সিঙ্গাপুরের এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী এক বিদেশি গৃহকর্মীকে না খেতে দেওয়া, নির্যাতন এবং তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। ২০১৬ সালে মারা যাওয়ার সময় মিয়ানমারের ওই গৃহকর্মীর ওজন নেমে আসে মাত্র ২৪ কেজিতে। প্রসিকিউটররা বলছেন, গাইয়াথিরি মুরুগান নামের ওই নারী যে কাজ করেছেন তা দানবীয় এবং চূড়ান্ত নির্মমতা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সম্পদশালী নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরে বিগত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি গৃহকর্মী নিপীড়নের ঘটনা সামনে এসেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিয়ানমারের এই গৃহকর্মীকে হত্যার ঘটনা। মানবাধিকার গ্রুপগুলো বেশ কিছু দিন ধরেই দেশটিতে গৃহকর্মীদের সঙ্গে করা আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
গত মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের একটি আদালত পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী গাইয়াথিরি মুরুগান তার বিরুদ্ধে আনা ২৮টি অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে তার।
আদালতে জানানো হয় মিয়ানমারের নাগরিক পিয়াং নিগাহ ডন ২০১৫ সালে গাইয়াথিরির বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। প্রথমবারের মতো বিদেশে কাজ করতে আসা এই নারীর ওপর ওই বছরের অক্টোবর থেকে নিপীড়ন চালাতে থাকেন গৃহকর্ত্রী গাইয়াথিরি। তার বিরুদ্ধে ধীর গতি, অপরিচ্ছন্ন এবং বেশি খাওয়ার অভিযোগ তুলে নিপীড়ন শুরু হয়।
এছাড়া আদালতে জানানো হয় প্রায়ই ওই গৃহকর্মীকে স্লাইস করা পাউরুটি পানিতে চুবিয়ে খেতে দেওয়া হতো। এছাড়া ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার ও বাসি ভাত দেওয়া হতো। ১৪ মাসের মধ্যে প্রায় ১৫ কেজি ওজন কমে যায় ওই গৃহকর্মীর।
২০১৬ সালের জুলাইতে মারা যান ওই গৃহকর্মী। ময়নাতদন্তে দেখা যায়, পানিতে চুবিয়ে রাখার কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেন না পৌঁছানোয় মৃত্যু হয় তার।