X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাসপাতালে ২৭ ঘণ্টা চিকিৎসা না পেয়ে সাংবাদিকের মায়ের মৃত্যু

রংপুর প্রতিনিধি
২৪ জুলাই ২০২১, ১৩:৪৭আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২১, ১৩:৫৫

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির ২৭ ঘণ্টার মধ্যে কোনও চিকিৎসক দেখতে না আসায় এবং যথা সময়ে অক্সিজেন সরবরাহ না করায় আয়েশা ছিদ্দিকা নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তিনি দীপ্ত টেলিভিশনের রংপুর প্রতিনিধি বাবলুর রহমান বারীর মা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করেছেন তিনি।

বাবলুর রহমানের অভিযোগ, ঈদের দিন সকাল থেকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন আয়েশা ছিদ্দিকা। তার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিলো। স্থানীয় চিকিৎসকরা দ্রুত অক্সিজেন দেওয়ার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। বিকাল ৩টার দিকে  মাকে নিয়ে রংপুর মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে আসেন বাবলুর। এরপর তাকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় দুই নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। 

তিনি বলেন, এ সময় একবার একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক এসে তাদেরকে বলেন, জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন দিতে হবে। এরপর অক্সিজেনের জন্য ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স ও ওয়ার্ডবয়সহ অনেকের কাছে ছোটাছুটি করে আকুতি জানান বাবলুর রহমান। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। এদিকে তার মায়ের শ্বাসকষ্ট তখন তীব্র। কোনও উপায় না পেয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার মোবাইল ফোনে অন্তত ২০ বার ডায়াল করেন তিনি। কিন্তু পরিচালককে পাওয়া যায়নি। পরে অক্সিজেনের দায়িত্বে থাকা বাবু নামে এক কর্মকর্তার কাছে ছুটে যান বাবলুর রহমান। 

অবশেষে পাঁচ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে তার মাকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। তখন তার মায়ের অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে। এ সময় ওই ওয়ার্ডের একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাড়া আর কোনও চিকিৎসক ছিলেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

তিনি জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মায়ের অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে এক ঘণ্টা পর হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। কর্তব্যরত নার্স আইসিইউতে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন। এ সময় দায়িত্বরত নার্স বলেন, অনেক দেরি করে ফেলেছেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে আয়েশা ছিদ্দিকার মৃত্যু হয়।

বাবলুর রহমান বলেন, উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসা কেন্দ্র রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যদি অক্সিজেন না থাকে তাহলে মুমূর্ষু রোগীরা চিকিৎসা পাবে কীভাবে? সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আকুতি-মিনতি করার পাঁচ ঘণ্টা পর অক্সিজেন পেয়েছি। ততক্ষণে আমার মায়ের যা হওয়ার হয়ে গেছে। এরপর আইসিইউতে আনা শুধু সান্ত্বনা আর কিছুই ছিল না। 

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের পরিচালকের মোবাইল ফোনে অন্তত ২০ বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। দীর্ঘ ২৭ ঘণ্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ার সময় পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক দেখতে আসেননি। শুধু চিকিৎসকের অবহেলা আর যথা সময়ে অক্সিজেন দিতে না পারায় মা মারা গেছেন বলে অভিযোগ করে বিচার দাবি করেন সাংবাদিক বাবলুর রহমান।

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, কোনও সাংবাদিক তাকে ফোন করেছে বলে মনে নেই। তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কোনও দায়িত্বহীনতা থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
চিকিৎসক ছাড়াই রক্ত ট্রান্সফিউশনের সময় হাজির ম্যাজিস্ট্রেট
হাসপাতালের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৮ নির্দেশনা
সর্বশেষ খবর
ডুবে যাওয়া জাহাজের ১১ নাবিক উদ্ধার, সবার আগে লাফ দেওয়া মাস্টার নিখোঁজ
ডুবে যাওয়া জাহাজের ১১ নাবিক উদ্ধার, সবার আগে লাফ দেওয়া মাস্টার নিখোঁজ
জাকার্তায় সোনা জিতে বাংলাদেশ পুলিশের ভানরুমের চমক
জাকার্তায় সোনা জিতে বাংলাদেশ পুলিশের ভানরুমের চমক
রাব্বির ব্যাটে শাইনপুকুরকে হারালো শেখ জামাল
রাব্বির ব্যাটে শাইনপুকুরকে হারালো শেখ জামাল
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা