এ বিষয়ে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তুলশী চন্দ্র রায় জানান,তিনি ও ডা. আতিকুর রহমান সাইদুরের ময়নাতদন্ত করেছেন। ময়নাতদন্তে সাইদুরের বাম হাতের কনুই এবং ডান হাতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এই আঘাত তার মৃত্যুর কারণ নয়। শরীরের আর কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন,‘মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পাওয়া যায়নি’।
এদিকে, ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করতে না পারার বিষয়টি জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাইদুরের পরিবার। বড় ভাই জাহিদুল আলম বলেন,‘পুলিশ ওইদিন সাইদুরের মাথায় ও ঘাড়ে পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করে ও লাথি মারে।’
তিনি জানান, জেলা প্রশাসন থেকে আসা তদন্ত টিমের কাছেও ওই ঘটনায় তাদের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী আটজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ‘পুলিশের মারধরেই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।’ এখন চিকিৎসকরা কেন মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করতে পারলেন না তা তিনি বুঝতে পারছেন না। বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান জাহিদুল আলম।
নিহত সাইদুরের পরিবার, মামলার এজাহার ও কালাই থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর ভোরে পুলিশের একটি দল কালাই উপজেলার হারুঞ্জা গ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলার পলাতক আসামি শাপলাকে গ্রেফতার করতে তার বাড়িতে যান। এ সময় শাপলার স্ত্রী মাসুদা ও ভাই ফেরদৌস পুলিশের মারপিটের শিকার হন। খবর পেয়ে শাপলার চাচা সাইদুর পাশের বাড়ি থেকে এসে এর প্রতিবাদ করলে পুলিশ শাপলার বাড়ির প্রধান ফটকে তার মাথা ও ঘাড়ে পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করে এবং তলপেটে লাথি মারে। গুরুতর আহত সাইদুরকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইদুরকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদের এলাকাবাসী হাসপাতাল ঘেরাও করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পরে এ ঘটনায় কালাই থানা পুলিশ মামলা না নিলে সাইদুরের বাবা কাজেম আলী ১১ অক্টোবর এসআই মো. রফিক, এসআই মো. আসাদ, কনস্টেবল রাশেদুল ও ফারুকের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা করেন। পরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ ইকবাল বাহার মামলাটি কালাই থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: