ভারতে তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বাংলাদেশে নারী পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা হয়। মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি আইনের এই মামলায় আসামি মেহেদি হাসান ও মহিউদ্দিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৯ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আরেক আসামি আবদুল কাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তিন আসামিকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন। এরপর আসামি মেহেদী ও মহিউদ্দিন স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। অপরদিকে আসামি আবদুল কাদেরকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত আসামিদের প্রত্যেকের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, পাচার হওয়ার পর ৭৭ দিনের নির্যাতন ও বন্দিদশা থেকে সম্প্রতি পালিয়ে দেশে ফিরে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন এক তরুণী। মামলায় মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়। তারা হলো— রিফাদুল ইসলাম হৃদয়, আনিস, আবদুল কাদের, মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন, হারুন, বকুল ওরফে ছোট খোকন, সবুজ, রুবেল ওরফে রাহুল, সোনিয়া, আকিল ও ডালিম।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতে চার-পাঁচ জন যুবক মিলে এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে পৈশাচিকভাবে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালায়। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা ভাইরাল হয়। এরপর ভারতের পুলিশ ওই যুবকদের গ্রেফতার করে। পুলিশ জানতে পারে যে, ভুক্তভোগী ওই তরুণী এবং তার নির্যাতনকারীরা সবাই বাংলাদেশি। ভারতীয় পুলিশ বিষয়টি বাংলাদেশের পুলিশকে জানায়।
এরপর এ ঘটনা তদন্তে নামে বাংলাদেশের পুলিশ। পরে তারা ভিডিওটির একজনের সঙ্গে বাংলাদেশি একটি ছেলের ছবির মিল খুঁজে পায়। পুলিশ নিশ্চিত হয়, নির্যাতনকারী ওই যুবকের নাম রিফাতুল ইসলাম হৃদয়। সে রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। রিফাতুল ইসলাম হৃদয়ের পরিচয় তার মা ও মামার কাছ থেকে শনাক্ত করা হয়। এলাকায় সে টিকটক হৃদয় নামে পরিচিত। তার পরিবারের সদস্যরা জানায়, চার মাস আগে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাকে। এ ঘটনায় পুলিশ উল্লিখিত তিন আসামিকে গ্রেফতার করে।