রাজধানীর মহাখালীতে ময়না মিয়া নামে এক ব্যক্তির বস্তাবন্দি হাত, পা, মাথা ও কাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমা খাতুন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রবিবার (৬ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ-উর-রহমানের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আসামি ফাতেমা খাতুনকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন। এরপর আসামি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মে ফাতেমাকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ময়না মিয়াকে হত্যার ঘটনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়াসরিন বনানী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারের ডিবির কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, ‘দাম্পত্য কলহের জেরে ময়নাকে পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ায় তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমা। এ সময় ময়না মিয়ার সঙ্গে ফাতেমার ধস্তাধস্তি হয়। আবারও পানি চাইলে ঘুমের ওষুধ মেশানো পানি খাওয়ানো হয় তাকে।’
তিনি বলেন, ‘লাশ পাওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই আমরা এ ঘটনার রহস্য উম্মোচন করতে সক্ষম হই। অভিযুক্ত প্রথম স্ত্রীকে আমরা গ্রেফতার করি। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সব ঘটনা এবং দায় স্বীকার করেছেন। এরইমধ্যে ময়না মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা এ ঘটনার চার্জশিট দাখিল করবো।’
সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘স্বামী ময়না মিয়াকে যেন খুঁজে না পাওয়া যায়, সেজন্য গুম করার উদ্দেশ্যে তার হাত-পা ও মাথা কাটা হয়। এ কাজটি করেন ফাতেমা নিজেই। হাত-পা ও মাথা কাটার পর তিনি নিজেই বিভিন্ন জায়গায় সেগুলো ফেলে দেন। শরীরের অংশ (দেহ) মহাখালী কাঁচা বাজারের পাশে মসজিদ গলিতে পাশে ফেলা হয়। দুই হাত ও দুই পা মহাখালী বাস টার্মিনালে ফেলেন। আর মাথাটি পরবর্তীতে পলিথিনে করে বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পাশে ফেলে দেন ফাতেমা।’