রহিমা অপহরণ মামলায় গ্রেফতার হেলাল শরীফও জামিনে মুক্ত

খুলনার মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম অপহরণ মামলায় গ্রেফতার হেলাল শরীফও মুক্তি পেয়েছেন। ৩৬ দিন কারাভোগের পর বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় খুলনা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। 

এর আগে দুপুরে মহানগর দায়রা জজ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। হেলাল শরীফের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হেলাল শরীফ গত ৩০ আগস্ট আটক হয়ে কারাগারে ছিলেন।

কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তিনি বলেন, ‘মামলাবাজ রহিমা-মরিয়মসহ ষড়যন্ত্রকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবন্থা করতে হবে। তা না হলে মানুষ এ ধরনের অপরাধে লিপ্ত হতে উৎসাহ বোধ করবে।

আরও পড়ুন: রহিমা নিখোঁজের প্রথম ৯ দিনের অবস্থান খুঁজছে পিবিআই

এর আগে গত ৪ অক্টোবর এই মামলার অপর চার আসামি গোলাম কিবরিয়া, মহিউদ্দিন, জুয়েল ও পলাশ জামিন লাভ করেন। তারা ৪ সেপ্টেম্বর আটক হয়ে কারাগারে ছিলেন। ১২ সেপ্টেম্বর আটক হওয়া রহিমার স্বামী বেল্লাল ঘটক ওরফে বেলাল হাওলাদার কারাগারে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রাহিমা বেগম (৫২)। ঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফিরে আসেন না। পরে মায়ের খোঁজে সন্তানরা সেখানে গিয়ে মায়ের ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে সন্ধান নেওয়ার পর মাকে পাননি সন্তানরা। এরপর থানায় সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়ন। 

মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র‌্যাব ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল ঘটক ওরফে বেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ ও জুয়েল এবং হেলাল শরীফ। 

আরও পড়ুন: রহিমা বেগম অপহরণ মামলায় গ্রেফতার ৪ জন জামিনে মুক্ত

পরে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ সেপ্টেম্বর আদালত মামলার তদন্তভার পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নথিপত্র ১৭ সেপ্টেম্বর বুঝে নেয় পিবিআই। এখন এ মামলার তদন্ত করছেন পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। ২২ সেপ্টেম্বর রহিমার মেয়ে মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান দাবি করেন তার মায়ের লাশ তিনি পেয়েছেন। তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুরে দিনভর অবস্থান নেন। একই সঙ্গে সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত এক মহিলার লাশকে নিজের মা বলে শনাক্ত করেন। ডিএনএ প্রোফাইল করার জন্যও তিনি সম্মত হন। 

২৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের আদালতে ডিএনএ প্রোফাইল করার আবেদন করা হয়। আদালত ২৫ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে ডিএনএ প্রোফাইল করার অনুমতি দেন। এদিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলার সৈয়দপুর থেকে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে আদালতে সোপর্দ করা হলে রহিমা ২২ ধারার জবানবন্দিতে তিনি অপহরণ হয়েছিলেন বলে দাবি করেন। এরপর সন্ধ্যায় আদালত মামলার বাদী ও রহিমার মেয়ে আদুরীর জিম্মায় তাকে মুক্তি দেন। এরপর ওই রাতেই মেয়ে মরিয়ম ও আদুরী তাদের মাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। স্বজনরা জানিয়েছেন, ঢাকায় রহিমার চিকিৎসা চলছে।