জুয়া খেলে ঋণগ্রস্ত, মুক্তি পেতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা

নরসিংদীতে ঋণের টাকার দায় থেকে মুক্তি পেতে ও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গিয়াস উদ্দিন শেখ। সোমবার (২৩ মে) বিকালে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা তুলে ধরেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটির নরসিংদী পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, ঘাতক গিয়াস উদ্দিন শেখ ছিল জুয়ায় আসক্ত। ইতিপূর্বে সে জুয়া খেলে অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ব্র্যাক, আশাসহ বিভিন্ন এনজিও থেকে স্ত্রী রহিমা বেগমের নামে অনেক টাকা ঋণ নেয়। ঋণের টাকা পরিশোধ না করতে ও জ্যাঠাতো ভাই রেনু মিয়ার সঙ্গে লেগে থাকা বিরোধের জেরে তাকে ফাঁসাতেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে।

তিনি জানান, পিবিআই ঘটনাস্থল উপস্থিত হয়ে নানা বিষয়ে পর্যালোচনা করে তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও ক্রিকেট ব্যাট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি-না খতিয়ে দেখছে পিবিআই।

পিবিআইয়ের সংবাদ সম্মেলন

গত রবিবার বেলা ১১টার দিকে বেলাবো উপজেলার বাবলা গ্রামের বাড়ি থেকে গিয়াস উদ্দিন শেখের স্ত্রী রাহিমা বেগম (৩৫), দুই সন্তান রাব্বি শেখ (১৩) ও রাকিবা শেখের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়। রাহিমার ছোট ভাই মো. মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে বেলাবো থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। এর মধ্যে মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।

লাশ উদ্ধারের চার ঘণ্টা পর গিয়াস উদ্দিন শেখকে আটক করে পিবিআই। ঘটনার সময় তিনি গাজীপুরে অবস্থান করছিলেন বলে দাবি করলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর ট্র্যাক করে ঘটনাস্থলে থাকার সত্যতা পায়। পরে তিনি পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন।