শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নিহত বগুড়ার ২ কিশোরের লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা

শিশু সংশোধনাগারে নাঈমের মৃত্যুতে মা শান্তনা বেগম ও স্বজনদের আহাজারিযশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নিহত বগুড়ার কিশোর নাঈম হোসেন (১৭) ও রাসেল ওরফে সুজনের (১৮) মরদেহের অপেক্ষায় রয়েছেন, তাদের পরিবার। স্বজনদের মাঝে চলছে আহাজারি। পরিবারের সদস্যদের দাবি, সংঘর্ষ নয়; সংশ্লিষ্টরা তাদের পিটিয়ে হত্যা করেছে। তারা এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। এদিকে সন্ধ্যায় মরদেহগুলো পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম।

জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু প্রামানিকের ছেলে নাঈম হোসেন ও শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের মহিপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল ওরফে সুজনসহ তিন জন রয়েছেন।

কিশোর নাঈম শিবগঞ্জের দেউলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো। গত ৩০ জানুয়ারি সে তার আপন চাচা শাহিনুর রহমানের মেয়ে ছয় বছরের শিশু সাদিয়া আকতারকে আলুক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ ও গলাকেটে হত্যা করে। পুলিশ গ্রেফতার করলে নাঈম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দেয়। স্বীকারোক্তিতে সে জানিয়েছিলো, সাদিয়াকে সে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি ফাঁস করে দিতে পারে, তাই পরে তাকে গলাকেটে হত্যা করে। সাদিয়ার বাবা শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন। আদালত তাকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শিবগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মিজানুর রহমান জানান, বর্তমানে মামলাটি বগুড়া শিশু আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। নাঈমের মৃত্যুতে তার পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন। মা শান্তনা বেগম তার ছেলের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

অপরদিকে রাসেল ওরফে সুজন গত ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর প্রতিবেশি এক শিশুকে (১৩) অপহরণ ও ধর্ষণ করে। শিশুর বাবা থানায় সুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গ্রেফতারের পর সুজন আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়। বিচারক তাকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শেরপুর থানার বর্তমান ওসি মিজানুর রহমান জানান, ওই মামলায় আদালত সুজনকে ২৫ বছর জেল দেন।

সুজনের মা সুবেদা বেগম ও স্বজনরা দাবি করেছেন, তাদের ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বজনরা দাবি করেন, সুজন সংঘর্ষে মারা যায়নি। সংশোধনাগারের লোকজন তাদের পিটিয়ে হত্যা করেছে। তারা এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন। 

 

আরও পড়ুন

 

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৩ কিশোর নিহতের ঘটনায় মামলা, মরদেহ হস্তান্তর

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক সাময়িক বরখাস্ত, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নৃশংসতা: ময়নাতদন্ত সম্পন্ন
‘হাত-পা-মুখ বেঁধে পেটায়, ক্রসফায়ারের ভয় দেখায়’
সংঘর্ষের পর বন্দিরা মার খায় কেন্দ্র কর্মকর্তা ও আনসারদের হাতেও!
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১০ কর্মকর্তা পুলিশ হেফাজতে