রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্প এলাকায় সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং বর্তমানে সেখানে থাকা দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁগুলো আগামী ৬০ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করার বিষয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বুধবার (৩০ জুন) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক-আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনাসহ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমাম হাছান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।
একইসঙ্গে আদালত তার রায়ে প্রকল্পটিকে পাবলিক ট্রাস্ট প্রপার্টি ঘোষণা করেছেন। আদালত বলেছেন, ‘আমাদের ফুসফুস হিসেবে খ্যাত প্রকল্পটি সুরক্ষা করা একান্ত অপরিহার্য।’
আদালত এ বিষয়ে কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনাতে প্রকল্প এলাকায় হোটেল, রেস্তোরাঁসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রকল্পটির সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠন করতে বলা হয়েছে। পুরো প্রকল্পের স্থায়ী পরামর্শক হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডকে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। পুরো প্রকল্প এলাকায় জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য মাটির নিচে ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করতে এবং পুরো প্রকল্প এলাকায় নির্ধারিত দূরত্বে বিনা মূল্যে জনসাধারণের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে।
এছাড়াও হাইকোর্ট পুরো প্রকল্প এলাকার লেক মাছের অভয়ারণ্য ঘোষণার নির্দেশ দিয়েছেন। লেকের পানিতে কোনও ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং প্রকল্পজুড়ে হাঁটার জন্য, সাইকেল চালানো ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক লেন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্প এলাকায় লে আউট প্ল্যানের নির্দেশনার বাইরে কতিপয় অবৈধ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চললেও রাজউক নিষ্ক্রিয় থাকার বিষয়ে ২০১৮ সালে ১ আগস্ট গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটের ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে রায় ঘোষণা করলেন হাইকোর্ট।