আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, গুলি ও ককটেল বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাত ১০টায় উপজেলার চরএলাহি বাজার থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে ইউনিয়নের চরএলাহি গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে। এতে সাত জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে আহত সাত জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ চরএলাহি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গনি সমর্থিতরা হলো, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হেলাল মেম্বারের ছেলে মো. রুবেল (২৫), মৃত আব্দুল খালেক মেম্বারের ছেলে বাহার উদ্দিন (৩৬), সিরাজ আলমের ছেলে সবুজ (৩৮), জইধর মিয়ার ছেলে ইউসুফ (৩৩), মো. বেলালের ছেলে ফিরোজ (২৪) ও জামাল উদ্দিনের ছেলে ইলিয়াছ (২২)। এছাড়া, আব্দুর রাজ্জাক সমর্থিত আহতরা হলো, মহরম আলী চেয়াম্যানের ছেলে রিয়াদুল ইসলাম রাজু (২৮), মো. সামছুল হকের ছেলে আবদুর রহিম (২০) ও গোলাপ মাওলার ছেলে মো. রানা (২০)। এরা সবাই চরএলাহি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
চরএলাহি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ছোটভাই বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী এবং চরএলাহি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গনি ও চরএলাহি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থকদের মধ্যে রাজনৈতিক কোন্দলের জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় আওয়ামী লীগ নেতা গনির অনুসারীরা প্রথমে চরএলাহি বাজারে ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের কয়েকজন অনুসারীকে মারধর করে ও বাজারে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে, রাজ্জাক চেয়ারম্যানের অনুসারীরা সংঘবব্ধ হয়ে গনির অনুসারীদের ওপর পাল্টা হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলি ও ককটেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে।
আওয়ামী লীগ নেতা গনি অনুসারী চরএলাহি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হেলাল হোসেন অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, তার ভাই খোকন, জব্বর, শাহীন ও কালামের নেতৃত্বে আমার বাড়িসহ আরও তিনটি বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা গুলি করলে, আমাদের সাত জন গুলিবিদ্ধ হয়।
তবে চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের ভাই আব্দুল আজিজ খোকন দাবি করেন, ভাই রাজ্জাক চেয়ারম্যান এলাকায় নেই। এই হামলার সঙ্গে আমি এবং আমাদের কোনও অনুসারী জড়িত নন। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গনির নির্দেশে তার ভাই কামাল, বেলাল, নবী ও হেলাল মেম্বার প্রথমে চরএলাহি বাজারে ককটেল হামলা চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে, আমাদের কয়েকজন অনুসারীকে মারধর করে। তারা আমাদের অনুসারী ধনুর বাড়িতে এবং আরও কয়েকটা বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। এতে আমাদের তিন জন আহত হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ৬/৭ জন আহত হওয়ার খবর শুনেছি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
