X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষকের মান

শান্তনু চৌধুরী
২৩ আগস্ট ২০১৮, ১৪:২৭আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০১৮, ১৪:৩১

শান্তনু চৌধুরী তখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ি। সেই সময় আমাদের এক শিক্ষকের ছেলে থাকতেন বিদেশে। ছেলেকে চিঠি পাঠানোর প্রয়োজন হলেই তিনি আমাকে ডেকে চিঠি লেখাতেন। তখনকার সময়ে নিজেকে বেশ সৌভাগ্যবান মনে হলেও এখন ভাবি, সুন্দর করে চিঠি লেখার মতো জ্ঞান যার ছিল না, তিনি কীভাবে আমাদের পড়িয়েছেন। এই কথাটি অবতারণা করার কারণ সাম্প্রতিক এক গবেষণা। এ ধরনের গবেষণা অবশ্য নিকট অতীতে আরও হয়েছে এবং একই সঙ্গে আমাদের শিক্ষার মান তথা শিক্ষকদের পড়ানোর মান নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পুনর্মূষিক ভব! পাঠ্যবইয়ে লেখা সিএলটু। রাসায়নিক নাম ক্লোরিন। আর শিক্ষক পড়াচ্ছেন সিওয়ানটু। অষ্টম শ্রেণিতে বিজ্ঞানের পাঠ নিতে এমন ভুল শেখাচ্ছিলেন ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কোনটির স্থিতিস্থাপকতা বেশি। লোহা না রাবারের? এ প্রশ্নে একজন শিক্ষকের প্রথমবারের উত্তর, লোহা। পরক্ষণেই বললেন, ‘না না, লোহা নয়; রাবারেই স্থিতিস্থাপকতা  বেশি।’ বিজ্ঞান শিক্ষকদের নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান না থাকার এ তথ্য পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। যদিও এসব শিক্ষকের অনেকেই ১২ বছরের বেশি সময় ধরে অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান করছেন, বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়ে কোনও জ্ঞান ছাড়াই। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে নন-সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত বিজ্ঞান শিক্ষার প্রকৃতি ও প্রভাব বিষয়ে জানতে এ গবেষণা চালায় জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এসএম হাফিজুর রহমান এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। গবেষণায় আরও উঠে আসে, শিক্ষক নিজেই অনেক বিষয়ে সুষ্পষ্ট ধারণা না রেখেও ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াচ্ছেন। আবার কিছু বিষয়ে শিক্ষকরা নিজেরাই ভুলের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া, পাঠদান পদ্ধতিও ঠিকমতো অনুসরণ করা হচ্ছে না বিদ্যালয়গুলোতে। কেনো এমনটি হচ্ছে? প্রতিবেদনটি উপস্থাপনের সময় এর কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে বিষয়ভিত্তিক পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষক না থাকা।

দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর বড় অংশই এমপিওভুক্ত। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী, একটি বিদ্যালয়ে গণিত ও বিজ্ঞান মিলিয়ে সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষক থাকেন দুজন। আর ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত গণিত, উচ্চতর গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও রসায়ন মিলে ১৮টি ক্লাস রয়েছে। দুজন শিক্ষকের পক্ষে সবগুলো ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। তাই বিদ্যালয়গুলোয় নন-সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষক দিয়ে বিজ্ঞানের ক্লাস নিতে হয়। এবার যদি আমরা আবারও গবেষণা প্রতিবেদনটি দেখি, সেখানে বলা হচ্ছে— সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের বিজ্ঞান শিক্ষকদের ৪৫ শতাংশ ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাস নেন, অর্থাৎ এ শ্রেণিতে বিজ্ঞান ক্লাস নেওয়া ৫৫ শতাংশ শিক্ষকই নন-সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের। একইভাবে সপ্তম শ্রেণিতে ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ ও অষ্টম শ্রেণিতে ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ বিজ্ঞান শিক্ষকই নন-সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের। এমনকি নবম শ্রেণির ৯ দশমিক ৮ ও দশম শ্রেণির ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ বিজ্ঞান শিক্ষকই নন-সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের। যদিও নবম-দশম শ্রেণিতে রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে ক্লাস নিতে হয় তাদের। এতে করে শিক্ষকদের ওপর চাপ পড়ে বেশি। এর কারণ আমাদের ব্যবস্থার গোড়াতেই গলদ রয়ে গেছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে মানের এই ক্রমাবনতি এক অন্ধকার ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত দেয়। এই পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে যেমন শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানোর জরুরি, তেমনি শিক্ষকদের কার্যকরী প্রশিক্ষণের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। আসলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার যে গলদ সেটা শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে এসে এর প্রভাব পড়ে। মহানগর আর জেলা সদরগুলোর নামকরা কিছু স্কুল-কলেজের শিক্ষক বা ছাত্রছাত্রীদের মান বিবেচনায় নিয়ে পুরো দেশের মান হিসাব করা যাবে না। ওপরে যে গবেষণা প্রতিবেদনটি বলা হয়েছে সামগ্রিক অর্থে সেটি কিন্তু পুরো দেশেরই চিত্র। আমরা বলি দেশ উন্নয়নের সড়কে উঠে গেছে। উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। কিন্তু সামগ্রিক অর্থে উন্নত মনে হয় ওই সড়কই। তাও ঈদযাত্রা এলে বোঝা যায় কতটা ভোগান্তির খানা খন্দে ভরা। এখানে সেখানে জোড়াতালি। আমাদের শিক্ষা, গবেষণা, সেবামূলক খাত, মজুরি, কর্মপরিবেশ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কোনও উন্নয়ন কিন্তু সাধারণের চোখে পড়ে না। অথচ শিক্ষার মান উন্নয়ন তখনই হবে যখন গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা বা শিক্ষকের মান উন্নত হবে। পাঠদান উন্নত হবে। শুধুমাত্র স্বাক্ষর করতে পেরেই শিক্ষিতের কাতারে উঠে যাওয়ার দিন বোধহয় শেষ। দেশের শিক্ষার মান, শিক্ষাদান প্রক্রিয়া, শিক্ষাবিস্তার কৌশল, শিক্ষা অবকাঠামো ও বরাদ্দ সত্যিকারভাবে যদি আন্তর্জাতিক মানে না পৌঁছায়, তবে উন্নয়ন শুধু গলার আওয়াজেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

পরবর্তী আলোচনায় যাওয়ার আগে একটা কৌতূক বলে নেই। স্কুলে  পরিদর্শক জানতে চাইলেন: সোমনাথ মন্দির কে ভেঙেছে?

ক্লাস ক্যাপ্টেন: স্যার, আমি ভাঙিনি।

পরিদর্শক এবার রেগে গেলেন। তিনি ক্লাসের সবাইকে বললেন,

পরিদর্শক: কেউ কি বলতে পারো সোমনাথ মন্দির কে ভেঙেছে?

পাশে ইতিহাসের শিক্ষক ছিলেন। তিনি বললেন, ‘স্যার, এরা একটু দুষ্টু হতে পারে, কিন্তু এরা কেউ সোমনাথ মন্দির ভাঙেনি। পরিদর্শক এবার অবাক হয়ে গেলেন। পরে প্রধান শিক্ষককে বললেন, ‘আপনাদের স্কুলের শিক্ষকরা ভালো না। এরা কেউ বলতে পারছেন না যে সোমনাথ মন্দির কে  ভেঙেছে।’

প্রধান শিক্ষক: ‘এদের সবাইকে এত করে বলি ছাত্রদের ওপর ভালো করে নজর রাখতে, তারপরও এরা জানে না সোমনাথ মন্দির কে ভেঙেছে।’ প্রাইমারি বা মাধ্যমিক পর্যায়ে বেশিরভাগ শিক্ষকের বিশেষ করে গ্রাম পর্যায়ে অবস্থা আসলেই তথৈবচঃ। জাতিসংঘ শিক্ষদের মান বা শিক্ষা দেওয়ার এই সংকটকে তুলনা করেছে ‘শিক্ষণ সংকট’ হিসেবে। ইউনেস্কো ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটিসটিকসের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বের প্রতি ১০ জন স্কুলশিশুর মধ্যে ছয়জন কার্যত কিছুই শিখছে না। ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাতশ’ কোটি মানুষের এই পৃথিবীতে ৬০ কোটির বেশি স্কুলপড়ুয়া শিশু সাধারণ গাণিতিক সমস্যার সমাধান, এমনকি ঠিকমতো পড়তে পাড়ার দক্ষতাও অর্জন করতে পারছে না। ওই প্রতিবেদনে কিন্তু বাংলাদেশের নামও রয়েছে। যাদের মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশের ক্ষেত্রেও তারতম্য দেখতে পেয়েছেন গবেষকরা। সবকিছুর মূলে ঘাটতি রয়েছে শিক্ষাদানের মানে। গবেষকরা বলছেন, যারা স্কুলে পড়াচ্ছেন, তারা সবাই মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত নন। শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা পাচ্ছে কিনা— তা দেখার ব্যবস্থা নেই। আমাদের দেশে জনসংখ্যার চাপের কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুপাতের হারটাও বেশি। সেটিও মানসম্মত শিক্ষা বা শিক্ষকের পাঠদানের মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত ২০১১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবেই বেড়ে চলেছে। সেই বছর ৩০ জন ছাত্রের জন্য যেখানে একজন শিক্ষক ছিলেন, সেখানে ২০১৬ সালে ৪২ জন ছাত্রের জন্য একজন শিক্ষক। এর সঙ্গে শিক্ষার গুণগত মানের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। সরকার মুখে শিক্ষার মান বাড়ানোর কথা বললেও বাস্তবে বাড়ছে বলে মনে হয় না। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এই যে অনুপাত ঢাকার বাইরে বা মফস্বলে একজন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও  অনেক বেশি। ফলে ক্লাসে সব ছাত্রের প্রতি মনোযোগ দেওয়া একজন শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব না এবং সব ছাত্রের কাছে ক্লাস লেকচার পৌঁছায়ও না। এর ফলে যেটি হচ্ছে কার্যত কোচিং ব্যবস্থা বন্ধের কথা বললেও সেটি বন্ধ হওয়ার কোনও কারণ দেখা যাচ্ছে না। কারণ, শিক্ষকরাও এখন দলবাজির পাশাপাশি শিক্ষার মহান ব্রত ভুলে টাকা আয়ের দিকেই বেশি মনযোগী। সে কারণে শুরুতে বিজ্ঞান শিক্ষার যে দৈন্যদশার কথা বলেছিলাম, সেটি আরও বেশি ফুটে উঠেছ। কারণ, এখন দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীকেই গণিত বিষয়ের জন্য শ্রেণিকক্ষের বাইরে প্রাইভেট টিউশন বা কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই শিক্ষকরাও বিজ্ঞানের চেয়ে নিজেকে গণিতের শিক্ষক হিসেবে পরিচিত করতে চান বেশি। এতে টাকা আয় সহজ হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) এক পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছিল ৪০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষক সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র তৈরি করতে পারেন না। সম্প্রতি মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের হার কিছুটা বাড়লেও ২৯ শতাংশ শিক্ষক প্রশিক্ষণের বাইরে রয়ে গেছেন। পরীক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তন হলেও সে ব্যাপারে শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ নেই। আর প্রশিক্ষণের মানের প্রশ্নতো রয়েছেই। এসব থেকে উত্তরণের পথ— আমাদের দেশে গবেষণাকে আরও বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। আমাদের দেশে সবচেয়ে কম ব্যয় হয় গবেষণার ক্ষেত্রে। পরিচিতজন যারা বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা করছেন, তারাই বলছেন গবেষণা যে একটি বিষয় হতে পারে, সেটিই ভাবতে পারেন না এদেশের অনেকেই। আমরা ছুটছি কোচিং এর পেছনে, ছুটছি জিপিএ ফাইভ এর পেছনে। জিপিএ-৫ এর পেছনে না দৌড়ে শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলতে গেলে প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষকও। শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধাবী হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের দায়িত্ব নিতে হবে এবং সচেতনতা বাড়াতে হবে। ভালো শিক্ষক এখন বিরল। আর আমাদের সর্বনাশের মূলে মুখস্থ-বিদ্যা। জানার জন্য যে পড়া সেটি পড়তে কেউ আগ্রহ জোগাচ্ছে না। পরীক্ষার্থীর কাজ হয়ে পড়েছে প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় উগলে দেওয়া অথবা তা শিক্ষকদের কাছ থেকে ছেঁকে নেওয়া। পরীক্ষার চাপ না কমিয়ে বা পাঠ্যবইয়ে আবদ্ধ রেখে প্রকৃত শিক্ষার্থী গড়ে তোলা সম্ভব নয়। শিক্ষার বাণিজ্যিকিকরণ শিক্ষার গুণগত মানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষকরা গেমিং এডুকেশন পদ্ধতিতে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। আমাদের দেশেও কয়েকটি তেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো যতোই বাড়ে ততোই মঙ্গল। সম্প্রতি শিক্ষার জাতীয় প্রমিতমান নির্ধারণে দেশের শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা হিসেবে ‘জাতীয় শিক্ষক শিক্ষা কাউন্সিল’ গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে ৮ আগস্ট আইনের খসড়া প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষা কার্যক্রমের জাতীয় প্রমিতমান (ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড) নিশ্চিত করবে এ কাউন্সিল। এটি ভালো উদ্যোগ, তবে শুধু আইনে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। প্রয়োগেও সচেষ্ট থাকতে হবে। আমাদের দেশে অধিকাংশ উদ্যোগ ভেস্তে যায় শুধু প্রায়োগিক সীমাবদ্ধতার কারণে। জাতিকে বাঁচাতে শিক্ষার গুণগত মান উৎকর্ষে শিক্ষকদের মান বাড়ানোর উদ্যোগটি যেন ভেস্তে না যায়। এত সীমাবদ্ধতার পরও বর্হিবিশ্বে আমাদের অর্জন কম নয়। কিন্তু আফসোসের বিষয়, দেশের ব্যাংকগুলো থেকে লুটপাট হচ্ছে, নানা উন্নয়নের নামে লুটপাট হচ্ছে। অথচ দেশের শিক্ষা, গবেষণা বা জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রয়োজনে অর্থ খরচ সামান্যই। একটা দেশে এমনি এমনি মেধাবী তৈরি হয় না। সেটার জন্য প্রয়োজন পরিচর্যা। যেটা আমরা করি না। কিন্তু চীন বা ভারত তাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করেছে। আর আমরা যদি পরিচর্যা করতাম, শিক্ষার বা শিক্ষাদাতাদের মানোন্নয়ন ঘটাতাম তবে ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে ১৬ হাজার জগৎ সেরা মেধাবী বেরিয়ে আসতেন।

লেখক: সাংবাদিক ও সাহিত্যিক

 

 

/এপিএইচ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ