উত্তপ্ত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ দাবি

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক ১৪ ছাত্রের চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফ ক্যাম্পাসে এসে ছাত্রদের সুবিচারের আশ্বাস দেন এবং হলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। এরপর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে একটি স্মারকলিপি দেন। এদিকে এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন ভিসি আব্দুল লতিফ।

ওই বিভাগের ছাত্র তানভীর ও জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষার সময়সূচি নিয়ে ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সঙ্গে কয়েক জন শিক্ষার্থীর বাগ-বিতণ্ডা হয়। এ সময় ওই শিক্ষার্থীদের চুল কেটে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার হলে যেতে বলেন ওই শিক্ষক। পরদিন পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ জন ছাত্র চুল কেটে না আসায় তাদের মাথার সামনের অংশের চুল কেটে দেন তিনি। অপমান সহ্য করতে না পেরে এ দিনের পরীক্ষা শেষে নাজমুল হোসেন তুহিন (২৫) ছাত্রাবাসে গিয়ে তার কক্ষের দরজা বন্ধ করে বেশ কিছু ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি সহপাঠীরা টের পেয়ে দ্রুত তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

তারা আরও জানান, এ ঘটনার পর সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে। পরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার জন্য বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১-এর গেটে জড়ো হয়। এ সময় ওই শিক্ষক তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী বলেন, ‘আমরা নাজমুলের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার উন্নত চিকিৎসা চলছে। আশা করি সে ভালো হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবে। এ ছাড়াও এই ঘটনার সঠিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’

শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন সুজন বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।’

এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় আমি সেখানেই ছিলাম। পরে তাদের ডেকে নিয়ে এসে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা শান্ত হয়ে ফিরে যায়। তারা একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে। আমরা তাদের স্মারকলিপির ওপর ভিত্তি করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবো। এবং সেই তদন্ত কমিটির দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

আরও খবর: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ