X
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২

মাচাইনের যোদ্ধা আলাল মাঝি

মতিউর রহমান, মানিকগঞ্জ
২৮ ডিসেম্বর ২০১৫, ১৭:৩৬আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫, ১৭:৫০

মুক্তিযোদ্ধা আলাল কাজী

একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদারদের রুখতে হাতে ছিল অস্ত্র আর গোলাবারুদ। জীবন বাজি রেখে শত্রুর কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার স্বপ্ন ছিল চোখে। সেদিনের অস্ত্রযুদ্ধে শত্রুরা পরাস্ত হলেও জীবনযুদ্ধে আলাল কাজী নিজেই আজ পরাজয়ের গ্লানি বহন করছেন। মাচাইনের এই বীর গত দুই যুগ মাচাইন বাজারে ঝাড়ুদারের কাজ করে কাটিয়েছেন। বাড়ি তার মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামে।

মাহফুজ কোম্পানির অধীনে থেকে যুদ্ধ করেছেন একাত্তরের ছাব্বিশ বছরের তরুণ আলাল কাজী।  গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন শিবালয় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার রেজাউর রহমান খান জানু। যুদ্ধের সময় মূলত মাঝি হয়ে যোদ্ধাদের নিয়ে শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া আসা করেছেন। পরিস্থিতি বুঝে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছেন। মাচাইন বাজারের যুদ্ধে সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের হটাতে এক বন্দুকযুদ্ধে অংশ নেন। তার জবানেই শোনা যাক সেই গল্প।

‘হরিরামপুর উপজেলার ইব্রাহিমপুরে তখন সবাই। কনকনে শীতের রাত। যোদ্ধারা বললো, আজ নৌকা জোরে চালাতে হবে। পদ্মা পাড়ি দিয়ে যেতে হবে ইছামতির পারে, শিবালয় উপজেলার আরুয়ায়। গায়ে তখন পাতলা একটা জামা, হাতে বৈঠা। রাত নয়টায় রওয়ানা দিয়ে এক হাতে বৈঠা বেয়ে ভোর থাকতেই পৌছনো গেলো। হালকা নাশতার সুযোগ ছিল। এরপরই যুদ্ধ। মাচাইন বাজারে পাক সেনাদের ঠেকাতে হবে। সহযোদ্ধাদের নিয়ে প্রায় দুই ঘন্টা টানা বন্দুকযুদ্ধ চললো। দুই পাকিস্তানি সেনা মারা গিয়েছিল আমার গুলিতে।’

সনদপত্র হাতে আলাল কাজী

তিন ছেলের বাবা আলাল কাজী। দুই ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। বড় ছেলে ওমর কাজী পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ফেরিতে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। ছোট ছেলে লিটন কাজী বাস্তা বাজারে এক মুদি দোকানের কর্মচারী। ব্যতিক্রম মেজো ছেলে। মেজো মেহের কাজী মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। বিষয় অর্থনীতি। আলাল কাজী জানালেন, নিজের চেষ্টায় ও এলাকাবাসীর সহায়তায় এ পর্যন্ত এসেছে  মেহের।

আলাল কাজী জানান, স্বাধীনতার পরে যুদ্ধে অবদানের জন্য মুক্তিযদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্নেল আতাউল গনি ওসমানীর স্বাক্ষরিত সনদ তাকে দেওয়া হয়। একই সনদ পান বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা জালাল কাজীও। মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সনদ দুটি পুড়িয়ে ফেলতে বাধ্য হন তারা। পরে শিবালয় উপজেলার তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আলাল কাজী ঢাকা দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ডেপুটি এরিয়া কমান্ডার ও ২ নং সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত এরিয়া কমান্ডার প্রিন্সিপাল আ. রউফ খানের স্বাক্ষরযুক্ত সনদ পান।

টানা দুই যুগ মঙ্গল ও শুক্র এই ‍দুই হাটবারে মাচাইন বাজার ঝাঁট দিয়েছেন আলাল কাজী। সম্প্রতি বার্ধক্যজনিত কারণে ইস্তফা দিয়েছেন কাজে। সরকারি ভাতায় এখন খুঁড়িয়ে সংসার চলছে।

/এইচকে/

সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (৭ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (৭ জুলাই, ২০২৫)
মধ্যরাতে সংবর্ধনায় বিশ্বকাপ স্বপ্নের কথা বললেন ঋতুপর্ণা ও আফঈদারা 
মধ্যরাতে সংবর্ধনায় বিশ্বকাপ স্বপ্নের কথা বললেন ঋতুপর্ণা ও আফঈদারা 
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদ জয় করবো: নাহিদ ইসলাম
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদ জয় করবো: নাহিদ ইসলাম
একটি দলের কারণে ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা আটকে যাচ্ছে: আখতার
একটি দলের কারণে ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা আটকে যাচ্ছে: আখতার
সর্বাধিক পঠিত
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক 
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক 
ফার্মেসিতে ওষুধের আড়ালে ‘ট্যাপেন্টাডল’ বিক্রির অভিযোগ, আটক ৫
ফার্মেসিতে ওষুধের আড়ালে ‘ট্যাপেন্টাডল’ বিক্রির অভিযোগ, আটক ৫
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
সেই ব্যাংক কর্মকর্তার খোঁজ মিলেছে
সেই ব্যাংক কর্মকর্তার খোঁজ মিলেছে