চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে রক্তিম দে (২১) ও এনামুল হোসেন সীমান্ত (২১) নামে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে শনিবার রাতে ১৬ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান। গ্রেফতার রক্তিম ওই মামলার ১১ নম্বর এবং এনামুল ১৫ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। তারা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির জানান, এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদি জে আকিবকে (২১) মারধরের ঘটনায় তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন। এরপর রাতে ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জের ধরে সকালে আবারও দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
বিবদমান দুটি গ্রুপের এক পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। অন্য পক্ষ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারীরা আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় নাছির গ্রুপের চমেকের ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহফুজুল হক (২৩) ও ৬২তম ব্যাচের নাইমুল ইসলাম (২০) আহত হন।
রাতের ঘটনার জের ধরে শনিবার সকাল ৯টায় শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারী আকবর হোসেনকে (২০) মারধর করে আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারীরা। এরপর দুই পক্ষ পুনরায় সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারীদের ধাওয়া খেয়ে চমেক প্রিন্সিপালের রুমে ঢুকে পড়ে আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারীরা। দুপুর ১টা পর্যন্ত সেখানেই অবরুদ্ধ ছিল তারা। পরে পুলিশি পাহারায় সেখান থেকে বের হয়ে আসে।
এ ঘটনায় শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে সন্ধ্যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ছেড়ে যাওয়ার নিদের্শ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। নির্দেশ অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যায় আবাসিক হোস্টেল ছেড়ে যান তারা।