যখন বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ নিজেদের অধিকাংশ জনগণকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সময়ের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছে তখন হিমালয়ের ছোট্ট দেশ ভুটান রেকর্ড গড়েছে। অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে দেশটির পরিচয় না থাকলেও ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে এরই মধ্যে নিজেদের ৬০ শতাংশ জনগণকে প্রথম ডোজ দিয়েছে।
অবাক করার মতো বিষয় হলো, ভুটানে দুই ডোজের ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু হয়েছে মাত্র ১১ দিন আগে। দেশটি ভারতের উপহার দেওয়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে। বুধবার পর্যন্ত ৭ লাখ ৭০ হাজার জনসংখ্যার দেশটি ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষকে প্রথম ডোজ দিয়েছে। শতকরা হিসেবে যা ৬১ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ।
বৌদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী বানর বর্ষে জন্ম নেন ৩০ বছরের নারী নিন্দা ডেমা। ২৭ মার্চ তিনি দেশটির প্রথম নাগরিক হিসেবে ভ্যাকসিন নেন। রাজধানী থিম্পুর একটি স্কুলে স্থাপিত ভ্যাকসিন কেন্দ্রে তিনি তা গ্রহণ করেন।
ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়ে নিন্দা ডেমা বলেন, আমার এই ছোট পদক্ষেপ দেশের সব মানুষকে এই রোগ থেকে মুক্তিতে সহযোগিতা করুক।
আর মাত্র ৯ দিনে ভুটান এমন রেকর্ড অর্জন করেছে যা এখনও অনেক দেশ পারেনি।
২৭ মার্চ যখন দেশটির ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু হয় তখন দেশটি এক সপ্তাহের মধ্যে অর্ধেক জনগণ (৫ লাখ)-কে তা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
এই রেকর্ড অর্জনের ফলে ইসরায়েলকে পেছনে ফেলে দিয়েছে ভুটান। ইসরায়েল ফাইজার-বায়োএনটেকের দুটি ভ্যাকসিন ডোজ অর্ধেকের বেশি মানুষকে দিয়েছে।
ভুটানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৯৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে মাত্র এক জনের। দ্রুত পরীক্ষা ও নজরদারি ও সীমান্ত বন্ধের মাধ্যমে সংক্রমণের গতি মন্থর করতে পেরেছে।
জানুয়ারিতে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দেড় লাখ ডোজ পেয়েছে। ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করার জন্য আরও ৪ লাখ ডোজের অপেক্ষায় ছিল কর্তৃপক্ষ। আর তা পাওয়ার পরই ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করে দেশটি।
নান্দনিক প্রকৃতির দেশটি বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় নিজেদের অবস্থানের জন্য পরিচিত। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস