X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১
তৈরি হচ্ছে ই-কমার্স পরিচালনার গাইডলাইন

অগ্রিম টাকা দিলে ১০ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে

হিটলার এ. হালিম
১৯ জানুয়ারি ২০২১, ১১:০০আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ১১:০০

দেশে ই-কমার্সের (যা ডিজিটাল কমার্স নামেও পরিচিত) বড় উত্থান হয়েছে। পুরনো বড় বড় কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি আসছে নতুন নতুন সব প্রতিষ্ঠান। দিন দিন প্রবৃদ্ধি হচ্ছে এ খাতের। দেশে ই-কমার্সের জন্য নীতিমালা থাকলেও ছিল না ই-কমার্স পরিচালনার জন্য কোনও নির্দেশিকা বা গাইডলাইন। ফলে ই-কমার্স কেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। বিরাজমান এসব সমস্যা দূর করতে উদ্যোগী হয়েছে নীতিনির্ধারকরা। তৈরি করা হচ্ছে ই-কমার্স পরিচালনার গাইডলাইন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা-২০২০ (সংশোধিত)’-এর আওতায় তৈরি হচ্ছে ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা’ বা গাইডলাইন। এই নির্দেশিকা প্রণয়ন করা গেলে ই-কমার্সে আস্থা ফিরবে ক্রেতাদের-এমনটাই মনে করছেন ই-কমার্স খাত সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, খসড়া ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,ক্রেতাকে পণ্যের স্টক, করসহ এ জাতীয় সব তথ্য জানাতে হবে। খসড়া নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, ক্রেতা পণ্যের দাম পরিশোধ করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরবরাহকারী বা কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের কাছে পৌঁছাতে হবে এবং এ তথ্য ক্রেতাকে এসএমএস করে জানাতে হবে।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে,ক্রেতা পণ্যের জন্য অগ্রিম টাকা পরিশোধ করলে ৫ দিন (একই শহরের মধ্যে হলে) থেকে ১০ দিনের (ভিন্ন শহর) মধ্যে পণ্য পৌঁছাতে হবে ই-কমার্সকে। আর ক্যাশ-অন ডেলিভারি বা আংশিক ক্যাশ-অন ডেলিভারির ক্ষেত্রে একই শহরে ৭ দিন এবং অন্য শহরে হলে ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করতে হবে।

নির্দেশিকায় যে সময় নির্ধারিত থাকবে তার মধ্যে পণ্য সরবরাহ করতে না পারলে ক্রেতারা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে মামলা করতে পারবেন। অন্যদিকে ক্রেতার অভিযোগ জানানোর জন্য জন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো যোগাযোগের উপায় বিভিন্নভাবে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ক্রেতাদের অভিযোগ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সমাধানের ব্যবস্থা নিতে হবে ই-কমার্সকে।

খসড়া নির্দেশিকায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো যে গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য (নাম, ঠিকানা, বয়স, এলাকা, ফোন নম্বর ইত্যাদি) নেয়—সেগুলো নেওয়ার আগে ক্রেতার অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া কোনও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ভার্চুয়াল ওয়ালেট তৈরি করতে পারবে না।

জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ই-কমার্সে আসল আইন হলো নীতিমালা। ওটাকে ভিত্তি করে গাইডলাইন বা নির্দেশিকা তৈরি করার কথা। খসড়া নীতিমালা এখনও হাতে পাইনি। হাতে পেলে দেখে আমরা মতামত দেবো। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, যে নির্দেশিকা হবে তাতে ডাক বিভাগের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। বিশেষ করে পরিবহন সেক্টরে। ডাক বিভাগের সারাদেশে পরিবহনের যে বড় নেটওয়ার্ক তা আর কারও নেই। এটা একটা মেজর সেক্টর ই-কমার্সের জন্য। তিনি উল্লেখ করেন,ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগেরই রয়েছে মোবাইল আর্থিক সেবা নগদ। ফলে ডাক বিভাগকে এতে সম্পৃক্ত করা গেলে ই-কমার্স খাতের জন্য তা কল্যাণকর হবে। সারাদেশে দ্রুত সময়ের মধ্যে পণ্য পৌঁছানো সহজ হবে।    

বেসিসের সাবেক সভাপতি ও ই-কমার্স আজকেরডিলের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-কমার্স অপারেশন গাইডলাইন করতে যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে স্বাগত জানাই। এটি এখন সময়ের দাবি। এখানে অনলাইন ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার্থে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, কোনও ক্রেতা যদি অগ্রিম মূল্য প্রদান করে তাহলে ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে। না হলে জরিমানা হবে। এটি একটি প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। এতে অনলাইনের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা বাড়াবে।

তিনি আরও বলেন, এই গাইডলাইনে ছোট উদ্যোক্তা—যারা বড় বড় মার্কেটপ্লেসে পণ্য সরবরাহ করে তাদের জন্যও কিছু নীতিমালা করা দরকার যাতে তাদের টাকা বা পণ্য বড় মার্কেটপ্লেসগুলো অনেক দিন ধরে আটকে রাখতে না পারে। এছাড়া এই নীতিমালার মাধ্যমে যাতে স্থানীয় উৎপাদকরা তাদের পণ্য অনলাইনে বিক্রি করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

এ বিষয়ে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব)সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, খসড়া নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি একটা এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর) প্রণয়নের জন্য। এ নিয়ে অনেক কথা হবে, অনেক কিছুই হবে যা সব পক্ষের জন্যই ইতিবাচক।

অনলাইন শপ সেলেক্সট্রা ডট কম ডট বিডির প্রধান নির্বাহী চৌধুরী ফাহরিয়ার এ প্রসঙ্গে বলেন, ই-কমার্সে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাইটে ক্রেতা ধরে রাখা। ক্রেতাদের আস্থা ফেরানো গেলে তাদের ধরে রাখা যাবে। খসড়া গাইড লাইন সম্পর্কে যেটুকু জেনেছি তাতে করে ই-কমার্সগুলো যাতে ক্রেতা ধরে রাখতে পারে তেমন অনেক উদ্যোগ রয়েছে। ক্রেতাবান্ধব এসব উদ্যোগ এই শিল্পকে টেকসই করবে।

/এমআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ