চলে গেলেন ভাষাসৈনিক খান জিয়াউল হক

মাগুরার বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও ভাষাসৈনিক খান জিয়াউল হক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের জামে মসজিদ রোডের নিজ বাসভবন মুসফেকা প্যালেসে তার মৃত্যু হয়। 

মৃত্যুকালে জিয়াউল হকের বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। বেশ কিছু দিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন জিয়াউল হক। মৃত্যুকালে পাঁচ ছেলে, এক মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তার ছেলে সাংবাদিক মাজহারুল হক লিপু জানান, শনিবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় শহরের নোমানী ময়দানে জানাজা শেষে ভায়না পৌর কবরস্থানে দাফন করা হবে।

১৯২৮ সালের ৮ জুন মাগুরা শহরের ভায়না গ্রামে তৎকালীন মাগুরা এসডিও কোর্টের নাজির আবুল কাশেম খানের ছেলে খান জিয়াউল হকের জন্ম।

আরও পড়ুন: ভাষাসৈনিকদের রাষ্ট্রীয় সম্মানে সমাহিত করা হোক: খান জিয়াউল হক

বাবার চাকরিসূত্রে বিভিন্ন জায়গায় শৈশব কেটেছে। পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের লেখাপড়া শেষ করে যশোর জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, কলকাতা রিপন কলেজে এবং যশোর এমএম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও বিএ পড়েছেন। 

এমএম কলেজে পড়াকালে পর্যায়ক্রমে ছাত্র সংসদের জিএস ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জিয়াউল হক। এ সময় ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫২ সালে যশোর এমএম কলেজে ব্যাপক পুলিশি হামলার পর মাগুরায় চলে আসেন এবং ভাষা আন্দোলনে অন্যতম সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে মাগুরায় মিছিল বের হলে মিছিল থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

জিয়াউল হক শিক্ষাজীবন শেষে কিছুদিন সাংবাদিকতা করেন। পরে মাগুরা মডেল হাইস্কুলে যোগ দিয়ে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। ১৯৬২ সালে মাগুরা এজি একাডেমি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৪৪ বছর দায়িত্ব পালন শেষে সেখান থেকে অবসর নেন।