X
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ক্লাস আপাতত বাড়ছে না: মাউশি মহাপরিচালক

এস এম আববাস
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:০০আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:৫৪

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান শুরুর পর কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকজন শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ কারণে শ্রেণি পাঠদানে আরেকটি বিষয় যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা আপাতত হচ্ছে না। সংক্রমণ হার এখনও কম আছে বলে কোনও শিক্ষার্থী আক্রান্ত হলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে না। 

শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

বাংলা ট্রিবিউন: দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদের মাধ্যমে কমিউনিটিতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। পাঠদান বন্ধ হবে কি?

ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক: দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী এক কোটি ৫ লাখের মতো। কয়েকজন শিক্ষার্থীর সংক্রমিত হওয়ার খবর পাচ্ছি। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যেভাবে চলছে সেভাবেই চলবে। তবে নতুন করে আর ক্লাস যুক্ত হচ্ছে না।  সংক্রমণের হার এখনও এতটাই কম যে, প্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রয়োজন নেই। লক্ষণ দেখা দিলে আইসোলেশনে নেওয়া হচ্ছে। অন্য শিক্ষার্থীদের করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। তাই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে না। ঠাকুরগাঁওয়ের শিশুপল্লীর মাধ্যমিকের কয়েকজন শিক্ষার্থীর আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে দু-একদিন। তবে পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে না।

বাংলা ট্রিবিউন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?

ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক: স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে একটি গাইডলাইন জারি হয়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশের আলোকে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। ওই এসওপিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। 'করণীয়' ও‘বর্জনীয়' সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মচারীদের সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। এদের কারও কোডিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের জন্য আসন বিন্যাস করা হচ্ছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেশিরভাগের কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়া হয়েছে। আইসোলেশনে থাকা শিক্ষার্থীদের উপস্থিত গণ্য করে ১৪ দিন বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ করা হচ্ছে।

শিক্ষকরাও এসওপির নির্দেশনা অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেবেন। হাঁচিকাশির শিষ্ঠাচার নিজে পালন করবেন ও শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করবেন। কোনও শিক্ষক ক্লাস শেষে পরের শিক্ষক না আসা পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করবেন না

বাংলা ট্রিবিউন: শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে পারছেন?

ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক: দূরত্ব মেনে প্রবেশ, শ্রেণিকক্ষে বসা ও সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিষ্ঠান হতে বের হতে বলা হয়েছে। কেউ অসুস্থ বোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে পিতা-মাতাকে জানানোর কথা বলা হয়েছে। স্কুল-কলেজে অবস্থানকালে অসুস্থতা অনুভব করলে শ্রেণিশিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে বলা হয়েছে। অকারণে শ্রেণিকক্ষ থেকে বাইরে যেতে বারণ করা হয়েছে। হাঁচি-কাশি, কফ ও থুথু ফেলার শিষ্টাচার মেনে চলা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের আগেই নিয়ম অনুসরণ করে হাতধোয়া বা স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার পথে এবং অবস্থানকালে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্ব (ন্যূনতম তিন ফুট) নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের অভ্যাস গড়ে তুলতে অভিভাবকদেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। কারণ ওরা স্কুলের চেয়ে বেশি সময় বাড়িতেই থাকছে। আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও অভিভাবকদের দায়িত্ব বেশি।

বাংলা ট্রিবিউন: প্রতিষ্ঠানের বাইরে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আপনাদের করণীয় কী?

ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক: অভিভাবকগণের প্রতিও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এসওপিতে। শিক্ষকরা অভিভাবকদের এ ব্যাপারে সচেতন করেছেন, করছেন। সন্তানকে মাস্ক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে অভিভাবককে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সন্তানকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সন্তানকে নিজ স্বাস্থ্য সম্পর্কে (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা) সচেতন করবেন অভিভাবক। প্রতিষ্ঠানে সঠিক সময়ে পাঠানো ও বাসায় ফেরা নিশ্চিত করাতে হবে অভিভাবকদের। সন্তান অথবা পরিবারের কোনও সদস্য কোভিড আক্রান্ত হলে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অবিলম্বে জানাবেন অভিভাবকরা। প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা সন্তান ও অভিভাবক সবাইকেই অনুসরণ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমাদের একার পক্ষে শিক্ষার্থীর ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

বাসা হতে খাবার পানি ছাড়া অন্য খাবার না আসা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে বাইরের খাবার না খাওয়ার বিষয়ে সচেতন করতেও শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করার হচ্ছে কিনা?

ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক: গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির প্রতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষকদের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধির আওতাধীন কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনার কোনও ব্যত্যয় ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে নিজে ব্যবস্থা নেবেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করতে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।

এ ছাড়া শিক্ষা অফিসাররা এসওপি অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন। স্বাস্থবিধি মানা হচ্ছে কিনা মনিটর করবেন। কোভিড পরিস্থিতিতে তাঁর আওতাধীন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করবেন। জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জনস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা নিশ্চিত করবেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

জেলায় সংক্রমণের হার আগের সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে ৩০ শতাংশের বেশি হলে নিবিড় সার্ভেইল্যান্সের ব্যবস্থা করতে হবে। জেলার জন্য একটি কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা করতে হবে।

/এফএ/‌এমএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
খিলক্ষেতে মণ্ডপ উচ্ছেদ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য
খিলক্ষেতে মণ্ডপ উচ্ছেদ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য
কলেজ সরকারি, চলে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়!
কলেজ সরকারি, চলে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়!
এনসিপির মিডিয়া সেল গঠন
এনসিপির মিডিয়া সেল গঠন
স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পাট-বস্ত্র-সুতার পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পাট-বস্ত্র-সুতার পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
সর্বাধিক পঠিত
বিরোধীদের নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ নয়: দ্য ইকোনমিস্ট
বিরোধীদের নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ নয়: দ্য ইকোনমিস্ট
ভাঙা হলো বিজয় সরণির ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’, হবে জুলাই স্মরণে ‘গণমিনার’
ভাঙা হলো বিজয় সরণির ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’, হবে জুলাই স্মরণে ‘গণমিনার’
যমুনা সেতু থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে রেলপথ
যমুনা সেতু থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে রেলপথ
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেলো বাস, একজন নিহত
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেলো বাস, একজন নিহত
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ দফতরে উপস্থিতি ও সেবা নিশ্চিতের নির্দেশ
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ দফতরে উপস্থিতি ও সেবা নিশ্চিতের নির্দেশ