X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় মোট মৃত্যুর ২৫ ভাগই জুলাইতে!

সাদ্দিফ অভি
২৯ জুলাই ২০২১, ১১:০০আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ১৯:৫৩

দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২০ হাজার ১৬ জন। এদিকে জুলাই মাস শেষ হয়নি এখনও। তার আগেই এ মাসে মৃত্যু ছাড়িয়েছে সাড়ে ৫ হাজার। যা কিনা এযাবৎকালের মোট মৃত্যুর শতকরা ২৫ ভাগ।

এর আগে এক মাসে এত মৃত্যু দেখেনি বাংলাদেশ। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে করোনায় মারা গেছে ৭ হাজার ৫৫৯ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় (২৭-২৮ জুলাই) মারা গেছেন ২৩৭ জন। এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মারা গেছেন ২৫৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। সেই সময় মার্চে পাঁচ জন মারা গিয়েছিলেন। এরপর এপ্রিলে ১৬৩ জন, মে’তে ৪৮২ জন, জুনে এক হাজার ১৯৭ জন, জুলাইতে এক হাজার ২৬৪ জন, আগস্টে এক হাজার ১৭০ জন, সেপ্টেম্বরে ৯৭০ জন, অক্টোবরে ৬৭২ জন, নভেম্বরে ৭২১ জন এবং ডিসেম্বরে ৯১৫ জন মারা যান।

এই বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১২ হাজার ৪৫৭ জন। এরমধ্যে জানুয়ারিতে ৫৬৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২৮১ জন, মার্চে ৬৩৮ জন, এপ্রিলে দুই হাজার ২০৪ জন, মে’তে এক হাজার ১৬৯ জন, জুনে এক হাজার ৮৮৪ জন মারা যান। শুধু জুলাইতেই মারা গেছেন ৫ হাজার ৫১৩ জন।

গত বছরের মে থেকে মৃত্যুর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। জুনের একদিনে ৬৪ জন মারা যান। এটি ছিল গত বছরের একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০-এর মধ্যেই থাকতো। অক্টোবরে মৃত্যুর হার কিছুটা কমে এলেও নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ৩০-৪০-এর মধ্যেই ছিল।

এরপর এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বনিম্ন একদিনে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। মার্চের মাঝামাঝিতে মৃত্যু আবার বাড়তে থাকে। ১৭ এপ্রিল প্রথম একদিনে মৃত্যু শতকের ঘরে প্রবেশ করে। এপ্রিল মাসজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও মে’তে আবার কমে আসে।

এরপর ফের বাড়তে থাকে জুনের মাঝামাঝিতে। ৭ জুলাই ২০০-এর ঘরে প্রবেশ করে একদিনের মৃত্যু। এরপর থেকে একের পর এক মৃত্যুর রেকর্ড ভাঙে এ মাসেই।

মৃত্যুর পরিসংখ্যানে শীর্ষে আছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা। ঢাকায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৯ হাজার ২৭৩ জন। চট্টগ্রামে তিন হাজার ৬৯৬ জন, রাজশাহীতে এক হাজার ৫৪৮ জন, খুলনায় দুই হাজার ৬৪৫ জন, বরিশালে ৬২১ জন, সিলেটে ৭২২ জন, রংপুরে ৯৮৯ জন এবং ময়মনসিংহে ৫২২ জন।

এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালগুলোতে মারা গেছেন ১৭ হাজার ৫৮৩ জন, বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ৮৮৮ জন, বাসায় ৫২২ জন। ২৩ জনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল।

করোনায় এই মৃত্যুর মিছিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই রোগীর সংখ্যা যেন না বাড়ে। রোগীর সংখ্যা কমাতে হলে সংক্রমণ কমাতে হবে। লকডাউনে বিধিনিষেধ মেনে চলতে প্রধানমন্ত্রী যে আহ্বান জানিয়েছেন তা মানতে হবে।’

বহু জায়গায় সংক্রমণ বেড়ে চলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাসপাতালে চাপ বাড়ছে। সংক্রমণ এভাবে চলতে থাকলে হাসপাতালে জায়গা থাকবে না।

কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম মনে করেন, ‘সংক্রমণ বেশি হলে মৃত্যুও বেশি হবে। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলো করোনার মৃত্যু ঠেকাতে প্রস্তুত নয়। আমরা গত দেড় বছরেও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বাড়াতে পারিনি। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে এখনও আইসিইউ নেই। জটিল রোগীদের আইসিইউ দরকার হলে তাদের ঢাকায় পাঠাতে হয়। ঢাকার হাসপাতালগুলোতেও আইসিইউ পাওয়া যাচ্ছে না। যারা পাচ্ছেন, সেটা একেবারে শেষ মুহূর্তে। তখন রোগীকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে যায়।’

/এফএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছেলে, রান্নাঘরে পুড়ে মারা গেলেন মা
স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছেলে, রান্নাঘরে পুড়ে মারা গেলেন মা
২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
কুমিল্লা শিক্ষা প্রকৌশল কার্যালয়ে ঠিকাদারকে মারধর২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ