এক সময় ইরানের ছোট দ্বীপ লেক উরমিয়াতে ফেরিতে পর্যটকরা যাতায়াত করতেন। এখন সেখানে ফেরি চলাচল করতে পারছে না। অথচ দুই দশক আগেও উর্মিয়া ছিল মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় লেক। পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হওয়ার কারণে হোটেল ও রেস্তোরাঁ ব্যবসা ছিল জমজমাট।
এমন সংকট মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে- এসব স্থানে ফুরিয়ে যাচ্ছে পানি।
এমনিতেই অঞ্চলটিতে খরা ও তাপমাত্রা এত বেশি ছিল যে তা মানুষের খুব বসবাস উপযোগী না। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে পানি অব্যবস্থাপনা ও যত্রতত্র ব্যবহার এবং ভবিষ্যতে পানি পাওয়ার অনুমানগুলো ছিল ভয়াবহ।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইন্সটিটিউটের পানি-বিষয়ক বৈশ্বিক পরিচালক চার্লস আইসল্যান্ড মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ইরানসহ ইরাক ও জর্ডানের মতো কয়েকটি দেশ সেচের জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য তারা এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। দেশগুলোতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাওয়াতে ভূর্গভস্থ পানি উত্তোলনে বাধ্য হচ্ছে তারা।
তিনি আরও বলেন, তবে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে যে পানি পাওয়া যেত সেটির চেয়ে বেশি উত্তোলন করে ব্যবহার করছে তারা। ফলে ক্রমাগতভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে। কারণ দ্রুত পানি উত্তোলন করার ফলে বৃষ্টির পানিতে পুনরায় স্তরটি পূর্ণ হওয়ার সুযোগ পায় না।
ইরানে বাস্তবে এমনটিই ঘটছে। দেশটিতে ব্যবহৃত মোট পানির ৯০ শতাংশ কৃষি খাতে কাজে লাগানো হচ্ছে।
আইসল্যান্ড বলেন, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং চাহিদা বাড়ার কারণে এসব দেশের অনেক নদী, হ্রদ ও জলাভূমি শুকিয়ে যাচ্ছে।
পানি ফুরিয়ে যাওয়ার পরিণতি অনেক ভয়াবহ হতে পারে। পানিশূন্য অঞ্চলগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। নদী ও হ্রদের পানি কীভাবে বিনিময় করা হবে তা নিয়ে উত্তেজনা আরও অবনতির দিকে যেতে পারে। দেখা দিতে আরও বেশি রাজনৈতিক সহিংসতা।
এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) আরও আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। গত মাসের প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের শীতকাল আরও শুষ্ক, গ্রীষ্মকাল বর্ষণমুখর, উষ্ণতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। সূত্র: সিএনএন