রফি হকির বড় টুর্নামেন্ট হয়েছে। স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়ার শীর্ষ চারটি দেশ অংশ নেয়। পাঁচ দলের মধ্যে স্বাগতিকরা হয় পঞ্চম। প্রথমবারের মতো এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন খরচ করেছে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। বড় অঙ্কের ব্যয়ের বিপরীতে আয় মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। বাকি টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে হকি ফেডারেশনের গলদঘর্ম অবস্থা! ফেডারেশনের এককালীন স্থায়ী আমানতে (এফডিআর) গচ্ছিত প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা থেকে দেনা শোধ করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।
এমনিতে টুর্নামেন্টের স্বত্ব কেনা হয়েছিল ৮০ হাজার ডলারে। এছাড়া এশিয়ান হকি ফেডারেশনের ১৯ কর্মকর্তার আসা-যাওয়া ও পাঁচ তারকা হোটেলে থাকা-খাওয়ার ব্যয়ও কম নয়, প্রায় কোটিখানেক টাকা। সব মিলিয়ে বড় অঙ্ক অর্থ ব্যয় হয়েছে। অথচ টুর্নামেন্ট আয়োজনের আগে হকি ফেডারেশন জানতো টাইটেল স্পন্সর কিংবা টিভি স্বত্ব থেকে কোনও টাকা পাবে না তারা। সবই নেবে এশিয়ান হকি ফেডারেশন। শুধু বলেকয়ে জাতীয় দলের স্পন্সর বাবদ ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আয় করতে পেরেছিল ফেডারেশন।
এখন বড় অঙ্কের দেনা নিয়ে বিপাকে পড়েছে হকি ফেডারেশন। করোনায় আক্রান্ত ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ আজ (সোমবার) বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আমি আসার আগেই (তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাইদের সময়) এই টুর্নামেন্ট আয়োজন নিয়ে লিখিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আমরা ইচ্ছা করলেও তা বাতিল করতে পারিনি। চুক্তি বাতিল করলে আমাদের আন্তর্জাতিক হকি থেকে সাসপেন্ড করা হতো। তখনই বোঝা উচিত ছিল আমরা এই টুর্নামেন্ট থেকে কী পেতে পারি। এখন লাখ লাখ টাকা দেনার মধ্যে আছে ফেডারেশন।’
কোটি টাকার দেনা শোধে স্থায়ী আমানত ভাঙার চিন্তা-ভাবনা চলছে। ইউসুফ বলছেন, ‘কী করবো এখন! এফডিআর থেকে টাকা শোধ দেওয়ার চিন্তা চলছে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সভা আছে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া কী করার আছে।’
সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘এশিয়ান হকি ফেডারেশন তো আমাদের জাতীয় দলের স্পন্সরও নিতে দেয়নি। অনেক কষ্টে নিতে পেরেছিলাম বলে কোটি টাকার বেশি আয় হয়েছে। তা না হলে আরও ক্ষতি হয়ে যেতো। এখন দেনা তো শোধ করতে হবে। স্থায়ী আমানত তো করা হয়েছিল হকির জন্যই। সেখান থেকে শোধ করা হলে প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আবারও আমানত বাড়ানো হবে। এছাড়া উপায় কী?’