X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউনেও পোশাক কারখানা খোলা রাখতে চান মালিকেরা

গোলাম মওলা
১৫ জুলাই ২০২১, ১২:০০আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২১, ১২:০০

যত কঠোর লকডাউন দেওয়া হোক না কেন গার্মেন্টস কারখানা যেন খোলা রাখা হয়‑ এমন সিদ্ধান্তের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা। এরই অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গার্মেন্টস কারখানা খোলা রাখার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে আবেদন করছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।

এরই মধ্যে সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন তৈরি পোশাক খাতের মালিকরা। আজ দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে এ নিয়ে শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে বুধবার (১৪ জুলাই) রাতে বিজিএমইএর গুলশান অফিসে জরুরি বৈঠক করেছেন তারা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে করেই হোক লকডাউনে রফতানিমুখী কারখানা খোলা রাখতে হবে। বৈঠকে সব ব্যবসায়ী এক সুরে বলেছেন, কারখানা বন্ধ হলে

ব্যবসা হারানোর পাশাপাশি বহুমুখী সংকটে পড়বে তৈরি পোশাকশিল্প।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন রফতানিমুখী শিল্প মালিকরা। দুপুর ৩টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে থাকবেন সংগঠনটির সাবেক নেতারাও।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ দিন সব ধরনের শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সরকারের এই নির্দেশনায় রফতানিমুখী শিল্পকারখানা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই তারা ঈদের পর সরকার ঘোষিত লকডাউনে পোশাক খাত খোলা রাখতে সর্বাত্মক তদবির চালাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, এক কথায় গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হলে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকরা গ্রামে-গঞ্জে ফিরে যাবে, দেখা যাবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ফিরছে। তিনি বলেন, করোনার প্রকোপ রোধে শ্রমিকদের বাঁচাতে হলে কারখানা খোলা রাখতে হবে। তারা কাজে থাকলে অযথা ঘোরাফেরা করবেন না। ফলে তারা করোনা থেকে মুক্ত থাকবেন।

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা বসে ছিলাম। সেখানে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন ও রফতানিমুখী সব সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সেখানে আলোচনা হয়েছে কারখানা বন্ধ হলে রফতানি খাতে কি ধরনের প্রভাব পড়বে, শ্রমিকদের উপর কি ধরনের প্রভাব পড়বে, করোনা সংক্রমণে কি ধরনের প্রভাব পড়বে। আর কঠোর লকডাউনের মধ্যে কারখানা খোলা রাখলে কি কি সুবিধা হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ব্যাপারে একটি আবেদন দিবো।

 মোহাম্মদ হাতেম বলেন, কারখানা দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকলে অনেকেই দেউলিয়া হয়ে যাবেন। কারণ, মহামারিতে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর আবার ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ এসেছে। প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে।  কারখানা বন্ধ থাকলে সবকিছুই হুমকিতে পড়ে যাবে। এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, করোনার কারণে গত এক-দেড় বছর পর বায়ারদের ক্রয়াদেশ আসতে শুরু করেছে। ফলে রফতানিমুখী এই খাত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এ মুহূর্তে কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন ক্রেতার কাছ থেকে ক্রয়াদেশ হাতছাড়া হয়ে যাবে। তিনি বলছেন, দুই সপ্তাহ ছুটি পেলে পোশাকশ্রমিকেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামে ছুটবেন। তাতে উত্তরবঙ্গসহ দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়বে। দেখা যাবে, তারা ফিরে এসে এক সপ্তাহ কাজ না করেই বেতন চাইবে। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে অনেকেই বেতন দিতে পারবে না। অন্যদিকে জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস প্রায় প্রতিদিনই প্রচুর পরিমাণ শীতের পোশাক রফতানি হয়। দুই সপ্তাহ কারখানা বন্ধ থাকলে ক্রয়াদেশ অনুযায়ী লিড টাইম মেনে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে না কারখানাগুলো। তখন বিদেশি ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিল করবে বা মূল্যছাড়ের সুবিধা নেবে। উড়োজাহাজে পাঠাতে হলেও বিপুল লোকসান গুনতে হবে। আবার আগামী বসন্ত ও গ্রীষ্মের ক্রয়াদেশ আসার গতিও কমে যাবে। অনেক ক্রেতা ক্রয়াদেশ অন্য দেশে সরিয়ে নেবে।

প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে গত এপ্রিলে সরকার বিধিনিষেধ দিলেও রফতানিমুখী পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা উৎপাদন চালানোর সুযোগ পায়। সর্বশেষ গত ২৮ জুন শুরু হওয়া সীমিত আকারের ও পরে ১ জুলাই থেকে চলমান কঠোর বিধিনিষেধেও পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা চালু থাকে।

/জিএম/এমএস/
সম্পর্কিত
প্রথমবার লকডাউন চীনের বাণিজ্যিক শহর সাংহাই
প্রথমবারের মতো লকডাউনে কিরিবাতি
একজনের ওমিক্রন শনাক্তের পর পুরো বিল্ডিং লকডাউন
সর্বশেষ খবর
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা প্যাকেজ পাস
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা প্যাকেজ পাস
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে প্রাণ গেলো একজনের, আহত ১০
এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে প্রাণ গেলো একজনের, আহত ১০
বেসিস নির্বাচনে ১১ পদে প্রার্থী ৩৩ জন
বেসিস নির্বাচনে ১১ পদে প্রার্থী ৩৩ জন
সিঙ্গাপুরে রডচাপায় বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
সিঙ্গাপুরে রডচাপায় বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক