জেনেভায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সংবাদ সম্মেলনে ওই বৈঠকের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জেনেভার ১৮ শতকের গ্র্যান্ড ভিলায় অনুষ্ঠিত দুই নেতার বৈঠককে গঠনমূলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। জো বাইডেনকে আখ্যায়িত করেছেন একজন অভিজ্ঞ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে। তবে এই বৈঠক দুই নেতার মধ্যে বিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করেছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে আপাত দার্শনিক হয়ে উঠেন তিনি। আশ্রয় নেন রুশ সাহিত্যের।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, “লিও টলস্টয় একবার বলেছিলেন, ‘জীবনে সুখ নেই — শুধু এর ঝলক আছে।’ আমি মনে করি যে, এই পরিস্থিতিতে কোনও ধরনের ফ্যামিলি ট্রাস্ট থাকতে পারে না। তবে আমার মতে, আমরা এর কিছুটা ঝলক দেখেছি।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পুতিন স্বীকার করেন, বৈঠকে বাইডেন মানবাধিকারের বিষয়টি তুলেছেন। রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনির পরিণতি এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মস্কোর আচরণ নিয়েও কথা বলেছেন বাইডেন।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদক পুতিনের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘আপনার সব রাজনৈতিক বিরোধীকে যদি হত্যা করা হয়, কারাগারে পাঠানো হয়, বিষপ্রয়োগ করা হয়... তাতে কি এমন বার্তা যায় না যে আপনি রাজনৈতিক লড়াই চান না?’ এই প্রশ্নের জবাবে নিজেকে সামলে নিয়ে পুতিন গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কথা মনে করিয়ে দেন। সেদিন উগ্র ট্রাম্প সমর্থকরা ভবনটিতে ঢুকে রক্তাক্ত তাণ্ডব চালায়। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নিজেদের সীমানার মধ্যে এই ধরনের বিশৃঙ্খলা রাশিয়া দেখতে চায় না।’
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘মানুষ দাঙ্গা করছে আর রাজনৈতিক দাবি নিয়ে কংগ্রেসে ঢুকে পড়ছে। তাদের ২০-২৫ বছরের জেল দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে যা ঘটেছে তার জন্য আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। কিন্তু এটা রাশিয়ায় ঘটুক তা আমরা চাই না।’ বন্দুক সহিংসতা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘দেশে যা কিছুই ঘটুক না কেন, একভাবে না একভাবে তার দায় নেতাদের, আমেরিকার রাস্তার দিকে তাকান, প্রতিদিনই সেখানে হত্যাকাণ্ড ঘটছে। মুখ খোলারও সুযোগ পাওয়ার আগে গুলি করে খুন করা হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার চর্চা নিয়েও এদিন কথা বলেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সিআইএ-র গোপন কারাগার রয়েছে। আর সেখানে মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে। এভাবে মানবাধিকারের সুরক্ষা দেওয়ার সঙ্গে কেউ কি একমত পোষণ করবে?’ সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স।