X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহই এখন মূল লক্ষ্য’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১২ জুন ২০২১, ১৬:২৪আপডেট : ১২ জুন ২০২১, ১৬:২৪

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহই টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হয়েছে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী শনিবার (১২ জুন) এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের টেকসই উন্নয়ন ও বাজেট ২০২১-২২ বাজেট’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন।

এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন’র সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম, এনবি আর’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ–নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সাবেক প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম খান ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আব্দুস সালেক সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহর একা ৪৬ ভাগ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। বিদ্যুৎ ব্যবহার সুষম করতে হলে দেশের অন্যান্য বড় শহরগুলোতে নির্দিষ্ট স্থানে দ্রুত শিল্পায়ন করা প্রয়োজন। নির্দিষ্ট স্থানে শিল্প-কারখানা স্থাপিত হলে সিস্টেম লস কমবে। উন্নত দেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসছে। বাংলাদেশও জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে পর্যালোচনা করছে। আগামীতে গ্যাস বা বিদ্যুৎ আমদানিতে অপরচুনিটি কস্ট খোঁজা হবে।

তিনি আরও বলেন, মানব সম্পদ উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কাজে পেশাদারিত্ব না থাকলে দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব না।

মূল প্রবন্ধে মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ খাতে বঙ্গবন্ধুর অবদান বলে শেষ করা যাবে না। তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তার কন্যা সেটিই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। সবার জন্য বিদ্যুতের লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিকল্পনা করা হয়েছে সাসটেইনেবল এনার্জি কীভাবে পাবো, সেটাই এখন মূল আলোচনার বিষয়। সরবরাহ মান উন্নত করা নিয়ে আমরা কাজ করছি। ৯৯.৫ ভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ দিয়েছি। আগে আমরা এক ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করতাম। এখন আমরা মিক্স ফুয়েল দিয়ে কাজ করছি। পাশের দেশ থেকে বিদ্যুৎ আনছি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের ১৪ হাজার মেগাওয়াটের মতো চাহিদা রয়েছে। তাও এখন শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ দিয়ে আমাদের কিছু সমস্যা রয়েছে। সিস্টেম লস সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এসেছে। গ্রিড সাবস্টেশন ২৬ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতা আছে কিন্তু সব জায়গায় বিদ্যুৎ দেওয়া যাচ্ছে না। এইখানে আমরা মনোযোগ দিচ্ছি। ২০২৪ সাল নাগাদ এই সমস্যা কাটিয়ে উঠবো আশা করি।

তিনি প্রাথমিক জ্বালানির সহজ লভ্যতা, নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, ভূমির প্রাপ্যতা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, সক্ষমতার সদ্ব্যবহার, অফ-গ্রিড অঞ্চলে বিদ্যুতায়ন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবস্থাপনার অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে তার উপস্থাপনায় উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, এবার বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের ৯৮ প্রকল্প ছিল, ২৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৭০ ভাগ শেষ করেছি, জুনের শেষ সবটা ব্যবহার করতে পারবো বলে আশা করছি। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে ৭৫টি প্রকল্প নিয়েছি।

সালেক সুফি বলেন, দেশের গ্যাসের প্রতি আমাদের নজির দেওয়া দরকার। আমরা বিদ্যুৎ রফতানির বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারি। আন্ডারগ্রাউন্ড নিয়ে গেলে কিন্তু ফাইবার অপটিক দিয়ে সাসটেইনেবল করতে হবে। জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন নিয়ে নতুন করে চিন্তা করা যেতে পারে।

ঢাকা চেম্বারের আবুল কাসেম খান বলেন, আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাস থাকবে না ভবিষ্যতে। বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। অনশোর অফশোর অনুসন্ধান এবারে বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কয়লার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জলবায়ু ইস্যু নিয়ে আসছি। অথচ বিশ্ব কয়লা দিয়ে যারা দূষণের প্রথম দিকে কাজ করছে তাদের তালিকার আশপাশেও নেই বাংলাদেশ। ফলে কয়লা দিয়ে ভাবা উচিত।

ড. আহসান মনসুর বলেন, আমাদের তুলনায় ভারত, নেপালের মাথাপিছু জ্বালানি ব্যবহার বেশি। আমরা তো এখন অনেক এগিয়ে তাহলে এইখানে আমরা কেন পিছিয়ে। তাদের আয় কম হলেও মাথাপিছু জ্বালানি ব্যবহার বেশি কীভাবে হয়। যদিও বিশ্ব এখন কয়লা থেকে সরে আসছে। তারপরও এখনপি কয়লা থেলে সরে আসার দরকার নেই বরং এর পাশাপাশি সোলার পাওয়ারকে গুরুত্ব দেওয়া, আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করার বিষয়টিও আমাদের ভাবতে হবে।

ড. আব্দুল মজিদ বলেন, চলমান প্রকল্পগুলোতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ যাচ্ছে ঠিক কিন্তু তা যাচ্ছে সোলার, আইপিএস, জেনারেটর দিয়ে। গ্রিডের বিদ্যুৎ কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন থাকছে না। সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

ম. তামিম বলেন, আমরা আগামী কয়েক বছর কয়লা ব্যবহার করতে পারবো। কিন্তু তাই বলে বিকল্প চিন্তা করতে হবে। এখনো কার্বন আমাদের ভূমিকা না থাকলেও যে আমাদের কয়লাই ব্যবহার করতে হবে সেটা ভাবার কোনও কারণ নেই। তাই এমন জ্বালানিই ব্যবহার করতে হবে যা পরিবেশবান্ধবও হবে।

সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান বলেন, গভীর সাগর থেকে পাইপলাইনে গ্যাস তুলে আনার চেয়ে এলএনজি আমদানি করা অনেক কম খরচ ও ঝুঁকিও কম। সোলারের ক্ষেত্রে জমি সংকট এবং বায়ু বিদ্যুৎ’র ক্ষেত্রে বাতাসের গতি একটা বড় বিষয়। আর কোনও নিশ্চয়তা বাংলাদেশে নেই। এই কারণে মিশ্র জ্বালানিতে আমাদের যেতেই হবে। এলএনজি, সিএনজির ব্যবহার বাড়াতে হবে। সঙ্গে এফিশিয়েন্সি বাড়াতে হবে, অপচয় কমাতে হবে।

 

/এসএনএস/এনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
দিল্লিকে ভয় ধরিয়ে হারলো গুজরাট
দিল্লিকে ভয় ধরিয়ে হারলো গুজরাট
ডিইউজে নির্বাচনে সভাপতি পদের মীমাংসা মামলার শুনানি ২৫ এপ্রিল
ডিইউজে নির্বাচনে সভাপতি পদের মীমাংসা মামলার শুনানি ২৫ এপ্রিল
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী